
ছবিঃ সংগৃহীত
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ও ঐক্যমত কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, শেখ হাসিনা নির্বাচন করে ক্ষমতায় এলেও পরবর্তীতে তিনি স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দেশের জনগণের রোষে পড়ে বিতাড়িত হয়েছেন এবং দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
শুক্রবার রাজধানীতে সুজনের আয়োজিত এক নাগরিক সংলাপে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা কিন্তু ট্যাংকে চড়ে কিংবা খাকি পোশাক পরে ক্ষমতায় আসেননি। ২০০৮ সালের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতায় আসেন, যদিও সে নির্বাচন নিয়ে কিছু প্রশ্ন ছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর তিনি দীর্ঘ ১৫-১৬ বছরে এক স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলেন।”
তিনি আরও বলেন,একটা স্বৈরাচারী ব্যবস্থা আমাদের দেশে বিরাজমান ছিল। দেশে আগে থেকেই বিদ্যমান কিছু নিয়ম-কানুন, প্রতিষ্ঠান ও আইনকানুনের দুর্বলতা এবং পরবর্তীতে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীসহ নানা আইনি সংস্কারের মাধ্যমে শেখ হাসিনা নিজেকে ‘দানবে’ পরিণত করেন। এর মাধ্যমে তিনি জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেন এবং দেশকে একটি লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে রূপান্তর করেন।
“তিনি দেশে ক্রনিক ক্যাপিটালিজম চালু করেছেন। প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে বিকল করে দিয়েছেন। এসবের ফলে একটি গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে এবং তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন,”— বলেন বদিউল আলম।
বর্তমানে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা এবং দেশজুড়ে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সাধন করা। এজন্য সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে ঐক্যমত কমিশন। বদিউল আলম বলেন, তিনি ঐ কমিশনের একজন সদস্য হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি জানান, কমিশন ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কিছু মৌলিক সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য গঠনের চেষ্টা করছে। সেই আলোচনার ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করে তা মেনে চলতে বাধ্য হয়।
তবে তিনি মনে করিয়ে দেন, সব নাগরিক কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন, কিন্তু তাঁদের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ। “সংবিধান জনগণের মতামতের প্রতিফলন। তাই জনগণের মতামত ছাড়া কোন মৌলিক সংস্কার অর্থবহ হতে পারে না,”— বলেন তিনি।
এই প্রেক্ষাপটে সুজন সারা দেশে ১৫টি এলাকায় নাগরিক সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপে সংবিধান সংশোধন, নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং প্রশাসন ও পুলিশ ব্যবস্থার সংস্কারসহ নানা বিষয়ে জনগণের মতামত নেওয়া হচ্ছে।
বদিউল আলম জানান, এসব সংলাপের ভিত্তিতে সুজন একটি খসড়া জাতীয় সনদ তৈরি করেছে এবং সেটি ঐক্যমত কমিশনের কাছে তুলে ধরা হবে, যাতে কমিশন রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি জনগণের মতামতকেও সমান গুরুত্ব দেয়।
তথ্যসূত্রঃ https://www.facebook.com/share/v/16tQALLmNB/
মারিয়া