ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা

প্রকাশিত: ১৮:২০, ১৭ মে ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা

বিশ্বের শীর্ষ তুলা আমদানিকারক দেশ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর তুলা ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী সংরক্ষণাগার গড়ে তোলার মাধ্যমে বছরে ১০/১২ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। এটা বড় সম্ভাবনা। বন্দর থেকে বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ মুক্তবাণিজ্য অঞ্চলের সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত মাসে দারুণ সম্ভাবনার কিছু চিত্র উঠে এসেছিল। বিশ্ব ব্যাংক নিউইয়ার্ক বে-টার্মিনালের ব্রেক ওয়াটার ও ড্রেজিংয়ের জন্য ৪৬০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করেছিল সে সময়ে। চলতি বছরের শেষ প্রান্তে লালদিয়ার চর এলাকায় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করার কথা। আশার কথা হলো, চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে বিদেশী বিনিয়োগের প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। এই বছরেই গড়ে উঠবে মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল। দেশের অর্থনীতির গেম চ্যাঞ্জার খ্যাত মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রে দুটি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে। বে-টার্মিনালে ডিপি ওয়ার্ল্ড ও সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি কর্তৃক দুটি টার্মিনালের কাজ শুরু হচ্ছে।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও আশার বাণী শুনিয়েছেন। চট্টগ্রাম বন্দরকে বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। হৃৎপিণ্ড দুর্বল হলে ডাক্তার, বৈদ্য, সবকিছু আনো; মেরামত হবে, কিন্তু চলবে না। ছোট্ট একটি হৃৎপিণ্ড, তার মধ্যে হলো রোগাক্রান্ত, এই হৃৎপিণ্ডে যতই ঠেলাঠেলি করো, রক্ত সঞ্চালন হবে না। এটিই যদি একমত হই- বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড হলো চট্টগ্রাম বন্দর, তাহলে যে সাইজের হৃৎপিণ্ড আছে, ওই সাইজে চলে না। এই হৃৎপিণ্ড বিশ্ব সাইজের হতে হবে।’
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। এই বন্দরের বিভিন্ন টার্মিনালে বিদেশি কোম্পানিকে সম্পৃক্ত করার যে প্রক্রিয়া চলছে, সে বিষয়ে সরকারের মনোভাব স্পষ্ট করা হয়েছে। আশপাশের দেশগুলোর অর্থনীতির জন্য এই বন্দর গুরুত্বপূর্ণ। এটি ব্যবহারের সুযোগ পেলে নেপাল, ভুটান এমনকি সেভেন সিস্টার্সও (ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য) লাভবান হবে। উপকৃত হবে বাংলাদেশও। এটাই প্রকৃত সত্য।
দেশের উন্নয়ন অবকাঠামোর স্বার্থেই বন্দর উন্নয়ন জরুরি। চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা অবশ্যই বিশ্বমানের হতে হবে, এ বিষয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই। সরকার এ বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ বন্দর পুরোদস্তুর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য সংযোগের মাধ্যম হয়ে উঠলে দেশ বিপুলভাবে লাভবান হবে, এমনটাই প্রত্যাশা।

প্যানেল

×