ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে ভিডিও বার্তায় রওশন এরশাদ

জাতীয় পার্টি আগামীতে নির্বাচন করবে এবং তা ইভিএমেই

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:২০, ৬ অক্টোবর ২০২২

জাতীয় পার্টি আগামীতে নির্বাচন করবে এবং তা ইভিএমেই

রওশন এরশাদ এমপি

‘আমি সুস্থ আছি। ভালো আছি। পায়ে সামান্য সমস্যা আছে। সেটার জন্য আমি ফিজিওথেরাপি নিচ্ছি। আর সব কিছু ভালো আছে। আমি শীঘ্রই দেশে ফিরব।’ সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এমপি এ কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি কখনও নির্বাচন বর্জন করেনি। সবসময় নির্বাচন করেছে। কারণ জাতীয় পার্টি নির্বাচনে বিশ্বাস করে। আগামীতেও জাতীয় পার্টি নির্বাচন করবে। আমরা ইভিএমের নির্বাচন করব।

সারাবিশ্বে যখন ইভিএমে নির্বাচন হচ্ছে, তখন আমরা কেন করব না? বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বর্তমানে থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। সেপ্টেম্বর মাসে এই ভিডিওটি রেকর্ড করা হয়েছিল। সেখানে রওশন এরশাদ বলেছেন আগামী মাসে দেশে ফিরবেন। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য রাখেন রওশন এরশাদের রাজনৈতিক উপদেষ্টা গোলাম মসিহ ।
সামনের মাসে দেশে ফিরে আসার কথা জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, ১১ মাস হয়েছে আমি এখানে (ব্যাংকক) আছি। আশা করছি, চলতি মাসে দেশে ফিরে আসব। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের মৃত্যুর পর পার্টি অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে, এখন আমার মনে হয়, পার্টিটা ঠিকমতো পরিচালিত হচ্ছে না। সেজন্য পার্টিকে শক্তভাবে দাঁড় করাতে হবে।

আমার নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে, তাদের সঙ্গে আমি কথা বলছি। যাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছি, তাদের সঙ্গে আমি টেলিফোনে সবসময় যোগাযোগ করি এবং চিঠিপত্রের মারফতে যোগাযোগ করি। যারা নির্বাচনে জয়লাভ করে তারা বলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, আর যারা নির্বাচনে পরাজিত হয় তারা বলে কারচুপি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কাউন্সিলটা ডেকেছি তার কারণ অনেক আছে। বিশেষ করে কিছু কিছু লোক গত কাউন্সিলে আমাদের গঠনতন্ত্রকে পরিবর্তন করে দিয়েছে, যেখানে যার যত ক্ষমতা ছিল তা খর্ব করে দেয়া হয়েছে। অনেক জায়গা সংশোধন করে নতুন করে গঠনতন্ত্রে আনা হয়েছে, এটি ঠিক হয়নি। রওশন এরশাদ আরও বলেন, পার্টিকে শক্তিশালী করতে হবে। অনেক বেশি এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, যাতে করে আমরা আগামী নির্বাচন ভালভাবে করতে পারি।

আমাদের দলের বেশিরভাগ লোকেরই বয়স হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে অবশ্যই আনতে হবে। যারা সরকারী কর্মকর্তা আছেন রিটায়ার্ড, তাদেরও আনতে হবে। বেসামরিক কর্মকর্তা যারা আছেন, তাদের আনতে হবে। তাদের আনার জন্য সাদর আমন্ত্রণ জানাতে হবে, আহ্বান জানাতে হবে। আগামী কাউন্সিলে নেতাকর্মীদের সমর্থন নিয়েই আসছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ইলেকশনে (কাউন্সিল) আমি অবশ্যই নেতাকর্মীদের ম্যান্ডেট নিচ্ছি।

জাতীয় পার্টির পতাকাতলে আসার জন্য যারা ব্যস্ত, যারা পার্টি থেকে বহিষ্কার হয়ে গেছেন, যারা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন, তারা সক্রিয় হচ্ছেন। এখন আবার জাতীয় পার্টি করার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। আল্লাহর রহমত আছে নিশ্চয়, না হলে আমি কীভাবে বলছি ইলেকশন (কাউন্সিল) করব।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি কখনও নির্বাচন বর্জন করেনি। সবসময় নির্বাচন করেছে। কারণ জাতীয় পার্টি নির্বাচনে বিশ্বাস করে। আগামীতেও জাতীয় পার্টি নির্বাচন করবে। আমরা ইভিএমের নির্বাচন করব। সারাবিশ্বে যখন ইভিএমে নির্বাচন হচ্ছে, তখন আমরা কেন করব না? যারা নির্বাচনে জয়লাভ করে তারা বলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, আর যারা নির্বাচনে পরাজিত হয় তারা বলে কারচুপি হয়েছে।

আগামী ২৬ নবেম্বর জাতীয় পার্টির সম্মেলন সফল করার জন্য দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, ‘গত কাউন্সিলে একতরফাভাবে জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র সংশোধন সংযোজন করা হয়েছে। যা খুব দুঃখজনক। গঠনতন্ত্রে এমন কিছু ধারা সংযোজন করা হয়েছে, যা দিয়ে একতরফাভাবে দলের নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।

আমি মনে করি, বাংলার মানুষ যাদের ভোট দেবে তারাই রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। দেশের জনগণ জাতীয় পার্টির সঙ্গে আছে এবং ভোট দেবে। তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় পার্টির দুর্দিনে যেসব নেতাকর্মী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে আগলে রেখে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, আজ তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। আগামী কাউন্সিলে নেতাকর্মীদের দলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’ বিরোধী দলীয় নেতা আরও বলেন, ‘আমি সুস্থ। আমার কোন সমস্যা নেই। আমি শীঘ্রই দেশে ফিরব।’

×