ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে বলেছেন, আন্দোলন-আন্দোলন বলতে বলতে গলা শুকিয়ে যায়, কিন্তু মরা নদীতে জোয়ার আসে না। জোয়ার কি আসবে কখনও ? নেতাকর্মীরা ছাড়া আপনাদের সঙ্গে দেশের মানুষ যোগ দেয়নি। ফয়সালার কথা কোন মুখে বলেন ? আমি বলেছি হবে হবে, ফয়সালা হবে। ফয়সালা হবে আগামী নির্বাচনে, ফাইনাল খেলা। তখন দেখা যাবে, কে হারে কে জেতে।
শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে (কেআইবি) মিলনায়তনে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মিলিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন পারভেজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হাকিম স¤্র্রাটের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, সম্মিলিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সরকার রেফাত সঞ্জয় প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, টেমস নদীর ওপার থেকে দ-িত অর্থপাচারকারী অপরাধী হাঁক-ডাক দিচ্ছে। সেই ডাকে টেমস নদীতে ঢেউ উঠেছে কিনা জানি না। তবে পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় ঢেউ নেই। বিএনপির শুকনো নদীতে জোয়ার আসবে না। চিৎকার যত পারেন করেন, ফয়সালা হবে নির্বাচনে। হুমকি দিয়ে লাশ ফেলতে চান ? লাশ ফেলার দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হচ্ছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই। আপনাদের হাতে অনেক রক্তের দাগ। ২১ হাজার আওয়ামী লীগ কর্মী, আহসানউল্লাহ মাস্টার, এ এম এস কিবরিয়া, এদের রক্ত আপনাদের হাতে। আমরা আপনাদের কাউকে হত্যা করিনি। হত্যার ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাসী নই। হত্যাচেষ্টা হয়েছে আমাদের নেত্রীর ওপর, কিন্তু খালেদা জিয়াকে কেউ মারতে যায়নি।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের আইনের মধ্য দিয়ে অব্যাহতি দিল ? মির্জা ফখরুল আপনি যত কথাই বলেন, এই প্রশ্নের জবাব আজও দেননি। বারে বারে প্রশ্ন করতে চাই- কেন খুনীদের পুরস্কৃত করা হলো, নিরাপদে বিদেশ পাঠানো হলো, তাদের চাকরি দিল আমাদেরই দূতাবাসে। আজকে এ প্রশ্নের জবাব তারা দেবে না। কারণ তারা সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পায়।
এ সময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের লাশ প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, চট্টগ্রাম থেকে লাশ এনে চন্দ্রিমাতে জানাজা পড়লেন, কিন্তু কে লাশ দেখেছে ? একটা ছবি দেখাতে পারবেন ? একটা ছবি আপনার কাছে চাই, মৃত লাশের একটা ছবি দেখান।
এ সময় তরুণদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগ করবেন কোন আদর্শে ? সেই আদর্শের বিবর্তনের ইতিহাস জানতে হবে। তা না হলে অসম্পূর্ণ হয়ে থাকবেন। কতজনকে বঙ্গবন্ধু টেলিফোনে কী বলেছিলেন সম্পূর্ণ বিষয়টি জাতির জানা। তিনি কিছু বললেন, কিছু বলেননি। অনেক নির্মম সত্য সবসময় বলা যায় না। সে সত্যও বেরিয়ে আসবে।
শুধু দেখলাম নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল ছুটে এসেছেন বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে, আর কেউ আসেনি। সোবহানবাগ মসজিদের কাছে তাকে ঘাতকেরা হত্যা করে। এজন্য রাজনৈতিক নেতাও সেদিন ওই সঙ্কটের সময়ে সাড়া দেননি। ৩২ নম্বরে রক্তপাতের জবাব দিতে আসেননি। এটা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বে ব্যর্থতা।