ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

একই সময়ে বেড়েছে মজুরি হার

নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি কমে ৮.৮৫ শতাংশ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৫২, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি কমে ৮.৮৫ শতাংশ

গত দুই মাসের মতো নভেম্বর মাসেও মূল্যস্ফীতি আরও কমে এসেছে

গত দুই মাসের মতো নভেম্বর মাসেও মূল্যস্ফীতি আরও কমে এসেছে। গত মাসে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশে। যা অক্টোবর মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। অর্থাৎ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে মূল্যস্ফীতি। একই সময় মজুরি হারও বেড়েছে। পরের মাসে মূল্যস্ফীতি আরও কমে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি।

সোমবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি নভেম্বর মাসে মজুরি হার শতকরা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। ধান, শাক-সবজি, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও বিশ্বব্যাপী তেল-গ্যাসের দাম কমায় সার্বিকভাবে অর্থনীতি আগের অবস্থানে ফিরবে বলে জানান তিনি। কমে আসার সংখ্যাটা ছোট হলেও কমতে থাকার এ প্রবণতা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২৩ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৩১ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭০ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
নভেম্বরে মজুরি হার শতকরা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। কৃষি খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। শিল্প খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। সেবা খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশে, যা আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি কমেছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় আমাদের দেশে অবশ্যই এর প্রভাব পড়বে। বিশ্ববাজারে দাম কমেছে তাই আজ অথবা কাল দেশের বাজারেও দাম কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ৪২২ পণ্যের ওপর মূল্যস্ফীতি যাচাই করা হয়। এখন সেগুলো আবার পুনর্বিবেচনা করা হবে। কেননা এখানে সোনার দামও ধরা হয়েছে। সোনার দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়ে। এছাড়াও মাখন ও কফিসহ এ রকম অনেক পণ্যের দাম ও ধরা হয়। এগুলো সংশোধন করা হবে। মূল্যস্ফীতি হিসেবে ভিত্তি বছরও পরিবর্তন করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে অনেকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের আশা পূরণ হয়নি। মূল্যস্ফীতি কমার কৃতিত্ব সরকারের উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরকার এটি কমিয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো কোনো পণ্যের কর ছাড় দেওয়া এবং টিসিবিরি মাধ্যমে পণ্য বিক্রির কারণে মূল্যস্ফীতি কমেছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক, মানবিক ও রাজনৈতিক কারণে নিম্নবিত্তের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।

×