ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

ঘূর্ণিঝড় উইফার তাণ্ডবে অচল হংকং, সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি

প্রকাশিত: ১৯:১১, ২০ জুলাই ২০২৫

ঘূর্ণিঝড় উইফার তাণ্ডবে অচল হংকং, সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি

ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় উইফা-র তাণ্ডবে হংকং জুড়ে নেমে এসেছে ভয়াবহ বিপর্যয়। রবিবার, ২০ জুলাই, হংকংয়ে জারি করা হয় ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ ১০ নম্বর টাইফুন সতর্কতা সংকেত—যা অঞ্চলটির জন্য এক চরম ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে কালো মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে যায় গোটা আকাশ, শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ অস্থিরতা। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উইফা ঘূর্ণিঝড়টি আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরবর্তী অঞ্চল অতিক্রম করবে এবং হংকংয়ের দক্ষিণাংশে তীব্র বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে।

টাইফুন পর্যায়ে পৌঁছে ঝড়টি ইতিমধ্যে মাকাও ও চীনের ছুহাই শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন, এই সপ্তাহেই এটি ভিয়েতনামেও আঘাত হানতে পারে।

উল্লেখযোগ্য যে, "উইফা" নামটি থাই ভাষার একটি শব্দ, এবং পশ্চিম প্যাসিফিক অঞ্চলের টাইফুনগুলোর নাম সাধারণত সেই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ থেকে নেওয়া হয়।


ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে উঠেছে। ফেরিসহ অধিকাংশ গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে কিছু হাই স্পিড ট্রেন-এর পরিষেবাও।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হংকংয়ে শুরু হয়েছে প্রবল ঝড়ো হাওয়া ও অঝোর বৃষ্টিপাত। পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটছে। উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত ও তীব্র বাতাস অব্যাহত রয়েছে।


ঝড়ের কারণে বাতিল করা হয়েছে ২০০টিরও বেশি ফ্লাইট। ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারওয়েজ সকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগমন ও প্রস্থানকারী সমস্ত ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করে। যাত্রীদের টিকিটের ফি মওকুফ করে নতুন তারিখে বুকিংয়ের সুযোগও দিয়েছে সংস্থাটি।


হংকংয়ে অবস্থিত ডিজনিল্যান্ড ও অন্যান্য বিনোদন পার্কসমূহ বন্ধ রাখা হয়েছে জননিরাপত্তার স্বার্থে।


বর্ষার এই মৌসুমে ফিলিপাইনে বৃষ্টিপাতের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির ক্যাগান প্রদেশে টানা ভারী বৃষ্টির ফলে বন্যা দেখা দেয়, যেখানে অন্তত একজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে।

দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও শক্তিশালী ঝড় ও বিপজ্জনক আবহাওয়া বিরাজ করছে, যার ফলে ৩ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ প্রভাবিত হয়েছে এবং ৪০০টিরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া প্রায় ৪৩ হাজার মানুষ বন্যা, ভূমিধ্বস এবং তীব্র বাতাসের কারণে সরকার পরিচালিত জরুরি আশ্রয় কেন্দ্র অথবা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।


ঘূর্ণিঝড় উইফার কারণে হংকং ও ফিলিপাইনসহ পূর্ব এশিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে, ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং নাগরিকদের নিরাপদে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শেখ ফরিদ

×