
ছবি: প্রতীকী
সকালের প্রথম কয়েক ঘণ্টা কীভাবে কাটানো হচ্ছে, তার প্রভাব পড়ে সারা দিনের উপর, এমনকি দীর্ঘমেয়াদে হৃদযন্ত্রের সুস্থতার উপরও। বর্তমান বিশ্বে হৃদরোগের হার বেড়ে যাওয়ায়, এখনই সময় হার্টকে প্রাধান্য দেওয়ার। এই ব্যস্ততার যুগে স্ট্রেস এবং অলস জীবনযাত্রার প্রভাব কমাতে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার গুরুত্ব বাড়ছে।
হার্ট সুস্থ রাখতে একজন বিশেষজ্ঞ কার্ডিওলজিস্ট কী করেন, তা জানিয়েছেন ভারতের হার্ট অ্যান্ড ভাসকুলার সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং স্ট্রাকচারাল ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. অঙ্কুর উলহাস ফাতারপেকার।
হার্টকে সুস্থ রাখতে যে ৬টি সকালের অভ্যাস অনুসরণ করেন তিনি:
১. দিনের শুরুতে পানি পান
‘আমি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই পানি খেয়ে শরীরকে আর্দ্র করি। এই অভ্যাসটি ছোট মনে হলেও অনেকেই এটিকে অবহেলা করেন। পানি আমাদের রক্তের বড় একটি অংশ তৈরি করে এবং রক্তের মাধ্যমে শরীরে পুষ্টি ও অক্সিজেন পৌঁছায়। তাই দিনের শুরুতেই পানি পান অত্যন্ত জরুরি।’
২. পুষ্টিকর নাস্তা
‘সকালের খাবারে আমি প্রোটিনসমৃদ্ধ বা কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার রাখি। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ছোট ছোট পরিমাণে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করি। ট্রান্স ফ্যাট এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট এড়িয়ে চলি, যেগুলো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে হৃদয়ের ক্ষতি করতে পারে।’
৩. মানসিক প্রশান্তির চর্চা (মেডিটেশন)
‘স্ট্রেস এবং উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগের বড় কারণ। তাই আমি প্রতিদিন ৫ মিনিটের মেডিটেশন করি। চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাসে মনোযোগ দেওয়া, অথবা কোনো ইতিবাচক শব্দ বা কল্পনা মনে ধরে রাখা—এই ধরনের সহজ চর্চা মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। এখন অনেক অ্যাপ ও পডকাস্টও পাওয়া যায়, যেগুলো মেডিটেশনকে আরও উপভোগ্য করে তোলে।’
৪. রোদে কিছু সময় থাকা
‘অনেকেই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগছেন, যা হৃদরোগের একটি গোপন কারণ। সকালে কয়েক মিনিট রোদে থাকার অভ্যাস মন ভালো রাখে এবং শরীরে ভিটামিন ডি উৎপাদনে সাহায্য করে। আপনি দৌড়াতে না পারলেও, বাগানে একটু হাঁটলেও উপকার পাবেন।’
৫. সকালের কিছু শারীরিক অনুশীলন
‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতি সপ্তাহে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার বা ৭৫ মিনিট উচ্চ মাত্রার শারীরিক কসরতের পরামর্শ দেয়। আমি প্রতিদিন সকালে অন্তত কিছু না কিছু ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি রাখার চেষ্টা করি—যেটা হতে পারে হাঁটা, যোগব্যায়াম, দৌড়ানো বা হালকা ওজন তোলা। এমনকি কয়েক মিনিটের অনুশীলনও হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।’
৬. ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল ব্যবহার এড়ানো
‘আমি ঘুম থেকে উঠে অন্তত ৩০ মিনিট মোবাইল ফোন ব্যবহার করি না। রাতে ঘুমানোর আগেও মোবাইল এড়িয়ে চলি। এটি আমাকে মানসিকভাবে আরও স্থির ও উৎপাদনশীল করে তোলে।’
ডা. ফাতারপেকারের পরামর্শ, ‘এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলো হার্টের জন্য দীর্ঘমেয়াদে অনেক উপকারে আসে। ধীরে ধীরে এসব অভ্যাস তৈরি করুন, কিন্তু আজ থেকেই শুরু করুন।’
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।
রাকিব