ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় খাদ্য নেই, ওষুধ নেই, বাঁচার অধিকারও নেই

প্রকাশিত: ০০:৪০, ২১ জুলাই ২০২৫

গাজায় খাদ্য নেই, ওষুধ নেই, বাঁচার অধিকারও নেই

গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বেগ বাড়তেই জাতিসংঘে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে স্লোভেনিয়া। জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে অংশ নেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। তারা জানান, অব্যাহত গণহত্যা, সীমান্ত বন্ধ থাকা, খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রীর প্রবেশে বাধা, এবং মারাত্মক দুর্ভিক্ষের কারণে এই বৈঠক প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

ইসরায়েলের মাসের পর মাসের অবরোধের ফলে গাজার বাসিন্দারা তীব্র খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকটে ভুগছেন। এই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহল তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর একটি প্রস্তাব ঘিরে, যেখানে তিনি গাজার দুই মিলিয়নেরও বেশি বাসিন্দাকে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফার ধ্বংসস্তূপে স্থানান্তরের পরিকল্পনার কথা বলেন। তিনি একে "মানবিক শহর" হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও স্পষ্ট করে দেন, সেখান থেকে ফিলিস্তিনিদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি থাকবে না।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক সদস্য এই প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করে ইসরায়েলকে এমন পথ অনুসরণ না করার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, এই প্রস্তাব জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতির পরিপন্থী এবং গাজার জনসংখ্যাগত বা ভৌগোলিক কাঠামো একতরফাভাবে বদলানোর যে কোনও প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে।

জাতিসংঘ কর্মকর্তারাও এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বলেন, এটি কার্যত একটি ‘ঘনত্বক্যাম্প’ (concentration camp) তৈরির শামিল। তারা আরও বলেন, মানুষকে যদি বলা হয়—তোমাকে বা তো ঘেরের মধ্যে যেতে হবে, অথবা পেছনে থেকে গেলে তোমাকে সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করা হবে—তবে সেটি কোনো সত্যিকারের পছন্দ নয়।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই ধরনের জোরপূর্বক স্থানান্তর বা নির্বাসনের যে কোনও পরিকল্পনা সমর্থন করা থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশকে বিরত থাকতে হবে। নইলে এসব অপরাধে তারা নিজেরাই ইসরায়েলের সঙ্গে সহঅপরাধী হয়ে পড়বে।

অন্যদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, যদি ইসরায়েল অনুমতি দেয়, তাহলে তারা নিরাপদে আরও বেশি খাদ্য সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। এখনো পর্যন্ত খাদ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শুধুমাত্র ইসরায়েলি বাধার কারণে।

মানবিক বিপর্যয়ের এই ভয়াবহ বাস্তবতা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Jahan

×