চা ছাড়া বাঙালির দিন কাটে না, এবং চায়ের সাথে রয়েছে আমাদের অনেক স্মৃতি, রীতিনীতিও। সকালে চা খেতে বসে পরবর্তী দিনের শক্তি নিয়ে শুরু হয়, আবার রাতের শিথিলতার মধ্যেও চা থাকে এক নিরব সঙ্গী। কিন্তু, চা কি শুধুই একটি পানীয়? না, চা শুধু পানীয় নয়, ব্যবহৃত চা পাতা কিংবা টি ব্যাগও নানা কাজে কাজে লাগানো যেতে পারে। এই চা পাতা পরিবেশবান্ধবও বটে এবং সাশ্রয়ীও। তাহলে জেনে নিন চা পাতার নানা অজানা ব্যবহার।
১. ফ্রিজ ও জুতোর গন্ধ দূর করতে
বাজারে কেনা গন্ধ নিরোধক কেনার প্রয়োজন নেই! ব্যবহৃত শুকনো চা পাতা ছোট কাপড়ে বেঁধে ফ্রিজে কিংবা জুতোর ভিতরে রেখে দিন, আর দেখুন কেমনভাবে এটি দুর্গন্ধ শোষণ করে এবং আপনাকে এক সতেজ পরিবেশ উপহার দেয়। চা পাতার প্রাকৃতিক সুবাস ও ট্যানিন উপাদান দুর্গন্ধ দূর করতে দারুণ কার্যকর।
২. বাসন মাজায় সহায়ক
অন্য এক উপকারিতায়, চা পাতার ট্যানিন উপাদান চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা পাতা স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করে হাঁড়ি-কড়াইয়ের চিটচিটে তেল-ময়লা পরিষ্কার করা যায়। চা পাতার এই বৈশিষ্ট্যটি আপনার রান্নাঘরকে আরও পরিষ্কার ও স্যানিটারি রাখতে সাহায্য করবে।
৩. কাচ ও আয়না পরিষ্কারে
আপনার ঘরের কাচ বা আয়না যদি দাগযুক্ত হয়ে থাকে, তাহলে ট্যানিনের শক্তি ব্যবহার করুন। চা পাতার জল ঠান্ডা করে স্প্রে বোতলে ভরে কাচ বা আয়নায় ছিটিয়ে মুছে নিলে দাগ মুক্ত এবং ঝকঝকে হয়ে ওঠে। এটি কাচ ও আয়না পরিষ্কারের এক দারুণ উপায়।
৪. মশা-মাছি তাড়াতে
মশা ও মাছির উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহৃত চা পাতা শুকিয়ে আগুনে দিন। হালকা ধোঁয়া তৈরি হয়ে প্রাকৃতিক ধূপের মতো কাজ করবে, যা মশা-মাছির উপদ্রব দূর করবে। এতে আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে পরিবেশকে আরও সতেজ রাখতে পারবেন।
৫. গাছের সার হিসেবে
চা পাতা গাছের জন্যও উপকারী। চা পাতা পচনশীল, এবং এতে নাইট্রোজেন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান রয়েছে, যা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। গাছের গোড়ায় মিশিয়ে দিলে এটি একটি প্রাকৃতিক কম্পোস্ট হিসেবে কাজ করে।
৬. কাঠের মেঝে ও আসবাব পরিষ্কারে
চায়ের পানির ব্যবহার করে কাঠের মেঝে বা আসবাব মুছে নিন। এটি দাগ দূর করে এবং কাঠের আসবাব বা মেঝেকে নতুনের মতো চকচকে করে তোলে। তবে অতিরিক্ত ভেজানো উচিত নয়, একটু সতর্ক থাকুন।
এখন থেকে চায়ের ব্যবহৃত পাতা আর ফেলে দেবেন না! এটি শুধু একটি পানীয় নয়, বরং একাধিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে, যা আপনাকে পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী জীবনধারণে সাহায্য করবে।
রাজু
