
বিশ্বের সাতটি ধনী গণতান্ত্রিক দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরদের তিনদিনব্যাপী বৈঠকে শেষ পর্যন্ত একমত হয়েছে G7 দেশগুলো, বৈশ্বিক বাণিজ্যে "অসাম্য সৃষ্টি করা নীতিমালার" বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে তারা। যদিও আমেরিকার শুল্কনীতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভিন্নমত থাকায় শুরুতে যৌথ বিবৃতি নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল, শেষ পর্যন্ত বৈঠক শেষে একটি দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন ও মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে আগের মতো জোরালো অবস্থান না থাকলেও, অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা ও নির্দিষ্ট কোনো দেশের নাম না করেও ‘অবাজারমুখী নীতি ও অনুশীলনের’ বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সরাসরি চীনের রপ্তানি ভর্তুকি ও মুদ্রানীতির প্রতি ইঙ্গিত।
"বিশ্বকে আমরা বার্তা দিতে পেরেছি যে G7 একসাথে আছে, লক্ষ্যেও এবং কাজে,"বলেন কানাডার অর্থমন্ত্রী ফ্রঁসোয়া-ফিলিপ শঁপান।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালির অর্থমন্ত্রীদের এই সম্মেলনটি পূর্ববর্তী G7 পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের তুলনায় অনেক বেশি সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল বলে জানানো হয়েছে।
জার্মান অর্থমন্ত্রী লারস ক্লিংবেইল বলেন, "বর্তমান বাণিজ্য দ্বন্দ্ব দ্রুত সমাধান জরুরি। কারণ এসব শুল্ক পুরো বৈশ্বিক অর্থনীতির উপরই চাপ সৃষ্টি করছে।"
বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্ক। যদিও চূড়ান্ত বিবৃতিতে এর উল্লেখ নেই, তবুও বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণভাবে এসেছে বলে জানান কানাডার অর্থমন্ত্রী।
অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে রাশিয়ার "নিষ্ঠুর আক্রমণ" এর নিন্দা জানালেও, আগের মতো "অবৈধ ও উসকানিমূলক যুদ্ধ" বলার ভাষা ব্যবহার থেকে বিরত ছিল এই বিবৃতি। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানকেই প্রতিফলিত করে, যেখানে ট্রাম্প ইউক্রেনের ভূমিকাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন এবং রাশিয়ার সাথে শান্তি আলোচনায় জোর দিয়েছেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা জানান, যদি যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হয়, তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়েও বিবেচনা করা হবে।
আগামী ১৫ থেকে ১৭ জুন কানাডার কানানাসকিসে অনুষ্ঠিতব্য G7 নেতৃবৃন্দের সম্মেলনের জন্য এই বৈঠক ভূমিকা রেখেছে। হোয়াইট হাউজ নিশ্চিত করেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্মেলনে অংশ নেবেন।
চীনের এই বৈঠক সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে, কানাডায় চীনা দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
সূত্র : https://www.theguardian.com/world/2025/may/22/g7-china-trade
মিমিয়া