
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে একটি প্রশ্ন ঘুরেফিরে সামনে আসে—জামায়াতে ইসলামি কি শরিয়া ভিত্তিক ইসলামী শাসন ব্যবস্থায় বিশ্বাস করে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সম্প্রতি একটি টেলিভিশন টকশোতে সংবিধান ও ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন—"শরিয়া" বলতে আমরা কী বুঝি? এবং তার ধারণা এত বিতর্কিত হয়ে উঠল কেন?
তিনি আরো বলেন, আজকের আন্তর্জাতিক পরিসরে "শরিয়া" শব্দটি অনেকটা ভীতিকর বা নেতিবাচক প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ শরিয়ার কথা বললেই চোখে ভেসে ওঠে: নারীদের ঘর থেকে বের না হওয়ার বিধান, শরীরের কিছু অংশ খোলা থাকলে শাস্তির ভয়, সন্ধ্যার পর নারীদের চলাফেরার নিষেধাজ্ঞা, এমনকি চুল বা মুখাবরণ নিয়ে কঠোর বিধিনিষেধ। এই সংকীর্ণ ও বিচ্ছিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই শরিয়া মানেই যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘শাস্তি’ ও ‘নিয়ন্ত্রণ’-এর আইন।
মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আমরা শরিয়ার এই রূপটাই শুধু দেখি, কিন্তু—আমরা খুব কমই দেখি শরিয়ার আরেকটি দিক, যেখানে আলোচনায় আসে: ইসলামিক ব্যাংকিং সিস্টেম, ট্রান্সপারেন্সি, একাউন্টেবিলিটি, অনেস্টি, ইন্টিগ্রিটি, যাকাতভিত্তিক মানবিক অর্থনীতি, বিভিন্ন মত ও ব্যাখ্যার সহাবস্থান, একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের দর্শন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে শরিয়া আসলে একটি নৈতিক কাঠামো যা সমাজে সুবিচার, স্বচ্ছতা এবং মানবিক আচরণ নিশ্চিত করতে চায়। আমরা কখনোই ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বা প্রাইভেসিতে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। বরং, পাবলিক স্পেসে যদি কেউ আইনি অপরাধ করে, সেটি বিচারযোগ্য—এটিই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি।
ফারুক