
ট্রাইব্যুনাল
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আরও একটি রায় ট্রাইব্যুনাল থেকে আসল। এটি ছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৪৭তম রায়। হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে হবিগঞ্জের লাখাইয়ের পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলায় এক রাজাকারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ-, তিন রাজাকারকে আমৃত্যু কারাদ- ও একজন খালাস প্রদান করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মোঃ আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
মৃত্যুদ- প্রদান করা হয়েছে লাখাই উপজেলার রাজাকার মাওলানা শফি উদ্দিনকে। আমৃত্যু করাদ- তিন রাজাকার হলো- মোঃ তাজুল ইসলাম (৮০), মোঃ জাহেদ মিয়া (৬২) ও ছালেক মিয়া। মাওলানা শফি উদ্দিন ও সাব্বির আহমেদ এখনও পলাতক। সাব্বির আহমেদকে (পলাতক) খালাস দেয়া হয়েছে। এই নিয়ে ৪৭টি মামলায় এই ৪৬টি মামলায় মামলায় মোট ১৩০ জন আসামির মধ্যে ১১৭ জন রাজাকারকে বিভিন্ন মেয়াদে দ- প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যুদ- প্রদান করা হয়েছে ৮১ জনকে। যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান করা হয়েছে ৪ জন। আমৃত্যু কারাদ- ২৫ জন। এর মধ্যে আটক আছে ৫৫ জন আর পলাতক আছে ৫৮ জন। আর খালাস দেয়া হয়েছে দুই জনকে।
কারাগারে থাকা তিন আসামিকে বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা আসামিদের বিরুদ্ধে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সোবহান তরফদার, গাজী এম এইচ তামিম ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা জনকণ্ঠকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় লাখাইয়ে হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়। চার আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। একজনকে মৃত্যুদ- ও তিনজনকে আমৃত্যু কারাদ- দেয়া হয়েছে। বয়স বিবেচনায় সাব্বির আহমেদকে খালাস দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন তথ্য প্রমাণে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ আসামির বয়স ছিল ১৪।
গত ২৮ জুন ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করে আদেশ দেন। হবিগঞ্জের লাখাইয়ের পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২১ মার্চ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। মামলায় ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। তদন্ত শেষে মামলায় মোট ২১ জনকে সাক্ষী করা হয়।