ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ওমানে ১৫৬ প্রবাসী পেলেন নাগরিকত্ব, নতুন কঠোর আইন কার্যকর

প্রকাশিত: ১০:১৭, ২০ মে ২০২৫

ওমানে ১৫৬ প্রবাসী পেলেন নাগরিকত্ব, নতুন কঠোর আইন কার্যকর

ছবি: সংগৃহীত

ওমানের সুলতান হাইসাম বিন তারিক রাজকীয় ফরমানের মাধ্যমে ১৫৬ জন প্রবাসীকে নাগরিকত্ব দিয়েছেন। এ বিষয়ে রাজকীয় ফরমান নং ১৭/২০২৫ জারি করা হয়েছে, যা নতুন নাগরিকত্ব আইনের অধীনে কার্যকর হয়েছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওমানের জাতীয়তা আইন সংশোধন করে নতুন নিয়মকানুন চালু করা হয়, যা আগের রাজকীয় ফরমান নং ৩৮/২০১৪ এর জায়গা নেয়। নতুন আইনটি ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়।

নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, জন্ম, বিয়ে ও প্রাকৃতিকী করণ- এর মাধ্যমে ওমানি নাগরিকত্ব লাভ করা সম্ভব। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন-জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের জন্য পিতৃ-মাতৃ পরিচয়, বিয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পেতে হলে দীর্ঘমেয়াদি বৈবাহিক সম্পর্ক ও আবাসনের প্রমাণ থাকতে হবে। এছাড়া বংশগতির মাধ্যমে নাগরিকত্ব লাভের নিয়মও স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

আইনে দ্বৈত নাগরিকত্ব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে সুলতানের বিশেষ অনুমোদন থাকলে তা ব্যতিক্রম হতে পারে।

আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারা ও বিধান: ধারা ২৩: কোনো ব্যক্তি আইন ভঙ্গ করে বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে তার ওমানি নাগরিকত্ব স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

বিয়ে সংক্রান্ত বিধান: কোনো বিদেশি পুরুষ যদি ওমানি নারীর সঙ্গে বিয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পান, তবে বিয়ের পাঁচ বছরের মধ্যে তালাক বা পরিত্যাগ ঘটলে তিনি নাগরিকত্ব হারাবেন। তবে পিতা নাগরিকত্ব হারালেও সন্তানের নাগরিকত্ব বজায় থাকবে।

কোনো বিদেশি নারী যদি ওমানি পুরুষকে বিয়ে করে নাগরিকত্ব পান, কিন্তু পরবর্তীতে তালাক হয়ে অন্য কোনো বিদেশিকে বিয়ে করেন, সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় বিয়ের তারিখ থেকে তার ওমানি নাগরিকত্ব বাতিল হবে।

ধারা ২৬: কেউ যদি সুলতান বা সুলতানাতের অবমাননা করেন, অথবা এমন কোনো দল বা সংগঠনের সদস্য হন যেটি দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে, তবে তার নাগরিকত্ব বাতিল করা যেতে পারে।

বিদেশি সরকারের চাকরি: যদি কেউ ওমানি নাগরিক হয়েও কোনো বৈরী বা প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সরকারে এমন পদে কাজ করেন যা ওমানের স্বার্থের পরিপন্থি, এবং সরকারিভাবে চাকরি ছাড়তে বলা হলেও তা না মানেন, তাহলে তার নাগরিকত্ব বাতিল হতে পারে।

ধারা ২৭: রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে অপরাধ বা নাগরিকত্ব লাভের পাঁচ বছরের মধ্যে একাধিক গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত হলে নাগরিকত্ব বাতিল করা হতে পারে।

তদ্ব্যতীত, যদি কেউ যথাযথ কারণ ছাড়া টানা ২৪ মাস বা তার বেশি সময় ওমানের বাইরে থাকেন, তাহলেও তার নাগরিকত্ব ঝুঁকির মুখে পড়বে।

যদিও আইনটি কঠোর, তবে তা নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধারের সুযোগও রাখে-যদি বাতিলের কারণ আর প্রযোজ্য না থাকে।

এই নতুন আইন ও নাগরিকত্ব প্রদান প্রক্রিয়া ওমান সরকারের জাতীয় অখণ্ডতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি এবং বিদেশিদের জন্য কঠোর অথচ স্বচ্ছ নাগরিকত্ব নীতির প্রতিফলন।

সূত্র: https://shorturl.at/o8KRQ

মিরাজ খান

×