
ছবিঃ সংগৃহীত
ইন্টারন্যাশনাল অটমিক এনার্জি এজেন্সির (IAEA) সঙ্গে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপনে সরাসরি শর্ত জুড়ে দিয়েছে ইরান। জাতিসংঘের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—সংস্থাটি যদি দ্বৈতনীতি থেকে না সরে আসে, তাহলে কোনও সম্পর্ক পুনঃস্থাপন সম্ভব নয়।
চলতি বছরের জুনের শুরুর দিকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের এই পর্যবেক্ষক সংস্থা। সেখানে দাবি করা হয়, ইরানের কাছে বর্তমানে রয়েছে প্রায় ৪৫০ কেজি ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম, যা ৯০ শতাংশে উন্নীত হলে সহজেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি সম্ভব।
এই প্রতিবেদনের এক সপ্তাহের মধ্যেই, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে বিমান হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েলের দিকে। প্রায় ১২ দিনের এই সংঘাত শেষ হয় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায়।
তবে এর পেছনে IAEA'র ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে তেহরান। ইরানের অভিযোগ—প্রতিবেদনটি ছিল পক্ষপাতদুষ্ট এবং তা ইসরায়েলের হামলার পক্ষে অজুহাত হয়ে দাঁড়ায়।
এই প্রেক্ষাপটে, ২৫ জুন ইরানের পার্লামেন্টে একটি বিল পাশ হয় যাতে IAEA’র সঙ্গে সকল ধরনের সহযোগিতা স্থগিতের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বিলটিতে স্বাক্ষর করে বিষয়টিকে আইনে পরিণত করেন। ফলে সংস্থাটির সঙ্গে তেহরানের সব যোগাযোগ ও সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়।
যুদ্ধবিরতির পর জাতিসংঘ ও IAEA ইরানকে আবারও সহযোগিতার টেবিলে ফেরার আহ্বান জানায়। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তি এবং স্বচ্ছ পরমাণু তৎপরতার জন্য ইরানের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে তেহরান সরাসরি ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়ে একটি শর্ত সামনে আনে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা IRNA এবং বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট আন্তেনীয় কস্তার সঙ্গে ফোনালাপে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন—“কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থা যদি নিরপেক্ষতা হারায়, তাহলে তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।”
তিনি সাফ জানিয়ে দেন, IAEA যদি তাদের দ্বৈতনীতি পরিত্যাগ না করে, তাহলে ইরানও সংস্থাটির সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করবে না।
ফোনালাপে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান আরও বলেন—“ভবিষ্যতে যদি ইরানকে লক্ষ্য করে আবারও হামলা হয়, তবে জবাব হবে আগের চেয়ে আরও কঠোর এবং নিখুঁত।”
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও IAEA-র এই টানাপড়েন মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। পাশাপাশি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগও বাড়তে পারে।
ইমরান