
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা’র ওপর তার কোনো আস্থা নেই। শনিবার দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমে এ মন্তব্য প্রকাশিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা কাটজ ওয়াশিংটনে মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, “শারা ভবিষ্যতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তথাকথিত ‘জিহাদী গোষ্ঠীগুলো’ ব্যবহার করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা শুধু ঈশ্বর এবং আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী)-এর ওপরই আস্থা রাখি, যারা ইসরায়েল রাষ্ট্রকে রক্ষা করে।”
সিরিয়ার সাবেক ৬১ বছরের বাতিল হওয়া বাথ পার্টি শাসনের নেতাদের উল্লেখ করে কাটজ বলেন, “আমি বাবার (হাফেজ আল-আসাদ) ওপর বিশ্বাস করতাম না, ছেলের (বাশার আল-আসাদ) ওপরও করিনি, আর এখন এমন এক নেতার ওপর তো নয়ই, যিনি সিরিয়ায় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে জিহাদি গোষ্ঠী ব্যবহার করছেন—আজ দ্রুজদের বিরুদ্ধে, আগামীকাল গোলান মালভূমিতে বসবাসকারী ইসরায়েলি বসতিগুলোর ওপরও তা ব্যবহার করতে পারেন।”
উল্লেখ্য, ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সিরিয়ার অঞ্চল গোলান মালভূমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে।
শনিবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্সি এক বিবৃতিতে দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ সুয়েইদায় টানা কয়েকদিনের অস্থিরতার পর এক তাৎক্ষণিক ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়।
গত ১৩ জুলাই থেকে সুয়েইদায় বেদুইন আরব গোষ্ঠী ও সশস্ত্র দ্রুজ বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং এরপর ইসরায়েল সিরিয়ার সামরিক ঘাঁটি ও রাজধানী দামেস্কের অবকাঠামোতে বিমান হামলা চালায়।
ইসরায়েল দাবি করে, তারা দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে রক্ষার জন্যই এই হামলা চালিয়েছে।
তবে সিরিয়ার অধিকাংশ দ্রুজ নেতা প্রকাশ্যে বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং দেশের এককতার প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়ায় বিমান হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং সিরিয়া-ইসরায়েল সীমান্তে ১৯৭৪ সালের ‘ডিসেঙ্গেজমেন্ট এগ্রিমেন্ট’ বাতিল ঘোষণা করে।
প্রায় ২৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর বাশার আল-আসাদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ায় পালিয়ে যান। এর মাধ্যমে ১৯৬৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা বাথ পার্টি শাসনের অবসান ঘটে।
এরপর ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আহমদ আল-শারা'র নেতৃত্বে সিরিয়ায় একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠিত হয়।
ফারুক