ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চাই শান্তির বিশ্ব

.

প্রকাশিত: ২১:২০, ৯ ডিসেম্বর ২০২২

চাই শান্তির বিশ্ব

.

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, সৌদি আরব, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস এবং স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের নৌবাহিনী ও মেরিটাইম সংস্থার অংশগ্রহণে ইতোমধ্যে চার দিনব্যাপী আইএফআর শুরু হয়েছে। ‘ফ্রেন্ডশিপ বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ শিরোনামে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত কক্সবাজারের ইনানীতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ-২০২২-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা বিশ^াস করি সংঘাত নয়, সমঝোতা এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে কোন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা হচ্ছে যুদ্ধ করার জন্য নয়, শান্তি এবং সৌহার্দ্য স্থাপন করার জন্য। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য। অবাধ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিশ্চিত করার জন্য নিরাপদ সমুদ্র অপরিহার্য। কারণ বর্তমানে বিশ্বের ৯০ শতাংশ বাণিজ্য সমুদ্রপথ দিয়েই হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক সীমানার মাধ্যমে সব দেশ বিভক্ত হলেও বন্ধুত্বের সেতু বন্ধনে সমুদ্র উপকূলীয় সব দেশের সঙ্গে আমরা একই সূত্রে গাঁথা। ‘ফ্রেন্ডশিপ বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’Ñএই উপজীব্যকে ধারণ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত ‘আইএফআর-২০২২’ ইভেন্টটি আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হবে। যা সমুদ্র তীরবর্তি দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কোনো যুদ্ধ মানব জাতির জন্য কি ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, ১৯৭১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা তা দেখেছি। বর্তমানে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও মানব জাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে এনেছে। কাজেই আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আমরা আন্তর্জাতিক মহলের সবার কাছে আহ্বান জানাই, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। কোনো সমস্যা থাকলে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে হবে।
বর্তমান সরকার অফুরন্ত সমুদ্র সম্পদের অপার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে এ খাতের উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।  সমৃদ্ধ অর্থনীতি ও সমুদ্রে একটি নিরাপদ এবং সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরিকল্পিত সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গুণগত উন্নয়নমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক উন্নত দেশে রূপান্তরিত করার জন্য এবং ২১০০ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ ও জলবায়ু-সহিষ্ণু বদ্বীপে উন্নীত করার লক্ষ্যেও কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এই উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য দরকার শান্তিময় বিশ্ব। শান্তির পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর এমন সাহসী উচ্চারণ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। বর্তমান সরকারের শান্তির পক্ষে এরূপ অবস্থান বহির্বিশ্বে একটি শান্তিকামী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করবে নিঃসন্দেহে।

 

×