ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দুই বাংলার মিলনমেলা

প্রকাশিত: ০৭:১০, ২৩ নভেম্বর ২০১৪

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দুই বাংলার মিলনমেলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২২ নবেম্বর ॥ মাঝখানে কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে হাসি-কান্নায় এক অন্য ধরনের মিলনমেলায় মেতেছিল দু’দেশের স্বজনরা। প্রতিবছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার কুলিক নদীরপারে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন, মিষ্টি বিনিময় করেছেন। পাথরকালীর মেলা উপলক্ষে শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে এই মেলা। কাঁটাতারের দুইপাশ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকরা স্বজনদের কাছে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়েছেন। কেউ কেউ আবেগে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ব্রিটিশ আমল থেকেই প্রতিবছর ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার কোচল সীমান্তে কুলিক নদীরপারে ‘পাথর কালীর মেলা’ হয়ে আসছে। দেশ স্বাধীনের পর মেলাটি বাংলাদেশ অংশে পড়লেও ভারতীয়রাও এতে অংশ নেয়। মেলা উপলক্ষে সীমান্তে কিছুটা শিথিলতা থাকে। স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে কয়েকদিন আগে থেকেই বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার নারী-পুরুষ স্থানীয় আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে ওঠে। শুক্রবার ভোর থেকেও রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, টেম্পু, মাইক্রোবাস, নছিমনযোগে কয়েক হাজার মানুষ মেলায় আসে। মেলায় কথা হয় শেফালী রানী, প্রমিলা ঘোষ, সত্যেন্দ্রনাথ, হরিপদসহ অনেকের সঙ্গে। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার রসনপুর গ্রামের ইয়াসমিন (৪৫) দেখা করেছেন তার মেয়ে আদরীর সঙ্গে। বিয়ের সূত্রে ১৫ বছর ধরে ভারতের মালদা জেলার আন্ধার গ্রামে ধাকেন আদরী। বিয়ের পর এই প্রথম মেয়ের দেখা পেয়ে প্রথমে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সাবিনা। পরে মেয়ে ও জামাইকে কাপড় ও মিষ্টি দেন তিনি। ভারতের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসা জয়পুরহাটের পূর্ণিমা বলেন, ২০ বছর আগে ছোট বোন পুর্মিলার বিয়ে হয় ভারতের আলিয়াগঞ্জ গ্রামে। বিয়ের পর আর দেখা হয়নি। এবার বোনের সঙ্গে কাঁটাতারের এপারে থেকে কথা বলেছেন। তাদেরকে মিষ্টি দিতে খাইয়েছেন। কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে ১৫ বছর পর পরেশ চন্দ্র তার মা ভারতী রানীকে মিষ্টি ও শাড়ি দিতে পেরে খুব খুশি হয়েছেন।
×