ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জিম্বাবুইয়ের গোপন অনুশীলন

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৩০ অক্টোবর ২০১৪

জিম্বাবুইয়ের গোপন অনুশীলন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এমনই অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে জিম্বাবুইয়ে দলের, প্রথম টেস্টে ৩ উইকেটে হারের পর দ্বিতীয় টেস্ট জেতার আকাক্সক্ষায় গোপন অনুশীলনও করতে হচ্ছে। কাউকে অনুশীলনের কিছু দেখতে না দিয়ে নিজেদের কাজ করতে হচ্ছে। জিম্বাবুইয়ের অনুশীলনে ইনডোরের ব্যাটিং অনুশীলনে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। যেন কেউ কিছু দেখে ফেললেই সব ফাঁস হয়ে যাবে। ফাঁস হয়ে গেলেই দ্বিতীয় টেস্টেও হেরে যাবে জিম্বাবুইয়ে। এখন বিষয় হচ্ছে, তাহলে প্রথম টেস্টের আগে এমন ভাব কোথায় উধাও হয়েছিল! জিম্বাবুইয়ে দলের ব্যাটসম্যান হ্যামিল্টন মাসাকাদজা গোপন অনুশীলন করার বিষয়বস্তু এড়িয়ে যেতে চাইলেন। ‘কোথায়, ক্লোজ ডোর অনুশীলন হচ্ছে নাকি!’ ভাবখানা এমন কিছুই জানেন না। তবে বললেন, ‘হ্যাঁ, আমরা কঠিন পরিশ্রম করছি। ব্যাটসম্যানরা অনুভব করেছে খুব ভাল ব্যাটিং করতে পারেনি। প্রথম টেস্টের পর সবার কাছেই মনে হয়েছে অনেকদূর যেতে হবে। তাই এত কঠিন অনুশীলন চলছে। অনেক কাজ করতে হচ্ছে।’ প্রথম টেস্টে স্পিনারদের ঘূর্ণির কাছেই ডুবেছে জিম্বাবুইয়ে। সঙ্গে বাউন্স, সিম মিলিয়ে ছন্নছাড়া হয়ে যায় জিম্বাবুইয়ে ব্যাটসম্যানরা। সব নিয়েই কাজ করছে জিম্বাবুইয়ে। এমনটিই জানালেন মাসাকাদজা, ‘আমরা বাউন্স, স্পিন সবকিছু নিয়েই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি।’ খুলনায় জিম্বাবুইয়ে এর আগে একটি ওয়ানডে খেলেছে। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে হেরেছে জিম্বাবুইয়ে। তবে মাসাকাদজা এর বাইরেও খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে খেলেছেন, বিপিএলে। খুলনার উইকেট সম্পর্কে তাই মাসাকাদজার ধারণা, ‘আমি খুলনায় টি২০ ক্রিকেট খেলেছি। মনে হয় ব্যাটিং উইকেট। তবে আশার মতো আর সব হয় না। মিরপুরের মতোই উইকেট হতে পারে।’ প্রথম টেস্ট জয়ের আশা জাগিয়েও হেরেছে জিম্বাবুইয়ে। বাংলাদেশকে চাপে ফেলেছিল তারা। কিন্তু শেষপর্যন্ত জয় আর তুলে নিতে পারেনি জিম্বাবুইয়ে। কেন হয়নি? মাসাকাদজা মনে করছেন বাংলাদেশের প্রথম ৬ ব্যাটসম্যানই অবদান রেখেছেন, ‘সেরা ৬ এ ব্যাটসম্যান যারা আছে, তারা অনেক কন্ট্রিবিউশন করেছে। এটা একটা দলের জন্য অনেক বড় বিষয়।’ দ্বিতীয় টেস্টে জয় পাওয়ার চেষ্টায় জিম্বাবুইয়েকে যে বাংলাদেশ দল নিয়ে অনেক ভাবতে হচ্ছে তা মাসাকাদজার কথাতেই পরিষ্কার, ‘অনেক বিষয় নিয়েই ভাবা হচ্ছে। সামনের সময়গুলোতে টেকটিকস নিয়ে আলোচনা হবে। স্পিন নিয়ে অনেক ভাবতে হচ্ছে। মিরপুরের মতো একই রকম উইকেট আশা করছি। স্পিন নির্ভর উইকেটই হবে। সেই ভাবনা নিয়েই চলছে অনুশীলন।’ জিম্বাবুইয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে ধস নামিয়েছেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। একাই নিয়েছেন ৮ উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বোলার হিসেবে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন। মাসাকাদজার কাছে মনে হয়েছে তাইজুলের মুখোমুখি হওয়া কঠিন, ‘তাইজুলকে ফেস করা ডিফিকাল্ট। তাইজুল ছাড়াও বাংলাদেশের অনেক কোয়ালিটি স্পিনার আছে। তাদেরও ফেস করা কঠিন।’ মাসাকাদজা বাংলাদেশের মাটিতে অনেক ক্রিকেট খেলেছেন। দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। বাংলাদেশের ঘরোয়া লীগগুলোতেও খেলেছেন। এমন পরিস্থিতিতে দলের ক্রিকেটারদের কী করা উচিত তাও নাকি ভাগাভাগি করছেন। মাসাকাদজাই বলেছেন, ‘এখানে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। যতটা পারছি দলের ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার চেষ্টা করছি।’ প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে মাসাকাদজা রান করেছেন ১৮ (প্রথম ইনিংসে ১৩ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫)। তাই বাংলাদেশ স্পিনারদের বেশি খেলার সুযোগ পাননি মাসাকাদজা। যখনই মাসাকাদজাকে জিজ্ঞেস করা হলো, বাংলাদেশ স্পিনাররা হুমকিস্বরূপ। কিভাবে স্পিনারদের ফেস করলে ভাল হবে বলে প্রথম টেস্টে মনে করেছেন। দ্বিতীয় টেস্টে কিভাবে ফেস করতে হবে? মাসাকাদজা বললেন, ‘আমি খুব বেশি স্পিনারকে ফেস করিনি। হয়ত ৬টি বল স্পিন ফেস করেছি। তাই এ নিয়ে বলতে পারব না।’ তবে মাসাকাদজা বার বার বুঝিয়ে দিচ্ছেন মিরপুরের উইকেটের আচরণের মতোই খুলনার উইকেটের আচরণও হবে, এমনই ভাবছেন। এর জন্য পুরোদমে প্রস্তুতও হচ্ছেন, ‘ব্যাটিং উইকেটের আশাই করছি না। স্পিন উইকেটেরই আশা করছি। সঙ্গে সিমারদের জন্যও হয়ত কিছু থাকবে। এমন উইকেটই হবে, তা আশা করছি।’ এ প্রস্তুত হতে গিয়ে কাউকে অনুশীলন দেখতে না দেয়ার মতো কা-ও ঘটাচ্ছে জিম্বাবুইয়ে। জয়ের আকাক্সক্ষায় গোপন অনুশীলনও করছে।
×