ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উষ্ণতার খোঁজে

শিউলী আহমেদ

প্রকাশিত: ২২:২৮, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

উষ্ণতার খোঁজে

.

হেমন্ত বিদায়ের পথে। হাঁটি হাঁটি পা পা করে দুয়ারে দাঁড়ায়ে শীত। এখন পাতলা কাঁথায় কাজ হলেও কয়েকদিন পর লেপ-কম্বল লাগবেই। ইতোমধ্যে কারিগররা ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। ক’দিন পর তাদের ব্যস্ততা আরও বেড়ে যাবে। তাই ঝটপট দেখে নিন আপনার ঘরের লেপ-তোষকগুলো ঠিকঠাক এবং পর্যাপ্ত আছে কিনা। সেভাবে তৈরি করে নিন উষ্ণতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় আপনার ঘরের লেপ-তোষক। না হয় শীতে ঠকঠক করে কাঁপতে হবে। এক সময় কাঁধে ধুনকার নিয়ে এলাকায় হাঁক দিয়ে বেড়াত ধুনকেরা-‘বানাইবেন লেপ-তোষক’। এখন খুব বেশি দেখা যায় না তাদের।

আর ধুনক থাকলেও সেই ধুনকার নেই। এখন তুলা ধুনে মেশিনে। ধুনকার দেখতে ছিল ধনুকের মতো। তবে আকারে বেশ বড়। একটা ছোট লাঠির মাথায় গোল বলের মতো থাকতো। সেটা দিয়ে সুতায় বাড়ি দিলে সুন্দর তালে ঝপাং ঝপাং করে সুরেলা শব্দ হতো। মাঝে মাঝে গানের সুরের আড়ির মতো ঝং করে ছন্দ বদল করত। সেই তালে তুলাগুলো ঝুপ ঝুপ করে উড়ত। আর পাতলা হয়ে আরও বেশি নরম হতে থাকত। কি দারুণ লাগত সেই সুর। আর তুলাধুনা দেখতেও খুব ভালো লাগত।
দাম ও পরিমাণ : কথা হলো মগবাজারের নূরাইন বেডিংয়ের রমজান মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানালেন, লেপ-তোষক কার্পাস তুলায় বানানো হয়। এর দাম ২০০ টাকা কেজি। বড় সাইজের একটা লেপ বানাতে ৪ কেজি তুলা আর ১০ গজ কাপড় লাগে। জায়গাভেদে দাম পড়বে ১৫০০-১৭০০ টাকা। লেপের জন্য সাধারণত লাল রঙের কাপড়ই ব্যবহার করা হয়। আর তোষক ও জাজিমে গাঢ় রঙের চেক কাপড়। এসব কাপড়ের গজ ৬০ টাকা। মাঝারি লেপে লাগবে ৩ কেজি তুলা আর সাড়ে ৭ গজ কাপড়। দাম পড়বে জায়গা ভেদে ১২০০-১৪০০ টাকা। তবে মজুরি একই, ৩০০ টাকা। জাজিম তৈরি করতে নারিকেলের ছোবড়া ব্যবহার হয়। ছোবড়ার উপরে-নিচে গার্মেন্টেসের এক ধরনের তুলা থাকে। রামপুরার শারমিন বেডিংয়ের দেলোয়ার জানান, এখন ব্যস্ততা বাড়ছে। তবে শীত এসে পড়লে আরও বাড়বে। তখন দামও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়ে যাবে। জানতে চাইলাম– এখন তো লেপের চাইতে কম্বল, কমফোর্টার বেশি চলছে। তাহলে কি লেপের চাহিদা কমে যাচ্ছে? জবাবে দেলোয়ার জানালেন, লেপের মতো ওম আর আরাম কম্বল বা কমফোর্টারে নেই। ওগুলো অতিরিক্ত হালকা হওয়ায় গা থেকে পড়ে যায়। আর এক ধরনের ফোম দিয়ে তৈরির কারণে এর উষ্ণতা তীব্র। সে তুলনায় লেপের উষ্ণতা আরামদায়ক।

এবং লেপ গায়ে সুন্দরভাবে স্থির হয়ে জড়িয়ে থাকে। তারা দুজনেই বলেন, কার্পাস তুলা দিয়েই লেপ-তোষক বানানো হলেও এর রয়েছে বিভিন্ন ধরন। সেই ধরনের উপর নির্ভর করে দাম কম-বেশি হয়। সে অনুযায়ী ৩৫০০ টাকাও হতে পারে। যত ভালো কোয়ালিটি হবে, দাম তত বাড়বে। পুরনো লেপ নতুন করে তৈরি করতে খরচ পড়বে মজুরি আর কাপড়সহ ৭০০-৯০০ টাকা। আর কমফোর্টার কিনতে চাইলে পাবেন ১৫০০-৩৫০০ টাকার মধ্যে। তবে এই সময়ে বিভিন্ন জায়গায় ছাড়ও থাকে। ছাড়ে পাবেন ১০০০-১২০০ টাকায়।
যেখানে পাবেন : প্রতিটা এলাকায় এখন লেপ-তোষকের দোকান আছে। বৃহত্তরভাবে পাবেন নীলক্ষেত, শাহজাহানপুর, ডেমরা, চকবাজার, গুলিস্তান, আজিমপুর, তালতলা- এসব জায়গায়। তাই দেরি না করে যার যার সুবিধামতো জায়গা থেকে এখনি বানিয়ে নিন শীতের উষ্ণতার জন্য অতি প্রয়োজনীয় এই চমৎকার উপকরণ।

 

×