প্রসূতির
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে মাতৃসেবা প্রাইভেট ক্লিনিকে সরকারী রেজিস্ট্র্রারকৃত ডাক্তার ছাড়া ডেলিভারি করাতে গিয়ে নাছিমা বেগম নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত ১টার দিকে ওই ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
পারিবারিক সূত্রে যানা য়ায়, উপজেলার আটঘর নিবাসী মোঃ মহিদুল হাওলাদারের স্ত্রী নাসিমা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে তার স্বামী এবং তার জা হোসনে আরা বেগম দ্রুত ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালের সামনে আসলে মাতৃসেবা ক্লিনিকের স্টাফরা তাদের ক্লিনেকে চিকিৎসা করানোর জন্য জোর করেন এবং ভাল ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা হয় বলে তাদের আশ^স্ত করেন। রোগীর জা হোসনে আরা বেগম দেখেন ক্লিনিকে কোন ডাক্তার নেই আছে শুধু ক্লিনিকের প্রধান ডাক্তার আব্দুল মতিন সরদারের সহকারী ডিএমএফ প্যারামেডিক্যাল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রাজীব রায় ও তার সহযোগী ঝর্ণা আক্তার।
সেখানে জোর করে রাজীব রায় ও ঝর্ণা আক্তার তাদের রোগীকে ভর্তি করান এবং গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করেন। রোগীর যখন বেশি ব্যথা শুরু হয় তখন ব্যথানাশক ইঞ্জেকশন দেয় এবং শরীরে স্যালাইন পুশ করেন। এ সময় রোগী পানির পিপাসার কথা বললে রোগীকে হোমিওপ্যাথিক বোতলের মতো বোতলে কি যেন ওষুধ মুখে দেয় যাতে পরে মুখের এক অংশ কালো হয়ে যায়। পানির মতো ওষুধ খাওয়ানোর আগ মুহূর্তে রোগী কথা বলছিল। কিন্তু পরে কথা বন্ধ হয়ে যায় এবং শ্বাস রুদ্ধ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। পরে রাজীব রায় এ্যাম্বুলেন্স ডেকে লাশটি পিরোজপুরে পাঠিয়ে দেয়। তারা পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন এখন লাশ নিয়ে আসছেন কেন উনি তো অনেকক্ষণ আগেই মারা গেছেন। এই বিষয়ে অভিযুক্ত মাতৃসেবা ক্লিনিকের রাজীব রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমাদের এখানে রোগী রাত ১২টার দিকে নিয়ে আসা এবং রোগীর নিকটাত্মীয়রা আমাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। পরে আমি দেখতে পাই রোগীর খুব খারাপ অবস্থা। আমরা তখন রোগীকে হার্টসম্যান সেলাইন পুশ করি। জানতে পারি রোগী এক সপ্তাহ আগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। যার ফলে রোগী রক্তস্বল্পতায় ভুগতে ছিলেন। আমরা রোগীর রক্ত লাগার ব্যাপারে তার আক্রান্ত পরিবারকে জানাই। পরে ৩০ মিনিটের মতো রেখে আমি ডাঃ মতিন স্যারের সঙ্গে কথা বললে তিনি রোগীকে পিরোজপুর পাঠিয়ে দিতে বলার পরে সেখানে পাঠিয়ে দেই। মাতৃসেবা ক্লিনিকের পরিচালক ডাঃ মতিন সরদার বলেন, রোগীর বিষয়ে আমাকে পরে জানানো হয়েছে। আমাকে জানানোর পর আমি পিরোজপুর দেশ ক্লিনিকে নিয়ে যেতে বলি।
ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এনামুল হক জানান, এ ঘটনার বিষয়ে আমরা এখনও কোন অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।