ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক, এ মাসেই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত হবে ॥ আলী রীয়াজ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও একই ব্যক্তির একাধিক পদ প্রশ্নে মতভেদ

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ২০ জুলাই ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও একই ব্যক্তির একাধিক পদ প্রশ্নে মতভেদ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন প্রক্রিয়া এবং এক ব্যক্তি একাধিক পদে থাকতে পারবে কিনা তা নিয়ে দিনভর আলোচনাতেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়নি। ঐকমত্য কমিশন প্রস্তাবিত একই ব্যক্তি প্রধামনমন্ত্রী, সংসদ প্রধান ও দলীয় প্রধান হতে পারবে না, এমন প্রস্তাবের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমর্থন জানালেও সরাসরি বিরোধিতা করেছে বিএনপিসহ কয়েকটি দল। 
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ প্রধান একজন হতে পারেন, এমন প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এ বিষয়ে দলগুলোর প্রতিনিধিরা ভিন্ন ভিন্ন মত তুলে ধরেছেন।
বিচার বিভাগকে বিতর্কের বাইরে রাখতে হবে- এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি ঐকমত্য রয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ মনে করেন, বাকি দিনগুলোতে সংলাপে আরও কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হবে। জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে বলেও তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রবিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের ১৫তম দিনে এ সব বিষয়ে আলোচনা হয়। ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া। সংলাপে ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। 
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জন্য ৫ সদস্যের কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। দিনভর আলোচনা হলেও রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য পৌঁছাতে পারেনি।
সংলাপ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আলোচনার প্রথমার্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে পূর্বের আলোচনার ধারাবাহিকতায় পুনরায় একটি সংশোধিত সমন্বিত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটিতে বিস্তারিতভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং এই প্রস্তাবের অধিকাংশ বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। 
এই খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভাষাগত ও খুঁটিনাটি দিক পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে আগামী মঙ্গলবার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবে কমিশন। 
উচ্চ কক্ষ প্রতিষ্ঠা নিয়ে কোনো ভিন্নমত নেই উল্লেখ করে কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, উচ্চ কক্ষ কীভাবে হবে তা নিয়ে দুটি ভিন্ন প্রস্তাব আছে। রাজনৈতিক দলগুলো এ ব্যাপারে কমিশনের কাছে দায়িত্ব অর্পণ করার মতামত দিয়েছে। কমিশন ইতোমধ্যে উচ্চকক্ষ বিষয়ে বৈঠক করেছে। উচ্চকক্ষ কীভাবে হবে, তা নিয়ে কমিশন আরেকটু সময় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। 
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে এবং বাকি দিনগুলোর আলোচনায়ও আরও কিছু মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। এই প্রক্রিয়া চলমান থাকলে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কমিশনের প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি মিলে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি গঠিত হবে। সরকার ও বিরোধী দল তিনজন করে এবং তৃতীয় দল দুইজনের নাম প্রস্তাব করবে। এই আটজনের মধ্য থেকে র‌্যাঙ্কড চয়েস ভোটিংয়ের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা চূড়ান্ত করা হবে। প্রস্তাবটি আলোচনাকালে বাছাই কমিটি ৫ থেকে ৭ সদস্যের করার প্রস্তাব এসেছে। একইসঙ্গে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলের বাইরেও অন্যান্য দলের পক্ষ থেকেও প্রধান উপদেষ্টা পদের জন্য নাম প্রস্তাব করার বিধান রাখার পরামর্শ এসেছে। 
তবে, অতীতে বিচার বিভাগ রাজনীতিকীকরণ হয়েছে, সে তথ্য তুলে ধরে অধিকাংশ দলই এই প্রক্রিয়ায় বিচারক বা বিচার বিভাগীয় ব্যক্তিদের রাখার বিরোধিতা করেছে।
 বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হলেও বিষয়টি এখনো আপিল বিভাগের রিভিউ পর্যায়ে বিচারাধীন রয়েছে। আশা করি, আদালতের রায়ের মাধ্যমেই এই ব্যবস্থা আবার চালু হবে। তবে আদালতের রায়ে যদি ব্যবস্থা পুনর্বহাল না-ও হয়, সেক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ চাইলে আইন করে নতুনভাবে এই পদ্ধতি চালু করতে পারে। 
তিনি বলেন, সংলাপে বিচার বিভাগকে বিতর্কের বাইরে রাখতে হবে, এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি ঐকমত্য রয়েছে। বিএনপি ও অন্যান্য দল কয়েকটি বিকল্প পদ্ধতি দিয়েছে। কমিশন সেগুলো বিশ্লেষণ করে একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে। সেই খসড়ায় যদি কারও কোনো সংশোধনী বা পর্যবেক্ষণ থাকে, তারা তা জমা দিতে পারবেন। রাষ্ট্রপতিকে প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে রাখার বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাব এখন আর নেই বলেও তিনি জানান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব এসেছে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। এই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধির পাশাপাশি আরও দুজন সদস্য থাকতে পারেন বলে মত দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কমিটি বিভিন্ন দল বা জনগণের কাছ থেকে প্রস্তাবিত নাম আহ্বান করতে পারবে। এরপর সেগুলোর মধ্যে শর্টলিস্ট হবে, প্রয়োজনে র‌্যাঙ্কড চয়েস ভোটিংয়ের মাধ্যমেও নির্বাচন হতে পারে। এইভাবে একজন নিরপেক্ষ, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নাগরিককে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া তৈরি করা হচ্ছে। 
এ ছাড়া এই সরকারের ৯০ দিনের জন্য নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের বিধান আগের মতোই থাকবে। জরুরি পরিস্থিতিতে আরও ৩০ দিন সময় বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কার্যকর হলে, প্রধান উপদেষ্টার ক্ষমতা ও দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর মতোই হবে, তবে সীমিত পরিসরে রুটিন দায়িত্বে সীমাবদ্ধ থাকবে।
একইসঙ্গে এক ব্যক্তি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে একসঙ্গে থাকতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান এই বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার দায়িত্ব একসঙ্গে পালন নিয়ে খুব একটা মতভেদ নেই। এখন বিতর্কটা চলছে দলীয় প্রধান পদে উনি থাকতে পারবেন কিনা? এটা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এক জায়গায় আসতে পারব। আমাদের দলীয় প্রস্তাব যুক্তি দিয়ে জানিয়েছি। 
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের মতো দেশেও দলের প্রধান ব্যক্তিই প্রধানমন্ত্রী হন। তবে এটা নির্বাচন নয়, সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। সে ব্যক্তি যদি কোনো দলের প্রধান হন, তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করা হয় না। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় প্রধানের জন্য অপশন খোলা থাকা উচিত। কারণ, এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। পার্লামেন্টারি পার্টি যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। আবার তারা চাইলে অন্য কাউকেও মনোনয়ন দিতে পারেন।

কিন্তু সেই সুযোগটা রাখা জরুরি। শুধু দলীয় প্রধান হওয়ার কারণে কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না, এমন বিধান গণতন্ত্রবিরোধী হবে। এটা সংসদীয় গণতন্ত্রের চর্চার পরিপন্থি। তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক প্রথা বিবেচনায় নিয়ে সবাই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। আমরা একটি যৌক্তিক অবস্থানে আসতে পারব বলেই আশাবাদী।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান গঠনে ভোট নয়, রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রক্রিয়াকেই একমাত্র গ্রহণযোগ্য পথ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান গঠনে ৫ বা ৭ সদস্যের কমিটির যে দুটি প্রস্তাব এসেছে, আমরা কোনোটিরই বিরোধিতা করছি না। আমাদের মূল কথা একটাই কমিটির সদস্য মনোনয়ন হোক সর্বসম্মতভাবে, কোনোরকম ভোটাভুটির মাধ্যমে নয়।
তিনি বলেন, র‌্যাঙ্কড চয়েস ভোটিং বা ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিলে তা নেতিবাচক রাজনীতির পথ খুলে দেবে, যার ফলে অশুভ দরকষাকষি, হর্স ট্রেডিং হতে পারে এটা আমরা অতীতে দেখেছি। এক্ষেত্রে যদি কমিটিতে রাজনৈতিক ঐকমত্যে উপনীত হওয়া সম্ভব না হয়, তবে সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, পাঁচ সদস্যের কমিটি হলে সরকার ও বিরোধী দল থেকে দুজন করে এবং তৃতীয় বৃহত্তম দল থেকে একজন সদস্য রাখা যেতে পারে।

সাত সদস্যের কমিটির ক্ষেত্রেও সরকার ও বিরোধী পক্ষ থেকে তিনজন করে এবং তৃতীয় দলের একজন সদস্য রাখা যেতে পারে। তবে কমিটির সদস্য সংখ্যা যাই হোক, তা হতে হবে সর্বসম্মতিক্রমে। কাউকে বাদ দিয়ে, ভোটের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠের বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ যেন না হয়।
অপর প্রস্তাবের বিষয়ে ডা. মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা মনে করি, একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা হতে পারেন, তবে একইসঙ্গে দলের প্রধান থাকা যাবে না। এতে রাজনৈতিক কাঠামোতে ভারসাম্য ফিরে আসবে, নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ  তৈরি হবে। তিনি বলেন, আমরা বলছি না, এসব প্রস্তাব স্থায়ীভাবে থাকুক। কুরআনের আয়াত নয় যে চিরন্তন থাকবে। এখন যে সংকট চলছে, তার জন্য কিছু অস্থায়ী নিয়ম দরকার। রাজনীতিতে বিশ্বাস ফিরলে ভবিষ্যতে এসব শিথিল করা যেতে পারে।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, আমরা প্রায় দুই মাস আগেই শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি রূপরেখা জমা দিয়েছিলাম। সেখানে বলা হয়েছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বাছাইয়ের জন্য একটি ৫-৭ সদস্য বা ১১ সদস্যের কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটি সরকারি দল, বিরোধী দল এবং সংসদে তৃতীয় অবস্থানে থাকা দলের কাছ থেকে নাম সংগ্রহ করবে। এরপর অন্যান্য দলের দেওয়া প্রস্তাব মিলিয়ে একটি সম্মিলিত খসড়া প্রণয়ন করেছে কমিশন। আমরা বিচার বিভাগকে এই প্রক্রিয়া থেকে সম্পূর্ণ বাইরে রাখার পক্ষে। তবে কমিটি ৫ বা ৭ জনের হলে আপত্তি নেই। 
একজনের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদে থাকার বিরোধিতা করে এনসিপি নেতা বলেন, একই ব্যক্তি যখন দলের প্রধান, সরকারের প্রধান এবং সংসদের নেতা হন, তখন দলে আর কাউকে নেতৃত্বের সুযোগ দেওয়া হয় না। এমনকি অনেক নেতাকর্মী এমপি হওয়ার স্বপ্নও দেখতে পারেন না, কারণ দলের মনোনয়নও দেন সেই এক ব্যক্তি। এই প্রবণতা বন্ধ না হলে বিকল্প নেতৃত্ব গঠিত হবে না। আমাদের প্রস্তাব, প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা এই তিনটি পদে আলাদা ব্যক্তি থাকা উচিত।

যদি কেউ প্রধানমন্ত্রী হন, তবে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব অন্য কাউকে দিতে হবে। তিনি যুক্তরাজ্যের উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রীরা পরিবর্তন হয় নিয়মিত, বিকল্প তৈরি হয়। কিন্তু আমাদের দেশে বলা হয়, ‘শেখ হাসিনার বিকল্প নেই’, ‘খালেদা জিয়ার বিকল্প নেই’, কিংবা এখন বলা হয়, ‘তারেক রহমান ছাড়া চলবে না’। এ সংস্কৃতি ভাঙতেই আমাদের এই প্রস্তাব। 
ন্যূনতম একটা ভোটের ফ্যাশন তৈরি করা দরকার বলে মন্তব্য করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, দশমিক ৫ কিংবা এক শতাংশও যেসব দল ভোট পায় তাদেরও আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নাম প্রস্তাবে মতামত দেওয়ার জায়গা থাকা দরকার। অনেকের প্রস্তাব করেছে, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বাছাই কমিটি করতে। আমরা বলেছি, বাছাই কমিটি যদি তিন দলের মধ্যেই অর্থাৎ সরকারি দল, প্রধান বিরোধী দল এবং বৃহত্তম তৃতীয় দলের মধ্যে রাখা হয়।

কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার নাম প্রস্তাবের ক্ষেত্রে সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল সব দলই যাতে নাম প্রস্তাব করতে পারে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। শুধু সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলের সদস্য নয় কিংবা সংসদ সদস্য যারা আছেন তারাই নয়। দেখা যায়, একটা দল অনেক ভোট পেতে পারে কিন্তু তাদের কোনো সংসদ সদস্য নেই। এমন দশমিক ৫ অথবা এক শতাংশ ভোট পায় তাদের মতামত দেওয়ার জায়গা রাখতে হবে।

প্যানেল হু

×