ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রজন্মের দায় মোচন

সেলিনা হোসেন

প্রকাশিত: ২২:১৯, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

প্রজন্মের দায় মোচন

প্রজন্মের দায় মোচন

আয়ু পেয়ে ছিলেন মাত্র ৫৪ বছর। এই অল্প সময়ে সফলতার চূড়া স্পর্শ করেছিলেন আহসান উল্লাহ মাস্টার। তার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো মানুষের হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা। গ্রাম থেকে উঠে আসা একজন স্কুল শিক্ষক  জাতীয় রাজনীতির এক অনিবার্য ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন কেবল মেধা, দক্ষতা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে। রাজনীতির সমস্ত গুণাবলিই ছিল তার মধ্যে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ¯েœহ পেয়েছিলেন যৌবনেই। সে অর্থে পরম সৌভাগ্যবান ছিলেন ।

পরবর্তী সময় তারই কন্যা বাংলাদেশের মানুষের ভরসাস্থল শেখ হাসিনার কর্মী হয়েও কাজ করেছেন রাজনীতির মাঠে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আহসান উল্লাহ মাস্টার কতটা জনপ্রিয় ছিলেন, সেটার প্রমাণ মানুষ পেয়েছে ঘাতকের হাতে তিনি নির্মমভাবে খুন হওয়ার পর। আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যার প্রতিবাদে তখন গর্জে ওঠে বাংলাদেশ। রাস্তা ঘাট বন্ধ হয়ে যায়।
নতুন প্রজন্মের কাছে রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও  শ্রমিক নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারকে উদ্ভাসিত করা উচিত ছিল অনেক আগেই। দেরিতে হলেও তার যাপিত জীবন ও জীবন দর্শন এ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ও কথাসাহিত্যিক ইজাজ আহ্মেদ মিলন। ‘আহসান উল্লাহ মাস্টার: জীবনালেখ্য’ নিঃসন্দেহে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বইটি পড়ে মনে হয়েছে, এটা শুধু আহসান উল্লাহ মাস্টারের জীবনালেখ্য নয়, এটা আমাদের ভূখ-ের তথা বাংলাদেশেরই জীবনালেখ্য।

লেখক বইটি রচনার ক্ষেত্রে বেশ মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। আহসান উল্লাহ মাস্টারের পূর্ব পুরুষ থেকে শুরু করে তার জন্ম, বেড়ে ওঠা, শৈশব, কৈশোর, বাংলাদেশের প্রতিটা আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণ, স্কুল শিক্ষক থেকে জাতীয় নেতায় পরিণত হওয়া, নির্মমভাবে হত্যা ও হত্যার বিচার খুব যত্ম করে লেখক লিপিবদ্ধ করেছেন। লেখা পড়ে মনে হয়েছে, কাজটি বেশ কষ্টসাধ্য ছিল।

আহসান উল্লাহ মাস্টারের জীবনীগ্রন্থ রচনা করে ইজাজ আহ্মেদ মিলন প্রজন্মের দায় মোচন করেছেন। গত ৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। ইয়াসিন কবির জয়ের তোলা মূল ছবির পোর্ট্রেট এঁকেছেন রাসেল কান্তি দাশ।

×