সৌরজগতের লাল গ্রহ নামে পরিচিত
সৌরজগতের লাল গ্রহ নামে পরিচিত মঙ্গলের সঙ্গে পৃথিবীর সাদৃশ্যই এ আগ্রহের মূল কারণ। ২০৩০ সালে মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেই গ্রহটিতে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্যও রয়েছে নাসার। মঙ্গলে মানুষের পদচিহ্ন পড়তে আরও আট বছর বাকি, কিন্তু তাই বলে মানবসৃষ্ট কারণে মঙ্গলের পরিবেশ দূষণ থেমে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স বিভাগের পোস্ট ডক্টরাল গবেষক ক্যাগরি কিলিক বলেছেন, মঙ্গল গ্রহে বতর্মানে মানবসৃষ্ট আবর্জনা জমেছে ৭ হাজার ১১৮ কেজিরও বেশি।
গত ৫০ বছরে মঙ্গল-অভিযানের অংশ হিসেবে পাঠানো বিভিন্ন নভোযান থেকেই উৎপত্তি এসব আবর্জনার। জাতিসংঘের আউটার স্পেস এ্যাফেয়ার্স কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫০ বছরে মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশে মোট ১৪টি ভিন্ন ভিন্ন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এসব অভিযানে পাঠানো নভোযানের সংখ্যা মোট ১৮টি। ২০২২ সালের আগস্টের মাঝামাঝি নাসা ঘোষণা করে, মঙ্গল গ্রহে তাদের পাঠানো পর্যবেক্ষক রোবট পারসিভিয়ারেন্স মার্স রোভার গ্রহটিতে একটি বড় আকারের বাতিল জঞ্জাল খুঁজে পেয়েছে। নাসার ঘোষণায় আরও বলা হয় কেবল এই জঞ্জালই নয় মঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় আরও যথেষ্ট পরিমাণে নভোযানের ধ্বংসাবশেষ ও আবর্জনা দেখতে পেয়েছে প্রিজার্ভেন্স মার্স রোভার।
ক্যাগরি কিলিক বলেন, মঙ্গলে মানবসৃষ্ট আবর্জনা জমছে মূলত বাতিল হার্ডওয়্যার এবং নিষ্ক্রিয় বা ধ্বংসপ্রাপ্ত নভোযানের কারণে। মঙ্গলের পৃষ্ঠে এ পর্যন্ত যত নভোযান নেমেছে, সেসবের সুরক্ষার জন্য সেসবের প্রতিটির সঙ্গে বিশেষ একপ্রকার মডিউল সংযুক্ত ছিল। অবতরণ সহজ ও নিরাপদ করতে প্রতিটি নভোযানেই হিট শিল্ড ও প্যারাসুটও ছিল। মঙ্গলে নামার পর এসব মডিউল, হিট শিল্ড ও প্যারাসুট আর কোন কাজে আসে না। সেখানেই পড়ে থাকে সেসব।
এ ছাড়া এ পর্যন্ত যত নভোযান পাঠানো হয়েছে মঙ্গলে, সেসবের মধ্যে অন্তত দুটি গ্রহে নামার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয়েছে উল্লেখ করে কিলিক বলেন, যেসব আবর্জনা ইতোমধ্যে গ্রহটিতে জমেছে, সেসবের কারণে আগামী অভিযানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তা ছাড়া বর্তমানে নাসার যে পারসিভিয়ারেন্স রোবটটিকে বর্তমান মঙ্গল অভিযানে পাঠানো হয়েছে, গতিপথে আবর্জনার সঙ্গে ধাক্কা লাগলে সেটিরও ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। -এনডিটিভি