
ছবি: সংগৃহীত
আমাদের শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশই পানি দিয়ে গঠিত। পানি শুধু তৃষ্ণা মেটানোর উপাদান নয়, এটি শরীরের সমস্ত কার্যক্রম চালাতে অপরিহার্য। অথচ অনেকেই প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা পূরণ না করেই দিনের পর দিন পার করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে অন্তত ৬–৮ গ্লাস পানি না খেলে শরীরে একাধিক জটিল রোগ ধীরে ধীরে বাসা বাঁধতে পারে।
ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা:
কম পানি খাওয়ার সবচেয়ে তাৎক্ষণিক প্রভাব হলো ডিহাইড্রেশন। এর ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, মনোযোগে ঘাটতি এবং মাথাব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
কিডনি সমস্যা:
কিডনি শরীর থেকে টক্সিন ও বর্জ্য বের করে দেয়। পানি না পেলে এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। দীর্ঘদিন পানির ঘাটতিতে কিডনিতে পাথর জমা হতে পারে, এমনকি কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকিও তৈরি হয়।
হজমের গণ্ডগোল:
যারা দিনে ৬ গ্লাসেরও কম পানি খান, তাদের হজমশক্তি দুর্বল হতে শুরু করে। কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিক, এমনকি আলসার পর্যন্ত হতে পারে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা হারায়:
পানি ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখে। কম পানি খেলে ত্বক শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। বলিরেখাও দেখা দিতে পারে অল্প বয়সেই।
ইউরিন ইনফেকশন ও মূত্রতন্ত্রের জটিলতা:
শরীরে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে প্রস্রাবের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া বের হতে পারে না। এতে মূত্র tract infection (UTI)-এর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
হৃদযন্ত্রের উপর চাপ:
কম পানি রক্ত ঘন করে ফেলে, ফলে হৃৎপিণ্ডকে স্বাভাবিকভাবে রক্ত সরবরাহ করতে বাড়তি চাপ নিতে হয়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
করণীয় কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস বা ২–৩ লিটার পানি পান করা উচিত। গরমকাল কিংবা শারীরিক পরিশ্রম বেশি হলে এই চাহিদা আরও বাড়ে। পানি খাওয়াকে অভ্যাসে পরিণত করতে চাইলে মোবাইল রিমাইন্ডার ব্যবহার করতে পারেন অথবা ওয়াটার ট্র্যাকিং অ্যাপের সাহায্য নিতে পারেন।
সতর্কতা:
চা, কফি বা সফট ড্রিংক পানি নয়। প্রকৃত বিশুদ্ধ পানি-ই শরীরের জন্য উপকারী। অতএব, জলকে অবহেলা নয়—এই বার্তাটিই হোক প্রতিদিনের অঙ্গীকার।
আসিফ