ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি ও টিয়ার গ্যাসে আতঙ্ক

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

খবর বিবিসির

প্রকাশিত: ০০:১৫, ৪ অক্টোবর ২০২২

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

ইস্তানবুলে সোমবার বিক্ষোভের সময় ইরানী নারীদের সমর্থনে এক বিক্ষোভকারী তার চুল কেটে ফেলে

ইরানের রাজধানী তেহরানের শরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার খবর পাওয়া গেছে। ক্যাম্পাসের গাড়ির পার্কিংয়ে অনেক শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে বলে সোমবার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে পালিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে। গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। খবর বিবিসির।
ইরান ইন্টারন্যাশনাল সাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্রাবাসগুলোতে পুলিশ হামলা করেছে এবং গুলি করেছে। অন্য একটা খবরে বলা হচ্ছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তেহরানের প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ইরানে পুলিশ হেফাজতে কুর্দী নারী মাসা আমিনি নিহতের ঘটনায় চলমান বিক্ষোভের অংশ হিসেবে রাস্তায় নামে শরিফ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।

নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ জন। সোমবার প্রথমবার শরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী রাস্তায় বেরিয়ে আসে। সোশ্যাল মিডিয়ার একটা ভিডিওতে দেখা যায় শরিফ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে ছাত্ররা দৌড়ে পালাচ্ছে। দূর থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একটা গাড়িতে যারা বসে ভিডিও করছিলেন, তাদের দিকে বন্দুক নিয়ে মোটরবাইকে করে নিরাপত্তা সদস্যরা এগিয়ে আসছে।

ইরানের কঠোর পোশাকবিধি অমান্য করায় গ্রেফতার করা হয় মাসা আমিনিকে। গ্রেফতারের পর ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর থেকে দেশটির পোশাক বিধির বিরোধিতা ও হত্যাকা-ের বিচারের দাবিতে ইরানে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিশ্বের অনেক দেশে মাসা আমিনি হত্যা এবং ইরানের শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে। এদিকে ইরানে পোশাক আইন লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যুর ঘটনায় চলমান বিক্ষোভে তৃতীয় সপ্তাহের মতো চলছে। এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি বলেছেন, দেশের শত্রুদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে।

একটি বিবৃতিতে তিনি জানান, যখন ইসলামী প্রজাতন্ত্র অর্থনৈতিক সমস্যা কাটিয়ে এই অঞ্চলে ও বিশ্বে আরও সক্রিয় হয়ে উঠছিল, তখন শত্রুরা দেশকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে মাঠে নামে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে অসলো-ভিত্তিক ইরানী মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্ত লাগোয়া ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এক এলাকায় শুক্রবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে আরও অন্তত ৪১ জন মারা গেছেন। ওই অঞ্চলের একজন পুলিশ প্রধানের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু বালুচ সম্প্রদায়ের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ হিজাববিরোধী বিক্ষোভ উস্কে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানে নারীদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। এই বিপ্লবের পর এবারই প্রথম ইরানের হিজাববিরোধী আন্দোলনকারী নারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমাবেশ হয়েছে।

×