ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় ফুটবলারদের মনজুর কাদেরের পুরস্কার

প্রকাশিত: ০৫:১০, ৯ নভেম্বর ২০১৪

জাতীয় ফুটবলারদের মনজুর কাদেরের পুরস্কার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল সিরিজে সফরকারী শ্রীলঙ্কা জাতীয় দল মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের। দুটি ম্যাচের একটিতে (যশোরে) লঙ্কার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করলেও দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে (রাজশাহীতে) তাদের ঠিকই ১-০ গোলে হারাতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। আর আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাংলাদেশের সর্বশেষ জয় এসেছিল ২০১২ সালে। লঙ্কার মাটিতে অনুষ্ঠিত এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে নদার্ন মারিয়ানা আইল্যান্ডের বিপক্ষে এসেছিল সেই জয়টি। নিজেদের চেয়ে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে দুই ধাপ আগে থাকা (শ্রীলঙ্কা ১৭৪, বাংলাদেশ ১৭৬) লঙ্কাকে হারানোর পুরস্কার শনিবার পেল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) তাদের সংবর্ধনা দিয়ে সম্মানিত করল বাফুফে ভবনে। শুধু তাই নয়, পুরো দলকে ১০ হাজার ডলার পুরস্কারও দেয়া হয়। আর এই পুরস্কারটি দেন মনজুর কাদের, যাকে বাংলাদেশের ফুটবলের নিবেদিত প্রাণ সংগঠক বলেন অনেকেই। চমক সৃষ্টি আর যে কোন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ভালবাসেন তিনি। অনেকেই বলেন, তাঁর মতো আরও কমপক্ষে পাঁচজন ফুটবল সংগঠক থাকলে এদেশের ফুটবলের চেহারাইটাই আমূল বদলে যেত। অনেক পরিচয় তাঁর। বিশিষ্ট ফুটবল সংগঠক, জেলা ফুটবল লীগ কমিটির চেয়ারম্যান এবং শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের সভাপতি। গত সেপ্টেম্বরের কথা। জেলা ফুটবলের উন্নয়নকল্পে মনজুর কাদের একান্ত ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৬৪ জেলা ফুটবল সংস্থাকে দেন মোট ৬৪ লাখ টাকা ও ১০টি করে ফুটবল। অতীতে এর আগেও তিনি নিজ ক্লাব দল বা জাতীয় দলকে ভাল খেলতে উৎসাহ জুগিয়েছেন, ভাল রেজাল্টের জন্য নিজের পকেটের টাকা বোনাস হিসেবে দিয়েছেন ফুটবলারদের। শনিবারও দেখা গেছে এমনই চিত্র। কি বললেন তিনি? ‘দেশের ফুটবল যে এখনও মরেনি, তার প্রমাণ সম্প্রতি দেশের তিনটি ভেন্যুতে দর্শকদের ঢল। আমি ফুটবল পাগল মানুষ, দেশের প্লেয়ারদের অনুপ্রাণিত করা আমার স্বভাব। আইএফএ শিল্ডে শেখ জামালের প্লেয়ারদের, নেপালে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে প্লেয়ারদের উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করেছি ও বোনাস দিয়েছি। অনুপ্রেরণা দিলে যদি তারা ভাল রেজাল্ট করে, তাহলে কেন তা করব না? রাজশাহীতে ম্যাচ শুরুর আগে আমি ড্রেসিংরুমে গিয়ে জাতীয় দলকে বলেছিলাম, তোমরা আজ জিতলে তোমাদের বোনাস দেব। ছেলেরা জিতেছে। আমি তাই আজ তাদের বোনাস দিলাম ১০ হাজার ডলার। এ জন্য আমি খুশি। কদিন পর কিংস কাপেও খেলতে যাবে জামাল ও ঢাকা আবাহনী। সেখানে ক্লাব দুটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। আশা করি সেখানেও তারা ভাল করবে।’ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জাতীয় দলের ২৩ ফুটবলারের মধ্যে ১৯ জনই উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন কোচ সাইফুল বারী টিটু, টিম লিডার ইকবাল হোসেন, ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু। নিয়মিত অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম ভারতের কলকাতায় সেখানকার একটি ফ্রাঞ্চাইঝি ভিত্তিক ফুটবল লীগ খেলতে যাওয়ায় মনজুর কাদেরের কাছ থেকে ১০ হাজার ডলারের চেক গ্রহণ করেন দলের সহ-অধিনায়ক ও ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি। তবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন বলেছেন ভিন্ন কথা। সেটা অবশ্য পেশাদারী মনোভাব নিয়ে এবং এমিলিদের চাপে রাখা বা উজ্জীবিত রাখার কৌশল হিসেবেই, ‘সংবর্ধনা-বোনাস ঠিক আছে। কিন্তু আমি সন্তষ্ট নই। কেননা ওরা আরও ভাল করতে পারত। নেপাল-শ্রীলঙ্কার চেয়ে আমরা অনেক বেটার টিম। কিন্তু মাঠে সেটা এমিলিরা প্রমাণ করতে পারেনি। এই খেলা খেলে বেশিদূর এগুনো বা বেশি বোনাস পাওয়া সম্ভব নয়। আরও ভাল করতে হবে। এটা দলের প্রকৃত সামর্থ্য নয়। তাদের আরও উন্নতি করার যথেষ্ট অবকাশ আছে। আমি আশা করি প্লেয়াররা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে আমার কথা। আমি বিষয়টি পজেটিভলিই নিতে বলছি তাদের। আমি চাই তারা নিজেদের আরও শাণিত করুক। সামনে জাপান অলিম্পিক দল আসছে। এ দলটি ২০১৮ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গড়া। আমার ছেলেদের বিষয়টি যেন মাথায় থাকে। আমি তাদের নিয়ে উড়তে চাই আকাশে। সেটা তারা করতে পারছে না। কোথায় তাদের গ্যাপ, সেটা পূরণ করতে হবে।’ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুশের্দী, সহ-সভাপতি বাদল রায়, সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগসহ আরও অনেকে।
×