ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

খবর এএফপি

লেখক সালমান রুশদি বেঁচে যাওয়ায় ‘বিস্মিত’ হামলাকারী

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ১৮ আগস্ট ২০২২; আপডেট: ১৩:১৫, ১৮ আগস্ট ২০২২

লেখক সালমান রুশদি বেঁচে যাওয়ায় ‘বিস্মিত’ হামলাকারী

সালমান রুশদি ও হামলাকারী হাদি মাতার

নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে ছুরি হামলার শিকার হয়েছিলেন বুকারজয়ী লেখক সালমান রুশদি। সালমান রুশদিকে ছুরিকাঘাতের পরও ওই লেখক বেঁচে যাওয়ায় হামলাকারী ‘আশ্চর্য’ হয়েছেন।

আকস্মিকভাবে হওয়া এই হামলা এতোটাই গুরুতর ছিল যে রুশদিকে তাৎক্ষণিকভাবে ভেন্টিলেটরে পর্যন্ত নিতে হয়।

তবে অবস্থার উন্নতি হলে রুশদিকে ভেন্টিলেটর থেকে বাইরে আনা হয় এবং সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ ভালো হচ্ছে। আর এতেই ‘বিস্মিত’ বুকারজয়ী এই লেখকের ওপর হামলাকারী যুবক।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলায় অভিযুক্ত খোদ ওই যুবক মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের বিস্ময়ের কথা জানিয়েছেন। অভিযুক্তের দাবি, সালমান রুশদিকে ছুরিকাঘাতের পরও ওই লেখক বেঁচে যাওয়ায় তিনি ‘আশ্চর্য’ হয়েছেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছুরি হামলার শিকার হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত উপন্যাসিক সালমান রুশদি। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার সকালে নিউ ইয়র্কের শাটাকোয়া ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন বুকারজয়ী এই লেখক। যখন তাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখনই এক লোক দৌড়ে স্টেজে উঠে ছুরি নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।

মূলত ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত দ্য স্যাটানিক ভার্সেসের জন্য বহু বছর ধরেই  সালমান রুশদি কট্টর ইসলামপন্থিদের হুমকি পেয়ে আসছিলেন। শুক্রবার নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠান চলাকালেই তার ওপর হামলা হয়। হামলার পর পুলিশ হাদি মাতার নামে ২৪ বছর বয়সী এক যুবককে আটক করে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির বাসিন্দা।

আটক হওয়ার পর থেকে ২৪ বছর বয়সী এই হামলাকারী জেলে বন্দি থাকলেও নিউইয়র্ক পোস্ট বলছে, তারা অভিযুক্ত এই যুবকের একটি ভিডিও ইন্টারভিউ নিয়েছে। সেখানে হাদি মাতার বলেন, ‘যখন আমি শুনলাম সে (সালমান রুশদি) বেঁচে গেছে, আমার মনে হয়- আমি অবাক হয়েছিলাম।’

১৯৮৮ সালে প্রকাশিত রুশদির চতুর্থ উপন্যাস ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ বিশ্বজুড়ে বিতর্কের জন্ম দেয়। এর পরের বছর অর্থাৎ ১৯৮৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি এই লেখকের মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া ঘোষণা করেন। সেসময় রুশদির মাথার দাম ঘোষণা করা হয় ৩০ লাখ ডলার। ইরানের সেই ঘোষণা এখনও বহাল আছে।

তবে সন্দেহভাজন এই আততায়ী রুশদির ওপর হামলা করতে ১৯৮৯ সালের সেই আদেশ বা ফতোয়া দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সাক্ষাৎকারে হাদি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে যা বলতে পারি তা হলো- আমি আয়াতুল্লাহকে সম্মান করি। আমি মনে করি তিনি একজন মহান ব্যক্তি।’

অবশ্য নিউইয়র্ক পোস্টের মতে, হাদির আইনজীবী তাকে এই বিষয়ে আলোচনা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া মাতার বলছেন, তিনি রুশদির উপন্যাসের ‘দুয়েক পৃষ্ঠা পড়েছেন’।

বুকারজয়ী এই লেখক সম্পর্কে নিউ জার্সির ২৪ বছর বয়সী এই বাসিন্দা বলেন, ‘আমি তাকে (সালমান রুশদি) পছন্দ করি না। আমি মনে করি না যে, তিনি খুব ভালো একজন মানুষ। আমি তাকে পছন্দ করি না। আমি তাকে খুব একটা পছন্দই করি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সে (রুশদি) এমন একজন মানুষ যে ইসলামকে আক্রমণ করেছে। সে তাদের বিশ্বাস, বিশ্বাস ব্যবস্থাকে আক্রমণ করেছে।’

মাতার বলেছেন, ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সাথে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। তিনি দাবি করেন, চলতি বছরের শুরুতে একটি টুইটের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে, শাটাকোয়া ইনস্টিটিউশনের সাহিত্য সিরিজে বক্তৃতা করবেন রুশদি।

শুক্রবার হাদি মাতারকে আদালতে হাজির করা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক পোস্ট।

×