ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রযুক্তিশিক্ষার চাহিদা

প্রকাশিত: ২১:২৮, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

প্রযুক্তিশিক্ষার চাহিদা

.

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বৃদ্ধির বিবিধ কারণ রয়েছে। সময়টাই এখন প্রযুক্তির। কম্পিউটার শিক্ষা যার নেই তাকে শুধু চাকরির বাজারই নয়, আধুনিক সমাজও করুণা করে। এটি অস্বীকার করলে ভুল হবে যে, প্রতিটি শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন থাকে সে এমন একটি বিষয়ে শিক্ষার্জন করবে, যাতে শিক্ষাশেষে সে কর্মস্থল খুঁজে পাবে এবং সম্মানজনক একটি পেশা বেছে নিতে পারবেন।

সোজা কথায় চাকরি বা শ্রমবাজারে সেবা দেওয়ার বিষয়টি তার বিবেচনায় থাকে। এটা ঠিক যে, এককালে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার পড়ার আগ্রহ ছিল বেশি, বিশেষ করে মেধাবী ও বিজ্ঞানশিক্ষায় শিক্ষিতরা ওই দুটি বিষয় বেছে নিত ভবিষ্যতে একজন চিকিৎসক কিংবা প্রকৌশলী হবে বলে। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে কর্মবাজারেও পরিবর্তন এসেছে। ফলে ওই দুটি বিষয়ের সমান্তরালে ব্যবসা শিক্ষারও কদর বাড়ে। স্নাতক পর্যায়ে তাই বিবিএ’র চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। শুধু ব্যাংকিং সেক্টর নয়, প্রতিটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই বিবিএ ডিগ্রিধারীদের কদর বিস্ময় জাগানো। বিগত এক দশকে দেশের ডিজিটাল সেক্টর প্রভূত উৎকর্ষ লাভ করার প্রেক্ষিতে এখন শিক্ষার্থীরা বুঝতে পেরেছে যে, প্রযুক্তি শিক্ষার দিনই সামনে।

তাই সে বিষয়ে শিক্ষালাভ করলে সহজেই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পেশাজগতে অবদান রাখার পথ সুগম হবে। এটা স্পষ্ট যে, এখন উন্নত বিশ্বে ব্যবসা ও মানবিক শিক্ষায়ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে। আমাদের দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এদিকটায় তাই দৃষ্টি দেওয়া দরকার। ক্যাশলেস যুগে ব্যবসাবাণিজ্য ব্যাংকিং প্রযুক্তিনির্ভর হলেও পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আসেনি। সময় এসেছে এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তার। তা না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব।
সুন্দর স্বপ্ন, দক্ষ নেতৃত্ব এবং অকুতোভয় অগ্রসরতার অঙ্গীকার- এই তিনে মিলে একটি ভূখ- যে সৌন্দর্য ও সফলতায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, তারই দৃষ্টান্ত সমকালীন বাংলাদেশ ও তার সুযোগ্য কা-ারি বঙ্গবন্ধুকন্যা। বিশে^র সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ আগেই হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রোজ্জ্বল ডিজিটাল বাংলাদেশ। আগামীতে স্বদেশ সেই সোপান বেয়ে উঠে আসবে স্মার্ট রাষ্ট্রের অভিধায়। স্মার্ট- এই শব্দটি বহুমাত্রিক দ্যোতনা জাগায়। সপ্রাণ, সপ্রতিভ, স্বংয়ক্রিয়- কোনো শব্দেই যেন ধরা পড়ে না স্মার্ট বিশেষণটি। এ যেন তার চাইতেও বেশি, মানে ও উচ্চতায় আরও উত্তীর্ণ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে দারুণভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে জীবনমানে ও জীবনধারায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ভিন্ন নাম স্মার্ট বাংলাদেশ। শিক্ষার্থীরা অল্প বয়সেই এটি অনুধাবনে সক্ষম হচ্ছে।
যাবতীয় কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার আজ অত্যাবশ্যক হয়ে উঠেছে। স্মার্ট আধুনিক জীবন যাপনের প্রতিটি পর্যায়ে ওই জাদুকরী যন্ত্রটির অংশগ্রহণ যেন অনিবার্য। ডিজিটাল কানেক্টিভিটি ওই উন্নয়নের অনিবার্য পথরেখা। স্মার্ট সিটি বা স্মার্ট টেকনোলজি বাস্তবায়নে এটিই চাবিকাঠি। স্মার্ট সিটি ও স্মার্ট ভিলেজ বিনির্মাণে স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি ও শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়নে তাই ফাইভজি কানেক্টিভিটির সুবিধাকে কাজে লাগানোর বিকল্প নেই। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক এবং উদ্ভাবনী বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষ স্বপ্ন দেখছে এক নতুন উজ্জীবিত সমীহ জাগানো স্মার্ট বাংলাদেশের। সে জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিশিক্ষার  কোনো বিকল্প নেই।

 

×