
সৌদি আরবের ‘ঘুমন্ত রাজপুত্র’ হিসেবে পরিচিত প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালাল আল সৌদ দীর্ঘ ২০ বছর কোমায় থাকার পর শনিবার, ১৯ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৬ বছর।শনিবার এক্স (সাবেক টুইটার)–এ এক পোস্টে তার বাবা প্রিন্স খালেদ বিন তালাল বিন আবদুলআজিজ সংবাদটি নিশ্চিত করেন।
পোস্টে তিনি পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত উদ্ধৃত করে লেখেন,
“হে প্রশান্ত আত্মা,
তোমার প্রভুর কাছে ফিরে যাও—তিনি তোমায় সন্তুষ্ট এবং তুমি তাঁকে সন্তুষ্ট করেছো।
আমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের দলে প্রবেশ করো,
আমার জান্নাতে প্রবেশ করো।”
তিনি আরও লেখেন, “আল্লাহর ফয়সালা ও তাকদিরে বিশ্বাস রেখে, গভীর দুঃখ ও শোকের সঙ্গে আমরা আমাদের প্রিয় পুত্র প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালাল বিন আবদুলআজিজ আল সৌদের মৃত্যু সংবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ যেন তাকে রহম করুন।”
জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আজ রোববার, ২০ জুলাই।
২০০৫ সালে লন্ডনের একটি সামরিক কলেজে পড়াকালীন সময়ে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন প্রিন্স আল-ওয়ালিদ। এতে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় এবং তিনি কোমায় চলে যান। এরপর থেকে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি রিয়াদের কিং আবদুলআজিজ মেডিকেল সিটিতে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এই দীর্ঘ সময়ে তার চিকিৎসায় যুক্ত করা হয় যুক্তরাষ্ট্র ও স্পেনসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। তবে সব চেষ্টা সত্ত্বেও কখনোই তিনি জ্ঞান ফিরে পাননি।
প্রিন্স খালেদ, তার পিতা, ছেলের সেবাযত্নে সবসময় সরাসরি যুক্ত ছিলেন এবং জীবন রক্ষাকারী ব্যবস্থা সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে গেছেন। তার বিশ্বাস ছিল, জীবন ও মৃত্যু একমাত্র আল্লাহর হাতে। মাঝেমধ্যে পুত্রের দেহে ক্ষণিকের প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে নতুন করে আশার সঞ্চার হতো, তবে তার শারীরিক অবস্থা কখনোই স্থিতিশীল হয়নি।
২০ বছর ধরে লাইফ সাপোর্টে থাকা এই রাজপুত্রের মৃত্যুর খবরে সৌদি আরবসহ পুরো মুসলিম বিশ্বে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বহু মানুষ তাকে ঘিরে তৈরি হওয়া করুণা, আশা এবং বিশ্বাসের গল্পগুলোর স্মৃতিচারণ করছেন।
শেষ পর্যন্ত প্রিন্স আল-ওয়ালিদ তার দীর্ঘ 'ঘুম' থেকে চিরতরে বিদায় নিলেন পৃথিবীর সকল ভালোবাসা ও প্রার্থনাকে পেছনে ফেলে।
সূত্র:https://tinyurl.com/5dwhmkb7
আফরোজা