ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা জিতছি!

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ১৯ জুলাই ২০২৫

ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা জিতছি!

ছবি:সংগৃহীত

১৯৭১ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ঘোষণা দিয়েছিলেন এক “ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ”। সেই সময় মানুষ চাঁদে পা ফেলেছে মাত্র দু’বছর আগে—বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জয়যাত্রা তখন তুঙ্গে। অনেক চিকিৎসকই আশাবাদী ছিলেন, কয়েক বছরের মধ্যেই ক্যানসারের সম্পূর্ণ চিকিৎসা বের হয়ে যাবে।

কিন্তু বাস্তবতা ছিল অনেক কঠিন। ক্যানসার একক কোনো রোগ নয়—এটি বহু প্রকারের অসুস্থতার একটি ছাতা-শব্দ। তাই যুদ্ধটা কোনও 'ব্লিটজক্রিগ' নয়, বরং ধৈর্য ও অধ্যবসায়ে ভরা এক দীর্ঘমেয়াদি সংগ্রাম।

আজ আমরা সবাই কেউ না কেউ ক্যানসারের ছায়া অনুভব করেছি—নিজে আক্রান্ত হয়েছি, প্রিয়জনকে হারিয়েছি, কিংবা কারো লড়াই প্রত্যক্ষ করেছি।
ধনী দেশগুলিতে প্রতি দুইজন পুরুষের একজন এবং প্রতি তিনজন নারীর একজন জীবনের কোনও না কোনও সময়ে ক্যানসারে আক্রান্ত হন। শুধুমাত্র আমেরিকাতেই প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ মানুষ ক্যানসারে মারা যায়। বিশ্বজুড়ে এই সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ।

তবুও, আমরা জয়ী হচ্ছি—ধীরে ধীরে, কিন্তু নিশ্চয়ভাবেই
এই যুদ্ধের বড় জয় এসেছে ছোট ছোট অগ্রগতির মাধ্যমে—উন্নত স্ক্রিনিং, সার্জারি, ওষুধ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থায়।
এক সময়ের মৃত্যুদণ্ডের মতো ছিল শিশুদের লিউকেমিয়া। আজ তার পাঁচ বছর বেঁচে থাকার হার ৯০%–এরও বেশি।

এই উন্নতির পেছনে আছে বিজ্ঞানের ধারাবাহিক অগ্রগতি, চিকিৎসাশাস্ত্রের বিস্তার এবং সমাজের সম্মিলিত চেষ্টা। একক কোনও "চমকপ্রদ চিকিৎসা" নয়, বরং সহস্র বিজ্ঞানী, ডাক্তার ও গবেষকের দিনের পর দিন লড়াই—তাদের জন্যই আজ এত লক্ষ প্রাণ বেঁচে যাচ্ছে।

আগামী দিন আরও ভালো হতে চলেছে
নতুন ধরনের ওষুধ যেমন ইমিউনোথেরাপি, পার্সোনালাইজড মেডিসিন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে রোগ শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় বিপ্লব এসেছে।
আশা করা হচ্ছে, আগামী দশকগুলোতে ক্যানসারে মৃত্যুহার আরও অনেকটা কমবে।


যদি আমরা ধরে নিই যে ‘সফলতা’র মানে হলো ক্যানসারের সম্পূর্ণ নির্মূল—তবে হয়তো যুদ্ধ এখনও চলছে।
কিন্তু যদি প্রশ্ন করি, "এই যুদ্ধে আমরা কতটা এগিয়ে গেছি?"—তবে উত্তর একটাই: অনেকটাই।
আমরা জিতছি, প্রতিটি জীবনের জন্য এক একটি জয়।

 

মারিয়া

×