
ছবি: সংগৃহীত
২০২৫ সালের ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ আধুনিক যুদ্ধের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি প্রথম বৃহৎ সামরিক সংঘাত যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) যুদ্ধে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করেছে। এই যুদ্ধে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ও সামরিক কৌশল একত্রিত হয়ে গোয়েন্দা, লক্ষ্য নির্ধারণ ও হামলায় এআই-র পরিপক্কতা প্রমাণ করেছে।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বিত বিমান হামলা ছিল কেবল সাধারণ বোমাবর্ষণ নয়, বরং এআই-ভিত্তিক ডিজিটাল যুদ্ধ পরিকল্পনার ফলাফল, যা গতি, পরিধি ও নির্ভুলতায় নতুন মাত্রা এনেছে। এ যুদ্ধ প্রযুক্তির ভূমিকা বদলে দিয়েছে, তাত্ত্বিক সক্ষমতাকে বাস্তব আধিপত্যে পরিণত করেছে।
দূরবর্তী অভিযানগুলোতে যোদ্ধা বিমানগুলোকে কমান্ড সেন্টারের সঙ্গে সারা সময় যোগাযোগ রাখা সম্ভব না হলেও, এজ এআই সিস্টেম নিজে থেকেই তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয়েছে। ইরান ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দিয়ে ইসরায়েলের লক্ষ্যভেদ কঠিন করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু মাত্র ১২ দিনে হাজার হাজার লক্ষ্য ধ্বংস হয়েছে এআই-এর কারণে।
প্রথম ৪৮ ঘণ্টার আক্রমণ ছিল এই সফলতার মূলে। উচ্চগতির একাধিক একযোগে বিমান ও ড্রোন হামলায় এআই-ভিত্তিক নজরদারি তথ্য বিশ্লেষণ করে নির্ভুলভাবে উচ্চ-মূল্যের লক্ষ্যগুলোতে আঘাত হানে। এআই শুধু আক্রমণে সাহায্য করেনি, যুদ্ধক্ষেত্রের ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন, লক্ষ্য পুনঃনির্ধারণ ও হুমকি এড়িয়ে চলাতেও ভূমিকা রেখেছে।
তবে এআই কখনো মানুষের জায়গা নেয়নি। ইসরায়েল ও মিত্ররা “মানব-নিয়ন্ত্রণ” নীতিতে বিশ্বাসী ছিল; সমস্ত প্রাণঘাতী হামলার অনুমোদন ছিল মানুষের হাতে। মানব বিচারবুদ্ধি রক্ষা করাই এ নীতির মূল কথা।
২০২৫ সালের এই যুদ্ধ ছিল এআই-সক্ষম যুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন। এআই এর মাধ্যমে দ্রুত, স্বয়ংক্রিয় ও সমন্বিত সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে এক নতুন যুদ্ধ কৌশল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা ভবিষ্যতের যুদ্ধের দিক নির্দেশ করবে।
এই সফলতায় বিশ্বব্যাপী দেশগুলো তাদের সামরিক কৌশল ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করছে। এআই আজ কেবল সহায়ক নয়, বরং যুদ্ধক্ষেত্রে একটি কৌশলগত শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তথ্য আধিপত্য ও এজে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণই আধুনিক যুদ্ধের মূল চাবিকাঠি।
২০২৫ সালের ইসরায়েল-ইরান সংঘাত প্রমাণ করল, মানব তত্ত্বাবধান ও এআই-র সমন্বয়ে আধুনিক যুদ্ধ হতে পারে দ্রুত, নির্ভুল ও কৌশলগতভাবে গভীর। আগামীর যুদ্ধের মানদণ্ড আজই বদলে গেছে।
আবির