ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

চীন-পাকিস্তানের সাথে সাগরে পারবে ভারত?

প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ২০ জুলাই ২০২৫

চীন-পাকিস্তানের সাথে সাগরে পারবে ভারত?

ছবি: সংগৃহীত

আরব সাগরের বুকে অনেকগুলো ছোট ছোট দ্বীপ। এগুলো একসাথে পরিচিত লাক্ষাদ্বীপ নামে। সেখানকারই এক দ্বীপে ভারত শুরু করতে যাচ্ছে সামরিক তৎপরতা।
যা ঘিরে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নানা ফিসফাস। একই সাথে চীন, পাকিস্তান এবং মালদ্বীপের দিকে লক্ষ্য রেখে ভারত সেখানে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করতে যাচ্ছে। ভারত সেখান থেকে সহজেই মালদ্বীপ ও পাকিস্তানকে স্নায়ুচাপে রাখতে পারবে মোদি প্রশাসন।

বিশ্লেষকদের মতে, মালদ্বীপের দক্ষিণাঞ্চল ব্যবহার করে চীন ভারতের যে গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে, তার বিরুদ্ধেও এই সামরিক ঘাঁটি ভূমিকা রাখতে পারবে।

শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, লাক্ষাদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জের বিত্রা দ্বীপে প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গড়তে চলেছে নয়া দিল্লি। এরই মধ্যে তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। এজন্য দ্বীপে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে বলা হয়েছে, ওই দ্বীপটিকে প্রতিরক্ষা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে।

গত ১১ জুলাই, কেন্দ্রীয় শাসিত এই অঞ্চলটির রাজস্ব দপ্তর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বিত্রা দ্বীপটিকে প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই দ্বীপের অবস্থান এবং জাতীয় নিরাপত্তায় তার প্রাসঙ্গিকতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নেওয়া হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিত্রা দ্বীপটিকে শিগগিরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কৌশলগত দিক থেকে লাক্ষাদ্বীপ বরাবরই ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আরব সাগরে অনেক বাণিজ্যিক জাহাজ এই দ্বীপের পাশ দিয়ে যাতায়াত করে। সামুদ্রিক পরিবহনে এখান থেকেই নজরদারি চালানো হয়। এছাড়া বিভিন্ন নৌ অভিযানের ক্ষেত্রেও লাক্ষাদ্বীপের গুরুত্ব অপরিসীম।

আর এর অদূরেই মালদ্বীপ, যা ভারতের প্রতিবেশী একটি স্বতন্ত্র দ্বীপরাষ্ট্র। সম্প্রতি মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, মালদ্বীপের মাধ্যমে ভারতের দক্ষিণ উপকূলে নজরদারি চালায় বেইজিং। ফলে তার বিপরীতে লাক্ষাদ্বীপকে শক্তিশালী রাখা প্রয়োজন।

লাক্ষাদ্বীপপুঞ্জের বিত্রা দ্বীপে ঘাঁটি স্থাপন করবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সেই দ্বীপ থেকে আকাশপথে পাকিস্তানের করাচির দূরত্ব প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার। আর পানিপথে এই দূরত্ব দুই গুণেরও বেশি। দূরত্ব বেশি হলেও মাঝখানে শুধু পানি ছাড়া আর কিছুই নেই।

তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সেই ভৌগোলিক তাৎপর্য আরও বেড়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লাক্ষাদ্বীপে প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গড়তে পারলে তা ভারতের পক্ষে যথেষ্ট কার্যকর হবে। পাশাপাশি আরব সাগরে নজরদারি চালাতেও সুবিধা পাবে ভারত। দেশের পশ্চিম উপকূল আরও সুরক্ষিত হবে।

রাজস্ব দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতেও এই কৌশলগত অবস্থানের কথাই বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

 

শেখ ফরিদ 

×