ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

মাত্র ৫০টি আসন নিয়ে টিকে থাকবে নেতানিয়াহুর সরকার?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:০৯, ১৯ জুলাই ২০২৫

মাত্র ৫০টি আসন নিয়ে টিকে থাকবে নেতানিয়াহুর সরকার?

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকার এখন চরম সংকটের মুখোমুখি। তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী দুটি অতি-রক্ষণশীল ধর্মীয় দল ইউনাইটেড তোরা জুডাইজম (UTJ) এবং শাস বর্তমান সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই দুটি দলের মূল দাবি, অতি-অর্থডক্স ইহুদিদের জন্য সামরিক সেবামুক্তির বিধান বহাল রাখতে হবে। কিন্তু নেতানিয়াহুর নিজের দল লিকুদসহ অনেক জোটসঙ্গী এর তীব্র বিরোধিতা করছে।

UTJ ইতিমধ্যে তাদের সদস্যদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে, আর শাস পার্টিও তীব্র হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যদি তারা বাস্তবেই জোট ছেড়ে দেয়, তবে ১২০ আসনের নেসেটে (ইসরায়েলি সংসদ) নেতানিয়াহুর জোটের আসনসংখ্যা নেমে আসবে মাত্র ৫০-এ  যা স্থিতিশীল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে অনেক নিচে।

বিগত এক দশক ধরে এই দুই দল নেতানিয়াহুকে সমর্থন দিয়ে এসেছে। বিনিময়ে তারা পেয়ে এসেছে সরকারিভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুদান এবং বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা থেকে অব্যাহতি। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর ৭ তারিখে হামাসের আকস্মিক হামলার পর দেশের সামরিক নীতির ওপর চাপ বেড়ে যায়। এরপরে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট সামরিক সেবামুক্তির বিধান বাতিল করে দেয়। এখন এই দুই দল একটি নতুন আইন পাশ করাতে চাইছে, যা অতি-অর্থডক্স (ইহুদি ধর্মের এক বিশেষ কট্টর রক্ষণশীল গোষ্ঠীকে বোঝানো হয়) যুবকদের আবারও সামরিক সেবা থেকে অব্যাহতি দেবে। কিন্তু জোটে ঐকমত্য না থাকায় বিষয়টি অমীমাংসিতই রয়ে গেছে।

যদিও তারা জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে, তবুও UTJ ও শাস এখনই সরকার পতনের দিকে ঠেলে দিতে আগ্রহী নয়। বরং এই হুমকি তারা নেতানিয়াহুর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ব্যবহার করছে। শাস পার্টি বলেছে, আসন্ন কনেসেটের (ইসরায়েলের জাতীয় সংসদ বা পার্লামেন্ট) শীতকালীন অধিবেশনের আগেই যদি এই আইন পাশ হয়, তবে তারা সরকারে থাকতে রাজি।

২৭ জুলাই কনেসেট তিন মাসের জন্য অবকাশে যাচ্ছে। এই সময়ে নেতানিয়াহুর হাতে সুযোগ থাকবে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার এবং আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসন করার। সরকার এই সময়ে সীমিত ক্ষমতায় চলবে, তাই তৎক্ষণাৎ কোনো অনাস্থা ভোট বা সাংবিধানিক চাপ পড়বে না।

শাসের ঘোষণার পর বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদ বলেন, “একটি সংখ্যালঘু সরকার কোনো যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এরা ঠিক করতে পারে না কারা বাঁচবে আর কারা মরবে। তারা গাজার ভাগ্য কিংবা সিরিয়া-সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।”
তিনি দাবি করেন, “নেতানিয়াহুর সরকার অবৈধ এবং নতুন নির্বাচন এখন অত্যাবশ্যক।” যদিও পরবর্তী নির্বাচন নির্ধারিত রয়েছে ২০২৬ সালের শেষ দিকে, তবুও রাজনৈতিক চাপ বেড়েই চলেছে।

গত নির্বাচনে নেতানিয়াহু খুব অল্প ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিলেন। তারপর থেকে গাজা, হেজবুল্লাহ বা ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক সাফল্যও জনগণের আস্থা ফেরাতে পারেনি। এবার যদি তার সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক মিত্ররাও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাহলে তার সামনে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।

মুমু ২

×