
বাংলাদেশে এখন বর্ষাকালে হলেও ভ্যাপসা গরম চলছে। বিশেষ করে বরগুনা, বরিশাল, ঢাকা সহ প্রায় সব জেলাগুলিতে তাপমাত্রা বাড়ছে। এই গরমে ছোট-বড় সবাই হিটস্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন, ঘামাচি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, অ্যাজমা এমনকি ডায়রিয়ার মতো সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। তাই এই ভয়াবহ গরমে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলেই আমরা নিজে ও পরিবারের সদস্যদের অনেকটা সুরক্ষিত রাখতে পারি।
পানি পান করুন নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পরিমাণে
গরমে ঘাম হওয়ার ফলে শরীর থেকে দ্রুত পানি বের হয়ে যায়। তাই দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করুন। লবণ-চিনির শরবত, ডাবের পানি, স্যালাইন ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। ঠান্ডা কোমল পানীয় বা অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলাই ভালো।
বেলা ১১টা থেকে ৪টার মধ্যে রোদে যাওয়া এড়িয়ে চলুন
এই সময়টাতে সূর্যের তাপ সবচেয়ে তীব্র থাকে। যাদের বাধ্য হয়ে বাইরে যেতে হয়, তারা ছাতা ব্যবহার করুন, হালকা সাদা বা হালকা রঙের ঢিলেঢালা কাপড় পরুন এবং সানগ্লাস ও ক্যাপ ব্যবহার করুন।
ঘরের পরিবেশ শীতল রাখুন
ঘর পরিষ্কার ও হাওয়াযুক্ত রাখুন। পর্দা টেনে সূর্যের আলো কম ঢুকতে দিন। প্রয়োজন হলে পানি ছিটিয়ে বা কুলার/ফ্যান চালিয়ে তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় করুন।
হালকা ও পরিপূর্ণ খাবার খান
গরমে ভারী ও তেল-মশলাযুক্ত খাবার খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। তাজা ফলমূল, শাকসবজি, স্যুপ, দুধ, দই ইত্যাদি শরীরে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। রাস্তার খোলা খাবার এড়িয়ে চলুন।
বাচ্চা ও বৃদ্ধদের বিশেষ যত্ন নিন
শিশু ও প্রবীণরা এই গরমে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। নিয়মিত তাদের পানি পান করান, অতিরিক্ত ঘাম হলে জামা পরিবর্তন করান এবং তাদের ঘর শীতল রাখার ব্যবস্থা করুন।
সতর্কতা অবলম্বন করুন হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে
গরমে যদি হঠাৎ মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, ত্বকে লালচে ভাব দেখা যায়—তাহলে হিটস্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে ছায়া বা শীতল স্থানে নিয়ে গিয়ে পানি পান করাতে হবে এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
গরম আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই, কিন্তু সচেতনতা আমাদের হাতে আছে। নিজে সচেতন হই, পরিবার-প্রতিবেশীকেও সচেতন করি—এই গরমে একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়াই। সুস্থ থাকাই এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।
Jahan