মামা ও ভাগ্নে
এবারের কোরবানির ঈদে চারটি বিশাল গরুর নাম রাখা হয়েছে মামা ও ভাগ্নে। দুইটি মামা ও দুইটি ভাগ্নে। জেলা সদরের বাজিতপাড়া গ্রামের একটি খামারে স¤পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করে কোরবানির উপযুক্ত করে তোলা হয়েছে। গরু চারটি ফ্রিজিয়ান জাতের। এই গরু চারটি জেলার সবচেয়ে বড় গরু বলে জানা গেছে। স¤পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে খড়, তাজা ঘাস, খৈল ও ভুসি খাইয়ে কোন ধরনের ক্ষতিকর ট্যাবলেট ও ইঞ্জেকশন ছাড়াই গরু চারটিকে লালন-পালন করা হয়েছে। মামা গরু দুটির ওজন প্রায় ৩৫ থেকে ৩৭ মণ এবং ভাগ্নে গরু দুটির ওজন ২০ থেকে ২৫ মণ। মামা গরু দুটির দৈর্ঘ্য ১০ ফুট ও প্রস্থ ৬ ফুট এবং ভাগ্নে দুটির দৈর্ঘ্য সাড়ে ৮ ফুট ও প্রস্থ সাড়ে ৫ ফুট।
শনিবার খামারি মোস্তফা কামাল জানান, প্রায় ৭ বছর আগে একটি হোলেস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু দিয়ে খামার শুরু করেন। সেই একটি গরু থেকে ২২টি গরু পেয়েছেন। এর মধ্যে ৫টা বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ১৭টি গরু। এবারের কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে ৪টি গরু প্রস্তুত করেছেন তিনি। এর মধ্যে দুটি মামা আর দুটি ভাগ্নে। তিনি বড় গরু দুটির একটির দাম চাচ্ছেন সাড়ে ১৩ লাখ ও আরেকটার সাড়ে ১২ লাখ। আর ছোট দুইটার দাম চাচ্ছেন সাড়ে ৩ লাখ এবং সাড়ে ৪ লাখ টাকা। গরু চারটির মোট দাম ৩৪ লাখ চাচ্ছে মালিক। গরু চারটি দেখতে ও দাম করতে বিভিন্ন এলাকার মানুষজন খামারে ভিড় করছেন।
‘বাদশা’র ওজন ৩৯ মণ, দাম ১০ লাখ ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা নাটোর থেকে জানান, সিংড়া উপজেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ‘বাদশা’কে। মালিক মসলেম শেখ আড়াই বছর আগে বাদশাকে ক্রয় করেন। কোরবানির হাটে তোলার জন্য দেশীয় পদ্ধতিতে বাদশাকে লালন পালন করা হয়েছে। ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটির বর্তমান ওজন ৩৯ মণ। মালিক মসলেম শেখ বাদশার দাম হেঁকেছেন ১০ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত সিংড়ায় বাদশাই সবচেয়ে বড় গরু। ইতোমধ্যে এই গরুটি এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। মসলেম শেখ সিংড়া উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের আগপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বাদশার মালিক খামারি মসলেম শেখ জানান, ‘বাদশা’ ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গরু। ভালবেসে তার নাম রাখেন ‘বাদশা’। বর্তমান ওজন ৩৯ মণ। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ী বাদশার দাম বলেছেন ৯ লাখ টাকা। তবে ১০ লাখ টাকায় বাদশাকে বিক্রি করে দেবেন বলে জানান তিনি।
কিং অব কুড়িগ্রামকে দেখতে ভিড় ॥ স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কোরবানির হাটে ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’ গরুটির দাম উঠেছে প্রায় ১০ লাখ টাকা। এ অঞ্চলে গরুর হাটগুলোতে এখনও বড় পাইকার ও ক্রেতা নামেনি। রাজারহাট উপজেলার চাকিরপাশা ইউনিয়নের পাঠান পাড়া গ্রামের ছোট খামারি পারুল বেগমের এই গরু। সাড়ে তিন বছর বয়সী ১ হাজার কেজি ওজনের গরুটিকে দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ আসে। জানা গেছে, পাঠান পাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর স্ত্রী পারুল বেগম তিনটি গরু দিয়ে তার খামার শুরু করে। সময়ের ব্যবধানে খামারে গরু বাড়তে থাকে। খামার দেয়ার ২ বছর পর থেকে প্রতিবছর একটি করে গরু বিক্রি করেন। বর্তমানে দুটি ষাঁড়, ৩টি বকনা বাছুর ও ৩টি গাভীসহ তার খামারে রয়েছে মোট ৮টি গরু। প্রায় সাড়ে ৩ বছর পূর্বে একটি হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী থেকে জন্ম নেয় একটি বাছুর। ক্রমাগতভাবে বাছুরটি বাড়তে থাকে। বর্তমানে বাছুরটি একটি বিশাল ষাঁড়ে পরিণত হয়েছে। পারুল বেগম শখ করে গরুটির নাম রেখেছে ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’ বা ‘কুড়িগ্রামের রাজা’।
বিগবস ও রাজাবাবু নজর কাড়ছে ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা থেকে জানান, কোরবানির বাজারে বিগবস ও রাজাবাবু নামে বিরাট দুটি ষাঁড় সকলের নজর কেড়েছে। মাগুরার শালিখার বড় আমিয়ান গ্রামের মহন ম-লের বাড়িতে লালন-পালন করে বড় দুটি ষাঁড় কোরবানির উপযোগী করা হয়েছে। বিগবসের ওজন ৩২ মণ ও রাজাবাবুর ওজন ২৫ মণ। ষাঁড় দুটির দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। মালিক মহন ম-ল জানান, দেশীয় খাবার দিয়ে ষাঁড় দুটি লালন-পালন করেছেন। ষাঁড় দুটি দেখতে অনেকে মহন ম-লেল বাড়িতে আসছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার মোট গবাদি পশুর খামার রয়েছে ৪ হাজার ৯৪৫টি। এসব খামারে ৩১ হাজার ৯৯৭টি গবাদি পশু লালন পালন করা হয়েছে। জেলায় মোট কোরবানি পশুর চাহিদা ২৯ হাজার ৪০৫টি। ফলে উদ্বৃত্ত থাকবে ২৫৯২টি গবাদি পশু।
৩২ মণ ওজনের ‘অগ্নি’র দাম ১৫ লাখ ॥ সংবাদদাতা বাগেরহাটের শরণখোলা থেকে জানান, এ বছর বাগেরহাটের সেরা কোরবানির ষাঁড়ের ঠিকানা পাওয়া গেল শরণখোলা উপজেলার রাজেশ্বর গ্রামে। বত্রিশ মণ ওজনের অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘অগ্নি’। দাম হাঁকা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। এর আগে কখনও এত বড় ষাঁড়ের দেখা পায়নি শরণখোলার মানুষ। তাই কাছের ও দূরের অনেক উৎসুক মানুষ প্রতিদিন গরুটি দেখতে ভিড় করছেন। অনেকে কেনার জন্য দরদামও করছেন। এখন পর্যন্ত ষাঁড়টির মূল্য উঠেছে ১০ লাখ টাকা। খামার মালিক হায়দার আলী জানান, তার খামারে এ বছর মোট ১৫টি গরু রয়েছে। তার মধ্যে অগ্নিই তার সেরা ষাঁড়। বয়স তার মাত্র দুই বছর। এটি পুষতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। ১২ লাখ টাকা দাম পেলেই তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করবেন বলে জানান।