ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ননি তাহেরের বিরুদ্ধে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ২৯ অক্টোবর ২০১৪

ননি তাহেরের বিরুদ্ধে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

যুদ্ধাপরাধী বিচার স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত পিরোজপুরের জাতীয় পাটি নেতা পলাতক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৭তম সাক্ষীর জবানবন্দীর জন্য ২ নবেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। অন্যদিকে নেত্রকোনার মুসলীম লীগ নেতা আতাউর রহমান ননি (৬২) ও নেজামে ইসলামের ওবায়দুল হক তাহেরের (৬৪) বিরুদ্ধে ২০ নবেম্বর অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার প্রসিকিউশনের ১৭তম সাক্ষীর জবানবন্দীর জন্য দিন নির্ধারণ ছিল। যেহেতু আজ জামায়াতের ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর রায় ঘোষণা করা হবে সে জন্য ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে ২ নবেম্বর নির্ধারণ করেছেন। আদেশের পর প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম এ কথা বলেছেন। ৮ জুলাই জব্বারের অনুপস্থিতিতে তার বিচার কার্যক্রম চালাতে মোহাম্মদ আবুল হাসানকে রাষ্ট্রীয় খরচে আসামিপক্ষের আইনজীবী নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। ১২ মে ইঞ্জিনিয়ার জব্বারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনীত পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আব্দুল জব্বারকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ফলে তার তার অনুপস্থিতিতেই বিচার কাজ চলার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে ১১ মে প্রসিকিউটর মোহাম্মদ জাহিদ ইমাম জব্বারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন। আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে প্রসিকিউশন পক্ষ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, গণহত্যা, ধর্মান্তরিতকরণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বারের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৩৬ জনকে হত্যা ও গণহত্যা, ২০০ জনকে ধর্মান্তরিতকরণ এবং ৫৫৭টি লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। এরশাদের জাতীয় পার্টির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার ১৯৭১ সালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর শ্বশুর ছিলেন মুসলিম লীগের নেতা। শ্বশুরের হাত ধরেই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকা ও মানবতাবিরোধী নানা অপরাধ সংঘটিত করেন তিনি। এলাকায় বসেই তিনি রাজাকার বাহিনী সংগঠিত করার নেতৃত্ব দেন। তার নির্দেশেই মঠবাড়িয়ায় মেধাবী ছাত্র ও হিন্দুদের হত্যাসহ সব ধরনের লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ননি ও তাহের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নেত্রকোনার মুসলিম লীগ নেতা আতাউর রহমান ননি (৬২) ও নেজামে ইসলামের ওবায়দুল হক তাহেরের (৬৪) বিরুদ্ধে ২০ নবেম্বর তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দালিলের নির্দশে দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। মঙ্গলবার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন নির্ধারণ ছিল। কিন্ত প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল সময়ে আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল এ দিন নির্ধারণ করেছেন। আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এম এইচ তামিম। ১২ আগস্ট এ দুজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ১৩ আগস্ট তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। ২০১০ সালে মুক্তিযোদ্ধা আলী রেজা কাঞ্চন বাদী হয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গ্রেফতারকৃত দু’জনসহ ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিলের পর আদালত তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করলে মঙ্গলবার তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা রফি উদ্দিন জামান মুক্তা হত্যাসহ হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, আটক করে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
×