
গরুর মাংস খাওয়া হার্টের রোগীদের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই একটি আলোচনার বিষয়। অনেক রোগী ও তাদের স্বজনদের মনে প্রশ্ন থাকে—গরুর মাংস খেলে কি হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়? হার্টের চিকিৎসকদের অভিমত হলো, গরুর মাংসে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট (পরিপুষ্ট চর্বি) রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা বাড়াতে পারে, যা হার্টে ব্লক বা রক্তনালিতে জমাট বাঁধার আশঙ্কা সৃষ্টি করে। এ কারণে বেশিরভাগ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন।
তবে গরুর মাংস শুধুমাত্র ক্ষতিকর নয়—এতে আছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক, ভিটামিন বি১২সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান, যা দেহের জন্য দরকারি। এসব উপাদানের অভাব হলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন রক্তশূন্যতা বা দুর্বলতা।
এই বাস্তবতা মাথায় রেখে চিকিৎসকেরা বলেন, হৃদরোগীরা সম্পূর্ণভাবে গরুর মাংস ত্যাগ না করে বরং সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে খেতে পারেন কিছু নির্দিষ্ট শর্তে:
-
লিন বিফ বা চর্বিহীন মাংস বেছে নিতে হবে, অর্থাৎ যেখানে চর্বির পরিমাণ একদমই কম।
-
সপ্তাহে একদিনের বেশি নয়—এই সীমা মেনে চলা ভালো।
-
ঝোল বা ফ্যাটযুক্ত অংশ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র মাংসের টুকরো খাওয়া উচিত।
-
যাদের কোলেস্টেরল অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে গেছে বা হার্টে ব্লকের ঝুঁকি বেশি, তাদের ক্ষেত্রে গরুর মাংস পুরোপুরি এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
পরিশেষে, প্রতিটি রোগীর স্বাস্থ্য অবস্থা ভিন্ন। তাই গরুর মাংস খাওয়া যাবে কিনা তা একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করাই সর্বোত্তম। খাদ্যতালিকা সাজাতে হলে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পুষ্টির চাহিদা—দুই দিকই বিবেচনায় নিতে হবে।
সানজানা