ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সীম্যান্স হোস্টেল কমপ্লেক্সে থাকবে লাইব্রেরি, জিম ও মেডিক্যাল সুবিধা

নাবিকদের জন্য বিশ্বমানের আবাসন হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৪৩, ১ অক্টোবর ২০২২

নাবিকদের জন্য বিশ্বমানের আবাসন হচ্ছে

নাবিকদের জন্য বিশ্বমানের আবাসন হচ্ছে

দেশে শিল্পায়নের বিস্তৃতি বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে বন্দরে বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্যবাহী জাহাজের ভিড়। ভারি শিল্পের প্রয়োজনে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে কয়েকগুণ। আর তাই উন্নত দেশে থেকে আসা এসব জাহাজের দেশী-বিদেশী নাবিকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের আবাসনের ব্যবস্থাও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সীম্যান্স হোস্টেল কমপ্লেক্স নির্মাণের নতুন একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি নেয়া হয়। চট্টগ্রাম শহরের সল্টগোলা এলাকায় ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদফতর। প্রকল্পটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে আগত বিদেশী নাবিকদের সাময়িক আবাসন ও বিনোদনের সুবিধা প্রদান করা হবে।
এতে লাইব্রেরি, ক্যাফে, জিমনেশিয়াম ও এমিউজমেন্ট কর্নারসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা যুক্ত করা হবে। আর এ নতুন আবাসিক ভবন নির্মাণে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম ও শ্রম সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করা হবে। ফলে বিশ্বের দরবারে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হওয়ার আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রায় ২০০ দেশী-বিদেশী নাবিকের আবাসন নিশ্চিত হবে। যেখানে প্রতিদিন গড়ে ১২০ জন নাবিক বিশ্বমানের পরিবেশে সময় কাটাতে পারবেন। এমনকি প্রতিদিন ৩০ জন মেডিক্যাল সুবিধাও নিতে পারবেন।
প্রকল্পটি গ্রহণের যৌক্তিকতার বিষয়ে বলা হয়, এর আগে একটি কোয়ার্টারকে ড্রপ সেন্টারে রূপান্তর করা হয়েছিল। তবে এখন সেটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ফলে নতুন করে চার তলা একটি হোস্টেল কমপ্লেক্স নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়। তবে প্রকল্পের জমি নিয়ে প্রথমে কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। হোস্টেল নির্মাণের ৭ একর জায়গা পরিদফতরের হলেও সেখানে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট নির্মিত হয়েছে। তাই মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুটি প্রতিষ্ঠানের সহাবস্থানের নির্দেশনা দেয়া হয়। পরে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়।
প্রকল্পটির আওতায় ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ হাজার বর্গমিটারের একটি আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। ১ হাজার ঘন মিটারের ভূমি উন্নয়ন ও মাস্টারড্রেন তৈরি করা হবে। তাছাড়া বিদ্যুত, আসবাবপত্র, জিমনেশিয়ামের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হবে।
এ বছরের মে মাসে প্রকল্পটি নিয়ে মূল্যায়ন কমিটির সভা আয়োজন করে পরিকল্পনা কমিশন। যেখানে প্রকল্পটির মেয়াদ ২ বছর নির্ধারণ করে দেয়া হয়। অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা আগের ভবনের স্থানে না করে নতুন স্থানে কেন ভবন নির্মাণ করা হবে তা জানতে চায় কমিশন। পরে বাস্তবায়নকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জবাবে বলা হয়, মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের নিজস্ব জায়গা না থাকায় তারা এখানে ভবন তৈরি করছে। পরে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অলোকেই নতুন স্থানে ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যার জন্য ইতোমধ্যে প্রশাসনিক অনুমোদন নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করে পরিকল্পনা কমিশন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নিজেদের ব্যবহারের জন্য জাহাজ নির্মাণের পাশাপাশি এখন জাহাজ রফতানিও করছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুটে এখন দেশের পতাকাবাহী বেশ কিছু জাহাজ চলাচল করছে। তাই বৈদেশিক মুদ্রা আয়কারী এ খাতের সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আবাসনের পাশাপাশি বেশকিছু উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।

×