
ছবি: সংগৃহীত।
আরব সাগরের মাঝেই এবার নিজেদের সামরিক ঘাঁটি গড়তে চলেছে ভারত। নতুন এই ঘাঁটি গড়ে তোলা হবে দক্ষিণ ভারতের কেরালা উপকূল ঘেঁষা বিত্রা দ্বীপে, যা লাক্ষাদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত। চীন ও মালদ্বীপের ক্রমবর্ধমান সামরিক ও কূটনৈতিক প্রভাব রুখতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা।
সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তাতে জানানো হয়েছে, দ্বীপটিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় এনে সামরিক ও কৌশলগত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে।
লাক্ষাদ্বীপ একটি ক্ষুদ্র দ্বীপপুঞ্জ হলেও এর ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব অসীম। এই দ্বীপপুঞ্জের আশপাশ দিয়েই চলাচল করে বিশ্বের বহু বাণিজ্যিক জাহাজ। বিত্রা দ্বীপ থেকে সহজেই নজরদারি চালানো যায় আরব সাগরের নৌপথে। তাছাড়া, এখান থেকে পাকিস্তানের করাচি শহর মাত্র ১০০০ কিলোমিটার দূরে। ফলে এটি ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য এক কৌশলগত কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মালদ্বীপে চীনের সাম্প্রতিক সামরিক ও অবকাঠামোগত উপস্থিতি ভারতের জন্য এক বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মালদ্বীপের নতুন সরকার চীনের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় ভারতের জন্য দক্ষিণ সাগরে চাপ বাড়ছে। এই অবস্থায় বিত্রা দ্বীপে ঘাঁটি গড়ার মাধ্যমে চীনকে কার্যত চেকমেট দিতে চাইছে দিল্লি।
ভারতের প্রতিরক্ষা নীতির অংশ হিসেবে এটি শুধু চীন-মালদ্বীপ নয়, বরং গোটা ভারত মহাসাগর অঞ্চলে (IOR) আধিপত্য বজায় রাখারও এক কৌশল। লাক্ষাদ্বীপ থেকে শুধু নজরদারি নয়, প্রয়োজন হলে প্রতিরোধমূলক সামরিক অভিযান পরিচালনা করাও সম্ভব হবে।
চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার এই প্রেক্ষাপটে বিত্রা দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি গড়া ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূ-কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটা শুধু নিরাপত্তা নয়, বরং সামুদ্রিক ক্ষমতার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
নুসরাত