১৪৪ সেনার মুক্তি
ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই দেশটির ১৪৪ জন সেনাকে মুক্তি দিয়েছে রাশিয়া। বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে মুক্তিপ্রাপ্ত এসব সেনা ইতোমধ্যেই তাদের নিজ ভূখণ্ডে ফিরেছে। এদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাাদিমির পুতিন বলেছেন, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো যদি ফিনল্যান্ড ও সুইডেনে কোন সেনা মোতায়েন করে, তাহলে তার পাল্টা জবাব দেবে রাশিয়া। রাশিয়ার কাছ থেকে ছাড়া পাওয়া এসব সেনাদের মধ্যে মারিওপোলের সেই আজভস্তল ইস্পাত কারখানা থেকে আটক যোদ্ধাদের ৯৫ জন রয়েছেন। খবর এএফপি ও বিবিসির।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা সংক্ষিপ্তভাবে জিইউআর নামে পরিচিত। বুধবার টেলিগ্রামে সংস্থাটি জানায়, মুক্তি পাওয়া ইউক্রেনীয় সেনাদের বেশিরভাগই গুরুতর আহত। তাদের কেউ বন্দুকের গুলি, বিস্ফোরণের আঘাত, পোড়া, হাড় ভেঙ্গে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। রয়টার্স বলছে, বন্দী বিনিময় নিয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোন মন্তব্য করা হয়নি। তবে, পূর্ব ইউক্রেনের স্ব-ঘোষিত দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের প্রধান বলেছেন, তারা নিজেদের যোদ্ধা এবং রুশ সেনাবাহিনীর সদস্যসহ ১৪৪ সেনার মুক্তি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, আমরা ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর একই সংখ্যক বন্দীকে কিয়েভের কাছে হস্তান্তর করেছি।
এসব বন্দীদের বেশিরভাগই আহত ছিলেন। আরও শতাধিক ইউক্রেনীয় এখনও পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়া এবং তার মস্কোপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্তৃপক্ষের হাতে বন্দী রয়েছেন বলে মনে করা হয়। তবে, তাদের সঠিক অবস্থান এখনও জানা যায়নি। ডয়েচে ভেলে বলছে, ইউক্রেন প্রশাসন প্রথম জানায়, ১৪৪ জন সেনাকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে মারিওপোলের সেই আজভস্তল স্টিল কারখানা থেকে আটক যোদ্ধাদের ৯৫ জন আছেন। যদিও প্রাথমিকভাবে রাশিয়া জানিয়েছিল, তাদের মুক্তি দেয়া হবে না। এমনকি, রাশিয়ার আদালতে ওই যোদ্ধাদের বিচার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল। তাদের মৃত্যুদ-ের দাবিও তুলেছিল রাশিয়া। ফলে সেখান থেকে ৯৫ জনকে দেশে ফেরানো বড় জয় হিসেবেই দেখছে ইউক্রেন। অন্যদিকে, রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ডেনিস পুশিলিন জানিয়েছেন, রাশিয়া এবং দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের ১৪৪ জন বন্দী যোদ্ধা দেশে ফিরেছেন। বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের ইউক্রেনের জেল থেকে ছাড়িয়ে নিতে পারাকে জয় হিসেবেই দেখছে রাশিয়া।
ফিনল্যান্ড ও সুইডেনকে হুঁশিয়ার করলেন পুতিন ॥ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো যদি ফিনল্যান্ড ও সুইডেনে কোন সেনা মোতায়েন করে, তাহলে তার পাল্টা জবাব দেবে রাশিয়া। দেশ দুটি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ পাওয়ার পর এই হুঁশিয়ারি জানালেন পুতিন। বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে পুতিন বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে আমাদের যে সমস্যা, তা ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের সঙ্গে নেই। তারা ন্যাটোতে যোগ দিতে চায়, দিতে থাকুক। মধ্য এশিয়ার সাবেক সোভিয়েতভুক্ত দেশ তুর্কমেনিস্তানে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে আলাপের পর পুতিন বলেন, ‘তবে তাদের অবশ্যই বুঝতে হবে যে, আগে কোন হুমকি ছিল না, এখন যদি সেখানে সামরিক দল এবং অবকাঠামো মোতায়েন করা হয়, তবে আমাদের সদয়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে এবং যে অঞ্চলগুলো থেকে আমাদের প্রতি হুমকি তৈরি করা হয়েছে, তাদের জন্য একই হুমকি তৈরি করতে হবে।’ পুতিন বলেন, ন্যাটোতে যোগ দেয়ার পর হেলসিঙ্কি এবং স্টকহোমের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক খারাপ হওয়া এড়ানো যাবে না। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল, কিন্তু এখন কিছু উত্তেজনা থাকতে পারে, অবশ্যই থাকবে। আমাদের জন্য হুমকি থাকলে তা অনিবার্য।’