
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের মতো না আছে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র, না আছে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা—আছে শুধু বুকভরা সাহস আর নিজ ভূমি রক্ষার অটুট সংকল্প। আর এই শক্তিতেই দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন আল কুদস ব্রিগেড।
পবিত্র ভূখণ্ড গাজা উপত্যকা নিয়ে যে সোনালী স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিলেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তা এখন ক্রমশই দুঃস্বপ্নে পরিণত হচ্ছে। আর সেই স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিতে রীতিমতো কোমর বেঁধে নেমেছেন আল কুদস ব্রিগেডের সাহসী সদস্যরা।
ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই দখলদার বাহিনীকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে ইস্পাতদৃঢ় এই প্রতিরোধ যোদ্ধারা। আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত হয়েও গাজার যোদ্ধাদের শেষ করতে পারছে না নেতানিয়াহুর বাহিনী। আল কুদসের অদৃশ্য শক্তি বারবার লক্ষ্যচ্যুত করে ফেলছে ইসরায়েলি পরিকল্পনা।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলি সেনারা গাজায় তাদের নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না, যার ফলে সেনাদের মনোবলে ভাঙন ধরছে। আল কুদস ব্রিগেডের বরাতে সংবাদমাধ্যম আল মায়া জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার দখলকৃত অঞ্চল সেদের মেফেলসম ও নিজরকে লক্ষ্য করে সিরিজ রকেট হামলা চালিয়েছে গোষ্ঠীটি।
শুধু আল কুদস নয়, ইসরায়েলি বাহিনীর কঠিন পরীক্ষা নিচ্ছে আরেক প্রতিরোধ সংগঠন আল আকসা মার্টায়ার্স ব্রিগেড। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, খান ইউনিসের উত্তরাংশের পাঁচ নম্বর স্ট্রিট এলাকায় একটি ইসরায়েলি সামরিক বাহন লক্ষ্য করে মর্টার দিয়ে হামলা চালিয়েছে তারা।
পরিস্থিতি বুঝে ওঠার আগেই দখলদার সেনারা ক্ষতির মুখে পড়ে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চল, বিশেষ করে খান ইউনিস, এখন ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য ভয়াবহ হামলার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এই অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকাতেই ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা। পর্যাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের অভাব, দুর্বল নেতৃত্ব ও অগোছালো কৌশলের কারণে ইসরায়েলি বাহিনীর অসহায়ত্ব প্রকাশ পাচ্ছে—এমনটাই মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।
তাদের মতে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের অটুট সংকল্প এবং ইসরায়েলি আধিপত্য মেনে না নেওয়ার কারণে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে শান্তি আলোচনা প্রক্রিয়াও প্রভাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে গাজার স্থলভাগে সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের জন্য বড় চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পদক্ষেপের পর ইসরায়েলি ট্যাংকের ওপর বিস্ফোরক ডিভাইস দিয়ে হামলার প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এতে করে নেতানিয়াহুর প্রশাসন ব্যাপক রাজনৈতিক ও সামরিক চাপে পড়েছে।
প্রতিরোধ গোষ্ঠীর এই ধরনের অপারেশন স্পষ্ট বার্তা দেয়—ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় তাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় মধ্যস্থতাকারীরাও এখন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। ফলে দখলদার বাহিনী পবিত্র ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহারের মতো পরিকল্পনার দিকে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে বলেও জানিয়েছে লেবাননের গণমাধ্যম আল মায়েদীন।
শেখ ফরিদ