ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

মারুফ রায়হান

প্রকাশিত: ২০:৩১, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ঢাকার দিনরাত

আপনি কি জানেন, রাজধানীতে বছরে মাথাপিছু প্রায় ২৩ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি শুরুই হয় জাতীয় কবিতা উৎসব ও অমর একুশে গ্রন্থমেলার মধ্য দিয়ে। করোনার প্রকোপ কমে আসায় এবার যথারীতি এভাবেই শুরু হলো মাসটি। ঢাকার বাইরের কবিতা চর্চাকারীদের কাছে কবিতা উৎসব বিশেষ আগ্রহ ও আনন্দের বিষয়। কিন্তু এতে দর্শক-শ্রোতার আশানুরূপ উপস্থিতি কেন ঘটছে না, আয়োজক-কবিদের এটি গুরুত্বের সঙ্গেই ভেবে ব্যবস্থা নিতে হবে। 

বাতাসেও প্লাস্টিক!

আপনি কি জানেন, রাজধানীতে বছরে মাথাপিছু প্রায় ২৩ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়। এই প্লাস্টিকের প্রায় অর্ধেক মাটি ও পানিতে রয়ে যায়। তৈরি করে মারাত্মক দূষণ। জনস্বাস্থ্যকে ফেলে হুমকিতে? এলেন ম্যাক আর্থার ফাউন্ডেশন ২০১৭ সালে এক হিসাব কষে জানিয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে আমরা দেখব, সাগরে মাছের চেয়ে প্লাস্টিকের পরিমাণ বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয় এবং টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণায় ঢাকার মোট ১৩টি এলাকার বাতাসের নমুনা নেওয়া হয়। এলাকাগুলো হলো ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, মোহাম্মদপুর, মিরপুর-১৩, পশ্চিম কাজীপাড়া, শান্তিনগর, আরামবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ও ফজলুল হক হল, খিলক্ষেত, ফার্মগেট, মহাখালী, মুগদা, বাসাবো। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার বাতাসের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। 
সেদিন প্রতিবেদন থেকে ভয়ঙ্কর সব কথা জানতে পারলাম। ঢাকার বাতাসে এখন এক নতুন বিপদ দানা বাঁধছে। এতদিন বাতাসে নানা দূষিত বস্তুকণা নিয়ে উদ্বেগ ছিল। শঙ্কা বাড়িয়েছিল অতিভারি ধাতুর উপস্থিতি। মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ওই বস্তুকণা পরিমাপ করে গবেষকরা ঢাকার বাতাসকে বিপজ্জনক বলছিলেন। এবার গবেষকরা ঢাকার বাতাসে বিষাক্ত অতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা বা মাইক্রো প্লাস্টিকের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। ঢাকাবাসীর নিশ্বাসের সঙ্গে ওই কণা শরীরে প্রবেশ করছে। এতে ক্যান্সার, শ্বাসপ্রশ্বাসের রোগ তৈরি হচ্ছে, যা ওষুধেও দূর হবে না বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। ফলে এর উৎস নিয়ন্ত্রণে জোর দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
উদ্ভিদ ও জলজ প্রাণীর পাশাপাশি মানব স্বাস্থ্যের ক্ষতিসাধন করে প্লাস্টিক। আশপাশের দেশের তুলনায় বাংলাদেশে প্লাস্টিক দূষণের পরিমাণ বেশি। গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক প্রয়োজনে অহরহ ব্যবহৃত হচ্ছে প্লাস্টিক, প্রসাধন সামগ্রীর শিল্পেও এর ব্যবহার বেড়েছে। ফলে মৎস্য উৎপাদন ও পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছে।  প্লাস্টিকের পরিবেশগত সমস্যা হচ্ছে সাগরদূষণ এবং এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া। প্রতিবছর অন্তত ১২.৭ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক সাগরে প্রবেশ করে।

‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক তথ্য থেকে জানা যায় যে প্রতিবছর যে পরিমাণ প্লাস্টিক ভূমি থেকে সাগরে প্রবেশ করে, তাতে বাংলাদেশ দশম স্থানে রয়েছে। তবে জনসংখ্যার হিসাবে বাংলাদেশের স্থান ১৮৭তম স্থানে এবং তুলনামূলকভাবে জনসংখ্যার হিসাবে ডেনমার্কের স্থান ১৯তম স্থানে রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, ২০০২ সালে বাংলাদেশই প্রথম দেশ, যে প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। লক্ষ্য করা হয় যে প্লাস্টিক ব্যাগ বন্যার সময় পানি নিষ্কাশনব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এরপর পৃথিবীর অনেক দেশ প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। উদাহরণস্বরূপ, মরক্কো ২০১৬ সালে ও কেনিয়া ২০১৭ সালে প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। 
যুক্তরাজ্যের গ্রিন পিস প্রতিষ্ঠানের এক হিসাবে দেখা যায়, কোকা-কোলা কোম্পানি প্রতিবছর ১২০ মিলিয়ন প্লাস্টিক বোতল তৈরি করে। গড় হিসাবে প্রতিবছর ২৮০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়। তন্মধ্যে ২০১৬ সালে ইউরোপে ২৭ মিলিয়ন টন ও যুক্তরাষ্ট্রে ৩৩.৩ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়। সুতরাং এ থেকে সহজেই অনুমেয় যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি তথা জলবায়ু পরিবর্তনে প্লাস্টিকের বিরূপ ভূমিকা অপরিসীম। 
প্লাস্টিক বর্জ্য যাতে প্রকৃতিতে না ছড়াতে পারে, তা নিশ্চিত করা চাই। কিন্তু এ ব্যাপারে কি আমরা, আমাদের কর্তৃপক্ষ সচেতন? 

বইমেলা কড়চা

মাসব্যাপী একুশের বইমেলা চলছে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে। বইমেলা নিয়ে লেখক-প্রকাশক-পাঠকদের অনুভূতি ও মন্তব্য থেকে মেলার চারিত্র্য সম্পর্কে কিছুটা হলেও অনুমান করা যায়। জার্মানি থেকে এসেছেন অনুবাদক-লেখক নাজমুন নেসা পিয়ারি। তিনি লিখলেন: ‘৫ই ফেব্রুয়ারি রাতে প্রথম বইমেলায় গিয়েছিলাম। ভাল লাগলো মেলায় মুক্তমঞ্চ খুঁজতে গিয়ে সামনেই যখন সাহিত্য প্রকাশ-এর স্টল পেয়ে গেলাম।

সেখানে সাজানো আমার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই সত্তার অসীম আকাশ! প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে। আমি নিজেও মুক্তিযুদ্ধে সম্পৃক্ত ছিলাম। একসময়ে ছবি আঁকতাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে ৭০-এর দশকে ধানমন্ডিতে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ-এ ফরাসি ভাষা শিখতে ও ওখানেই আর্ট গ্যালারিতে ছবি আঁকার পদ্ধতি ও জলরং, তেলরং-এর ব্যবহার শিখতে যেতাম। একেবারে বিফলে যায়নি সে প্রয়াস।’
মঈনুল আহসান সাবের একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাশিল্পী।

দিব্যপ্রকাশ নামে একটি প্রকাশনা সংস্থা পরিচালনা করেন। বহু গুরুত্বপূর্ণ বই বেরিয়েছে এখান থেকে। তিনি প্রতিক্রিয়ায় জানালেন: ‘গত ৩০ বছর ধরে সক্রিয়ভাবে বইমেলায় অংশ নিচ্ছি। এমন অধপতিত (অবশ্যই আমার বিবেচনায়) লেখক-প্রকাশকের মধুর মিলন কোনওবার দেখিনি। ফিরে আসা খুব কঠিন হবে। কিংবা ফেরা আর হবেই না। (প্রসঙ্গক্রমে বলি, ১-৫ ফেব্রুয়ারি দিব্যপ্রকাশের বিক্রি ৪০ হাজারের নিচে)।’
মোরশেদ শফিউল হাসান বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রপ্ত প্রবীণ প্রতিষ্ঠিত লেখক। তিনি যখন এ ধরনের একটি জিজ্ঞাসায় আন্দোলিত হন, তখন ধারণা করা যায় কোথাও কিছু গলদ রয়ে গেছে। তিনি বললেন: ‘বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলা সম্পর্কে লিখতে/বলতে গিয়ে ইদানীং প্রায়ই প্রাণের মেলা /প্রাণের বইমেলা কথাগুলোর প্রয়োগ দেখি। কবে থেকে, কী অর্থে বইমেলা সম্পর্কে এই প্রাণের কথাটা যোগ করা হচ্ছে জানার কৌতূহল বোধ করছি। আর সব মেলা বা উৎসবের সঙ্গে কি আমাদের প্রাণের যোগ ঘটে না?’

মঞ্চনাটক সখী রঙ্গমালা

‘আলী যাকের নতুনের উৎসবে’ নামে ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে দারুণ একটি উৎসব হয়ে গেল। খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি উদ্যোগ। পাঁচটি নাট্যদল নতুন পাঁচটি মঞ্চনাটকের প্রথম প্রদর্শনী করল এই উৎসবে। কথাসাহিত্যিক শাহীন আখতারের উপন্যাস থেকে নাটক দেখতে গিয়েছিলাম। এই নাটক মঞ্চসফল হবে, এটি সহজেই অনুমেয়। 
নাটকটি নিয়ে নাট্যকর্মী অদিতি দাসের উচ্চারণই এখানে তুলে ধরছি। তিনি লিখেছেন : ‘২৪ জানুয়ারি প্রথম মঞ্চায়িত হলো নাটক সখী রঙ্গমালা। দীর্ঘ ৬ বছর পর বটতলা একটি নতুন প্রযোজনা এনেছে। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় সন্ধ্যা ৭ টায় মঞ্চায়িত হয় নাটকটি, যার দৈর্ঘ্য ছিল ২ ঘণ্টার বেশি। শাহীন আখতারের  উপন্যাসের বিশাল ক্যানভাসকে তুলে ধরা এর চেয়ে কম সময়ের মধ্যে সম্ভব নয়। এজন্য নাটকটির নির্দেশক মোহাম্মদ আলী হায়দারের প্রতি কৃতজ্ঞতা। 
মূলত ফুলেশ্বরী রাই ও রঙ্গমালা চরিত্র দুটি নাটকটিতে প্রধান হলেও, হীরা চরিত্রটিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ তিন নারীই কেন্দ্রীয় চরিত্রে। ফুলেশ্বরী রাই চরিত্রের সবচেয়ে সুন্দর দিকটি হলো সে প্রকৃতিপ্রেমী, পাখিপ্রেমী। এই ধরনের মানুষ একটু উদাসীন হয়, জাগতিক বিষয়ে অত আগ্রহ থাকে না, তারা হয় কোমল হৃদয়ের অধিকারী। তার মন উদার, তাই সে উজাড় করে ভালোবাসতে জানে, আর এটাই তার মূলশক্তি। রঙ্গমালা হলেন ১৮ শতকের দক্ষিণবঙ্গের নিচু জাতের নারী।

তিনি সবকিছুতেই জয়ী হতে চেয়েছেন, স্বাধীন হতে চেয়েছেন, ভাগ্যকে মেনে নেননি। কামুক, লম্পট জমিদার রাজচন্দ্র চৌধুরীর সঙ্গে ফুলেশ্বরীর বিয়ে হয়। আসলে নামমাত্র বিয়ে, বিয়ের পরেও রাজচন্দ্র বিভিন্ন মেয়ে বা নারীর সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা ও নির্যাতন চালিয়ে যান। জীবনের কোনো ক্ষেত্রেই জয়ী হতে পারেন না তিনি। রাজচন্দ্রের প্রেম রঙ্গমালার সঙ্গে। অথচ ফুলেশ্বরীর যতটা না ঈর্ষা কাজ করে, তার চেয়ে বেশি ভালোবাসা কাজ করে রঙ্গমালার জন্য। সে রঙ্গমালার মতো হতে চায়। রঙ্গমালাকে সে দূর থেকে একবার দেখেছে মাত্র। রঙ্গমালাকে সে সখী হিসেবে কল্পনা করে। যখন রাজচন্দ্রের সঙ্গে তার দৈহিক সম্পর্ক হয়, তখনও ফুলেশ্বরী রঙ্গমালাকেই কামনা করে।
রাজচন্দ্রের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জন্যই রঙ্গমালা খুন হয়, কিন্তু একমাত্র ফুলেশ্বরীই এই হত্যার প্রতিবাদ করে, গানের ভাষায় যা প্রকাশ পায়। যে প্রতিবাদী গান সে ছড়িয়ে দেয় পাখিদের কণ্ঠে।’ 

নাজিব তারেকের চিত্র প্রদর্শনী
উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নং সড়কের ২০ নং বাড়িতে গ্যালারি কায়ায় গত শুক্রবার উদ্বোধন হলো শিল্পী ও শিল্পতাত্ত্বিক নাজিব তারেক-এর চিত্র প্রদর্শনীর। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী কাজী রকিব। অনুষ্ঠানে বরেণ্য শিল্পী হাশেম খানের উপস্থিতি ছিলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রদর্শনীটি ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১.৩০ থেকে সন্ধ্যা ৭.৩০ পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা থাকবে।
নাজিব মূলত একজন ছাপচিত্রী। এছাড়াও তিনি তেলরঙ, জলরঙ, অ্যাক্রেলিক সহ বিভিন্ন প্রচলিত-অপ্রচলিত শিল্প মাধ্যমে চিত্র রচনা করলেও মূলত মিশ্রমাধ্যমেই অধিকাংশ কাজ করেছেন। প্রাথমিকভাবে প্রকৃতি, গঠন, প্রতিকৃতি তার চিত্রকর্মের বিষয় হয়ে ওঠে। তার প্রতিকৃতি অর্ধ-বাস্তবসম্মত এবং প্রায়শই পরাবাস্তব হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তার অধিকাংশ চিত্রকর্মে স্পন্দনশীল রঙ, এবং চলমান পশ্চাদপটের প্রাধান্য রয়েছে।

প্রাথমিকভাবে তার চিত্রকর্মে ফিগারের বহুভঙ্গিম ভংগুরতা লক্ষণীয় যা প্রায়শই ফবিস্ট শিল্পীদের শিল্পকর্মের স্মরণ করিয়ে থাকে। অনন্তের অনুসন্ধান এবং নারী বনাম নারী চিত্রকর্মের স্থান এবং অভিপ্রায় বিশ্লেষণ করলে প্রায়শই পল ক্লীর চিত্রকর্মের স্মরণ হয়ে থাকে] তারেক প্রায়শই চিত্র রচনায় আরবি বর্ণমালা এবং শব্দের ব্যবহার ঘটিয়েছেন। তারেক মূলত নির্দিষ্ট কোনো মতবাদের পরিবর্তে চিত্রকলার বিভিন্ন মতবাদসমূহের সংশ্লেষণের মাধ্যমে নিজস্ব শিল্পধারা তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।

রসিক শিল্পী মনে রাখছেন যে বইমেলার সময়ে তার এই চিত্র প্রদর্শনী হচ্ছে শহরের একেবারে উত্তর প্রান্তে। তাই রসভরে বলেন: ‘কবিতা পড়তে পাশে কবিকে লাগে না, উপন্যাস পড়তে পাশে ঔপন্যাসিককে লাগে না। তেমন ছবি দেখতে পাশে চিত্রকরকে লাগে না। পাঠক কবিতা, উপন্যাস পাঠ করে বা উপভোগ করে। সে পাঠের প্রতিক্রিয়া বন্ধুদের জানায়, সেই জানানোটিই আজকাল ফেসবুকে পাঠ-প্রতিক্রিয়া হয়ে প্রকাশিত। চিত্রের প্রদর্শনীতে শিল্পী স্বয়ং বসে থাকবেন না বলেই গ্যালারি, বই প্রশ্নে যেমন প্রকাশক ও বিক্রেতা। তবে এ দেশে গ্যালারিতে শিল্পী বসে থাকেন।

সেটা কতোটা তার আগ্রহ, কতোটা দর্শকদের চাওয়া জানি না। আমি দর্শক হিসেবে শিল্পীকে গ্যালারিতে আশা করি না, চিত্রকর হিসেবেও বসে থাকতে উৎসাহী নই। বিশুদ্ধ বা রসিক দর্শকের ছবি দেখতে চিত্রকরকে প্রয়োজন নেই কিন্তু আড্ডাবাজ-দর্শকের জন্য আড্ডাসঙ্গী দরকার। আর রীতি মানতেও তাই গ্যালারিতে থাকতে হবে। তো সোমবার, বুধবার ও শুক্রবার বিকেলে থাকবো।

০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

[email protected]

×