ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘৩-০ ব্যবধানে জিততেই আশাবাদী মুশফিক

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১২ নভেম্বর ২০১৪

‘৩-০ ব্যবধানে জিততেই আশাবাদী মুশফিক

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে ॥ আহ্, কী শান্তি! ২০০০ সালে টেস্ট ক্রিকেট শুরুর পর বাংলাদেশ এই প্রথমবার কোন দলকে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার কথা ভাবছে। সেই ভাবনাতে আবার বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমও অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করার পথে। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে সর্বাধিক ১৮ টেস্টে নেতৃত্ব দেবেন মুশফিক। এর আগে ১৭ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে হাবিবুল বাশার সুমন যেখানে সবার উপরে ছিলেন। আজ শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে তৃতীয় টেস্টেই হাবিবুলকে টপকে যাবেন মুশফিক। এমন দিনের আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলতে পারছেন, ‘৩-০ করতে পারব।’ এতেই তো আনন্দ! মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মুশফিকের কথোপকথনের সারসংক্ষেপ এখানে তুলে ধরা হলো। প্রশ্ন ॥ ২-০’তে এগিয়ে আছেন। বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে এমন ঘটনা সব সময় ঘটে না। অধিনায়ক হিসেবে অনুভূতিটা কেমন? মুশফিকুর রহীম ॥ এমন অনুভূতি খুব দুর্লভ। শেষ কবে হয়ছিল, এমন মনে হয় হয়নিও। অবশ্যই এটা একটা ভাল অনুভূতি। বাস্তবতা হলো শেষ ২ ম্যাচে আমরা যেভাবে জয় পেয়েছি তার চেয়ে কঠিন হবে তৃতীয় টেস্ট ম্যাচটি। লক্ষ্য, এটলিস্ট জয় পাওয়া। ইনশাআল্লাহ আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে আমরা ভাল খেললে এই টেস্টও জয় লাভ করব। ওরা (জিম্বাবুইয়ে) ৩ সপ্তাহ ধরে আমাদের এখানে আছে আমাদের বোলিং, কন্ডিশন সম্পর্কে তারা অবগত আছে। আশা করছি উইকেটটা যদি আমাদের শক্তি অনুযায়ী সাপোর্ট করে ইনশাআল্লাহ এই টেস্টটাও জিতে, ৩-০ করতে পারব। প্রশ্ন ॥ সিরিজ জেতার পর ক্রিকেটাররা কী আত্মতুষ্টিতে ভুগছে? মুশফিক ॥ না, আমার মনে হয় না এ রকম কোন ব্যাপার আছে। কারণ এই বছর আমরা যে কয়টা ম্যাচ হেরেছি সেদিক থেকে আমাদের প্রমাণ করার অনেক কিছু আছে। যেহেতু আমরা টেস্ট খুব বেশি খেলি না, অন্য দেশের মতো। প্রত্যেকটা টেস্টই আমাদের জন্য অন্যরকম, কিছু একটা প্রমাণ করার চিন্তা থাকে। সেদিক থেকে বলব খেলোয়াড়রা সবাই মানসিক এবং শারীরিকভাবে প্রস্তুত। এ রকম সুযোগ সব সময় আসে না। আমরা চাইব যে ওয়ানডের আগে যেন আমাদের জয়ের ধারাবাহিকতা ভাল থাকে। এবং খেলোয়াড়রা যেন সব ফর্মে থাকে। প্রশ্ন ॥ বাংলাদেশের হয়ে ১৯ টেস্টে নেতৃত্ব দেয়া। নতুন মাইলফলক। কেমন লাগছে? মুশফিক ॥ অবশ্যই ভাল লাগছে। (হাবিবুল বাশার) সুমন ভাইয়ের রেকর্ডটা (১৮ টেস্টে নেতৃত্ব দেয়া) টপকিয়ে আমি অধিনায়ক হিসেবে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার মধ্যে আছি। অবশ্যই এটা ভাল অনুভূতি। আশা করব এই টেস্ট ম্যাচটা যেন আমরা জিতি এবং দলের জন্য যেন আমি কন্ট্রিবিউশন করতে পারি। প্রশ্ন ॥ সামনে বিশ্বকাপ। এমন সময়ে স্পিন নির্ভর হওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? মুশফিক ॥ বিশ্বকাপের আগে অন্য কন্ডিশনে খেলা আমাদের জন্য আরও বেটার হতে পারত। তারচেয়ে বড় ব্যাপার হলো দল হিসেবে পারফর্ম করা এবং যে কোন ওয়ানডে, টেস্ট বা টি২০ যেটাই খেলেন না কেন সেটা জয় লাভ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যত ম্যাচ জিতবেন দল হিসেবে এটা ততই কাজে দেবে। এটা বুস্টআপ করবে। আত্মবিশ্বাসটা বেড়ে যায়। সেদিক থেকে বলব আমরা শেষ দুইটা ম্যাচ জিতেছি, এটা আমাদের খুবই বুস্টআপ করবে। আশা করছি এটা কাজে লাগবে। এই সিরিজের পর অনেক সময় থাকবে আমরা হয়ত প্রস্তুতি নিতে পারব বিশ্বকাপের। হয়ত এটা খুব যে ভাল হবে তা নয়। হতে পারে আগে ওখানে যাবে টিম। আগে গিয়ে কিছু সময় পাবে। সেদিক থেকে বলব এই সিরিজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। র‌্যাঙ্কিংয়েরও একটা ব্যাপার ছিল। সেদিক থেকে বলব যে ৩-০ অবশ্যই ইনশাআশাল্লাহ আমাদের লক্ষ্য। তারপর ওয়ানডে আছে। আমার মনে হয় ওয়ানডে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। প্রশ্ন ॥ এই টেস্টে আপনার কি লক্ষ্য থাকবে? মুশফিক ॥ আমি যতদূর জানি চট্টগ্রামে আমার মোটামুটি ভাল একটা রেকর্ড আছে (৯ টেস্টের ১৬ ইনিংসে ১ শতকসহ ৪৮.২০ গড়ে ৭২৩ রান)। আশা করব সেটা যেন ধারাবাহিকতা থাকে। এটা শেষ ম্যাচ। এই বছরের শেষ টেস্ট। প্রশ্ন ॥ সাকিব আসাতে বদলেছে কিছু? মুশফিক ॥ সাকিব আসার কারণে আমাদের বড় একটা প্লাস পয়েন্ট হয়েছে। ও এমন একটা খেলোয়াড় আপনি অতিরিক্ত একজন স্পিনার এবং অতিরিক্ত একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলাতে পারেন। সেদিক থেকে বলব যে শুধু এটা আমাদের জন্যই প্লাস পয়েন্ট নয়, এটা প্রতিপক্ষ দলের জন্য চিন্তার বিষয়। তারা অনেক চিন্তা করে এটলিস্ট সাকিবের মতো খেলোয়াড় আমাদের দলে আছে। তাদের জন্য এটা মানসিক একটা চাপের বিষয়। প্রশ্ন ॥ কোন কোন জায়গায় ইমপ্রুভ হওয়ার সুযোগ আছে? মুশফিক ॥ প্রথম অবশ্যই ফিল্ডিং। কিছু ক্যাচ ড্রপ হয়েছে। জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে হয়েছে বিধায় সমস্যা হয়নি। কেননা আমরা অনেক চাপ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। আমার মনে হয় এরচেয়ে কোন বড় দলের সঙ্গে হলে এটলিস্ট এ রকম সুযোগ আর কখনই দেবে না কোন ব্যাটসম্যান। আমাদের ওই জায়গাটাতে আরও ইমপ্রুভ করার আছে। প্রশ্ন ॥ ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ খেলতে হলে র‌্যাঙ্কিংয়ের ৮ নম্বরে থাকতে হবে। র‌্যাঙ্কিং হিসেব কী চাপে ফেলে দেয় কিনা? মুশফিক ॥ এটা আসলে দুইদিক থেকে কাজ করতে পারে। একদিক থেকে বললে চাপে তো অবশ্যই রাখে। র‌্যাঙ্কিং তো অবশ্যই একটা বড় ফ্যাক্ট। আপনি যতই খেলেন না কেন আলটিমেটলি যদি না জিতেন, পয়েন্ট অর্জন না করেন; লাভ হবে না ক্রিকেট খেলা। সেদিক থেকে বললে অবশ্যই এটা চাপ সৃষ্টি করে আমাদের। অন্যদিক থেকে বললে আমাদের মোটিভেশন অন্যরকম থাকে। আমরা টেস্ট ম্যাচ অন্যদের তুলনায় কম খেলি। এই যে সুযোগটা আসছে এটা আমরা ৩-০ জিতে যেন এটলিস্ট একটা মেসেজ দিতে পারি। বাংলাদেশ দলে ভাল এবং ডমিনেট করে ক্রিকেট খেলতে পারে। সেদিক থেকে বলব ওয়ানডে যে নতুন নিয়ম হয়েছে এটা আমাদের মাথায় থাকবে।
×