
ছবি: সংগৃহীত।
ছাত্রজীবনে রাতে ঘুম না হওয়া এখন এক সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের বহু শিক্ষার্থী ঘুমের ঘাটতির সমস্যায় ভুগছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত জীবনযাপন এবং প্রযুক্তিনির্ভরতা এই সমস্যার মূল কারণ।
মানসিক চাপেই বিপর্যস্ত ঘুম:
পরীক্ষার চাপ, ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা, পারিবারিক প্রত্যাশা—সবকিছু মিলে বর্তমান প্রজন্মের মস্তিষ্ক সারাক্ষণ উত্তেজিত থাকে। ফলে তারা ঘুমোতে গেলেও ঘুম আসতে চায় না।
স্ক্রিনটাইম বড় দায়:
মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ট্যাব ব্যবহারের সময় বাড়তে থাকায় শিক্ষার্থীদের ঘুমের স্বাভাবিক চক্র নষ্ট হচ্ছে। রাত ১০টার পরও অনেক শিক্ষার্থী ইউটিউব, ফেসবুক বা গেমে ব্যস্ত থাকেন।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ইলেকট্রনিক স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো (blue light) মস্তিষ্কের ঘুমের হরমোন "মেলাটোনিন" নিঃসরণ ব্যাহত করে। ফলে ঘুম দেরিতে আসে কিংবা ভাঙা ঘুম হয়।
অতিরিক্ত কফি ও অনিয়মিত রুটিন:
রাত জেগে পড়ার জন্য অনেক শিক্ষার্থী চা বা কফি খেয়ে থাকেন, যা শরীরের স্বাভাবিক ঘুমের প্রবণতাকে দমন করে। এছাড়াও অনিয়মিত ঘুমের সময়সূচি, কোনো নির্দিষ্ট রুটিন না থাকা, ও শারীরিক পরিশ্রমের অভাবও ঘুমহীনতার কারণ।
চিকিৎসকদের পরামর্শ: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়া, ঘুমানোর আগে স্ক্রিন ব্যবহার কমানো, ধ্রুপদী সংগীত, ধ্যান কিংবা বই পড়ার মাধ্যমে ঘুমের প্রস্তুতি নেওয়া, চা-কফি এড়িয়ে চলা এবং হালকা ডিনার গ্রহণ, দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ।
শিক্ষার্থীদের ঘুমের সমস্যা এখন আর ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এটি একটি জনস্বাস্থ্য সংকটের রূপ নিচ্ছে। মানসিক চাপ ও ডিজিটাল আসক্তি থেকে মুক্তির পথেই সুস্থ ঘুম ও সুস্থ জীবন সম্ভব।
ঘুমের সমস্যা যদি এক মাসের বেশি স্থায়ী হয়, তবে আত্মোপলব্ধির পাশাপাশি চিকিৎসা নেওয়াও জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।
মিরাজ খান