ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটি নিয়ে এক সাদা আমেরিকানের কটূক্তির প্রতিবাদ

মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ৭ নভেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৯:৪০, ৭ নভেম্বর ২০২২

প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটি নিয়ে এক সাদা আমেরিকানের কটূক্তির প্রতিবাদ

সাদা আমেরিকানের কটূক্তির প্রতিবাদ কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়

ক্রিকেট খেলার মাঠ পাওয়া ও বাজেট বরাদ্ধ সহ অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে বক্তব্য পাল্টা বক্তব্যের জের ধরে এক সাদা আমেরিকান দর্শক কর্তৃক বাংলাদেশ ও প্রবাসী বাংলাদেশী  কমিউনিটিকে আপত্তিকর কটূক্তি করার প্রতিবাদ এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে আয়োজিত একটি সভা ব্যাপক হট্টগোলে পন্ড হয়ে গেছে.শুধু তাই নয়,এ নিয়ে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে ছড়িয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা।

বাংলাদেশী কমিউনিটি লিডার,খাজা শাহাব আহমেদ,ডক্টর রাব্বি ও দেলোয়ার আনছারী সহ বেশ কয়েক নেতৃবৃন্দ জনকণ্ঠকে জানান, গত ২৫ অকটুবোর ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য মিশিগান ওয়ারেন সিটি কাউন্সিলের এজেন্ডা ভিত্তিক নিয়মিত সভা. এতে উপস্থিত ছিলেন, সংশ্লিষ্ট সিটির প্ল্যানিং কমিশনার দেলোয়ার আনছারী সহ আরো কয়েক বাংলাদেশী।

সভা শুরু হলে খেলার মাঠ সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে কমিশনার আনছারী বক্তব্য রাখেন। পরবর্তীতে এ নিয়ে এক সাদা আমেরিকান বক্তব্য রাখতে গিয়ে  শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ ও প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটিকে উদ্দ্যেশ্য করে আপত্তিকর ভাষায় কটূক্তি করেন। এ নিয়ে মৃদু হৈ চৈ শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন সভার সভাপতি মেয়র পটেম ও কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট গ্রিন প্যাট্রিক। এদিকে সিটি কাউন্সিলে সৃষ্ট এই ঘটনা মুহূর্তে জানাজানি হলে মিশিগানের প্রবাসী বাংলাদেশী ও সংশ্লিষ্ট কমিটির নেতৃবৃন্দের মাঝে তীব্র অসন্তউস সৃষ্টি হয়। এরই প্রতিবাদ ও অন্যান্য বিষয়াদি সম্পর্কে করণীয় নির্ধারণে গতকাল শনিবার (১১/৫/২০২২) রাতে এক সভা আহ্বান করে বাংলাদেশী আমেরিকান কমিশনার সিটি অব ওয়ারেন, মিশিগান।

খাজা শাহাব আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সুমন কবিরের সঞ্চালনায় এই সভা শুরু হলে গত ২৫ অকটুবোর সংঘটিত বিষয়াদি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব চলতে থাকে। এসময় হেমট্রামিক সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলম্যান নাঈম লিওন চৌধুরী এবং যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও এলায়েন্স অব সাউথ এশিয়া বাংলাদেশ আমেরিকান (আস্যাল) মিশিগান চ্যাপ্টারের সভাপতি কমিউনিটি লিডার ডক্টর রাব্বি আলম তাদের বক্তব্য দিতে আয়োজক নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

 কিন্তু নেতৃবৃন্দ জানিয়ে দেন তাদের প্রশ্ন কাগজে লিখে দিতে। ফলে নাঈম চৌধুরী ও রাব্বি আলম দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। এক পর্যায়ে এ নিয়ে উভয় পক্ষের গুটি কয়েক ব্যক্তির মাঝে কথা কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এহেন পরিস্থিতিতে মঞ্চে বসে থাকা বাংলাদেশী ও আমেরিকান নেতৃবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথি দর্শকরাও উঠে সটকে পড়েন। এদিকে উদ্ভুত পরিস্থিতি চলাকালে কয়েক ব্যক্তি কাউন্সিলম্যান নাঈম চৌধুরী ও ডক্টর রাব্বি আলমের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং চড়াও তাদের দুজনকে বের করে দেয়া হয়। এক পর্যায়ে ডক্টর রাব্বি পুলিশকে কল করলে মুহূর্তেই পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এদিকে এ নিয়ে জনকণ্ঠকে দেয়া তাৎক্ষণিক পৃথক পৃথক সাক্ষাৎকারে নাঈম চৌধুরী ও রাব্বি আলম দুজনের নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে অভিযে|গ করেন,ওরা তাদের ওপর চড়াও হন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন।

তারা আরো জানান, এ ঘটনা জানিয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশে তারা অভিযোগ করেছেন এবং আদালতেও যাবেন। অন্যদিকে আযোজকদের প্রধান খাজা সাহেব আহমেদ, সুমন কবির অনাকাক্ষিত এমন ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, নাঈম চৌধুরী ও রাব্বি আলমকে কোন অসম্মান করা হয়নি সহ আরো কিছু বক্তব্য প্রদান করেন। অপরদিকে মোহাম্মদ জাবেদ জনকণ্ঠকে বলেন, নাঈম চৌধুরী ও রাব্বি আলমের অভিযে|গ অসত্য। তারা নিয়ম ভেঙে বক্তব্য দিতে চেয়েছেন এবং সভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। এদিকে গত ২৫ অক্টোবর সংঘটিত ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে সংশ্লিষ্ট সিটির কাউন্সিলের প্ল্যানিং কমিশনার দেলোয়ার আনছারী বলেছেন,সাদা আমেরিকান ব্যক্তি বাংলাদেশ ও প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটিকে নিয়ে অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে আমাদেরকে আহুত করেছে। যা মেনে নেয়া যায় না। এমনি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশী ও আমেরিকানদের মাঝে চলছে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা। যা এখন টক্ অব দ্যা মিশিগানে পরিণত হয়েছে।

টিএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×