
ছবি: সংগৃহীত।
ভিয়েতনামের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হা লং উপসাগরে আকস্মিক বজ্রঝড়ের কবলে পড়ে একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনায় রোববার চারজন নিখোঁজের সন্ধানে ব্যাপক উদ্ধার অভিযান চলছে। এরই মধ্যে অন্তত ৩৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
শনিবারের এ ঘটনায় শুরুতে মৃতের সংখ্যা ৩৮ বলে জানানো হলেও পরে তা সংশোধন করে ৩৫ জন করা হয়েছে। একইসঙ্গে নৌকায় থাকা যাত্রীদের সংখ্যা ৫৩ থেকে কমিয়ে ৪৯ জন বলা হয়েছে। তবে উদ্ধারকারীরা আশঙ্কা করছেন, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, বর্ডার গার্ড, ডুবুরি ও নৌবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। টাইফুন উইফার কারণে উত্তর ভিয়েতনামে ঝড় আঘাত হানার আগেই তারা স্বল্প দৃশ্যমানতার মধ্যেও তৎপরতা চালাচ্ছেন।
ভিয়েতনাম নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, ডুবে যাওয়া নৌকাটির সব যাত্রীই ভিয়েতনামি, যাদের মধ্যে কয়েকজন শিশু ছিল।
নিহতদের এক স্বজন ট্রান ট্রাং টু (৩৯) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, “আমার ভাই সাঁতার জানত, কিন্তু বলা হচ্ছে—সবকিছু খুব দ্রুত ঘটেছিল।” তার ভাইয়ের বয়স ছিল ৩২ বছর।
ইউনেস্কো স্বীকৃত হা লং উপসাগরের এই দুর্ঘটনাটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ একটিতে পরিণত হয়েছে। হানোই থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই হাজারো চুনাপাথরের দ্বীপে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন।
বজ্রঝড়টি হঠাৎ করেই আকাশ অন্ধকার করে তোলে এবং হানোই শহরে গাছ উপড়ে পড়ে। নই বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, ঝড়ের সময় অন্তত ৯টি ফ্লাইট অন্যত্র পাঠানো হয় এবং ৩টি ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়।
একজন বিমা প্রতিনিধি ডো থি থুয়ি বলেন, “এখানে আমি এর আগে এত বড় দুর্ঘটনা কখনও দেখিনি।”
এর আগে ২০১১ সালে হা লং উপসাগরে আরেকটি ট্যুরিস্ট বোট ডুবে ১২ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে বিদেশি পর্যটকও ছিলেন।
ভিয়েতনাম সরকার জানিয়েছে, এবারের দুর্ঘটনার কারণ ছিল ‘হঠাৎ আসা’ একটি ঝড়। শনিবার দুপুর ২টার দিকে ঝড় শুরু হয়, যার সময় প্রবল বাতাস, বৃষ্টি ও বজ্রপাত হচ্ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা ডো ভ্যান হাই (৪২) বলেন, “আমাকে বলা হয়েছিল যে নৌকায় লাইফ ভেস্ট ছিল, কিন্তু ঘটনাটা এত হঠাৎ ঘটেছে যে ব্যবহার করার সুযোগই হয়নি। আশা করি, নিখোঁজদের দ্রুত খুঁজে পাওয়া যাবে।”
সূত্র: রয়টার্স
মিরাজ খান