ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রতিদিন ৩টি ডিম খেলে কী হয়? জানুন ডাক্তাররা কী বলছেন

প্রকাশিত: ১৯:৫৮, ২০ জুলাই ২০২৫

প্রতিদিন ৩টি ডিম খেলে কী হয়? জানুন ডাক্তাররা কী বলছেন

ডিম হলো অতি সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী প্রোটিনের উৎস, বিশেষ করে অমাসাহারীদের জন্য। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ ও উপকারী ফ্যাট, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালের চিফ ডায়েটিশিয়ান প্রতীক্ষা কদম জানিয়েছেন, ডিমে থাকা নয়টি প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড পেশি গঠনে ও মেরামতে সহায়তা করে।

ভিটামিন বি১২, কোলিন (যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে), এবং চোখের জন্য উপকারী লুটেইনের দারুণ উৎস ডিম। এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরাট রাখে, ক্ষুধার অনুভূতি দমন করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে। তবে প্রতিদিন কত ডিম খাওয়া নিরাপদ, আর কতটা বেশি হয়ে যায় — সেটি জানাটাও জরুরি।

ফিটেলোর ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান উমাং মালহোত্রা বলেন, “একটি বড় ডিমে প্রায় ৬-৭ গ্রাম উচ্চমানের প্রোটিন থাকে, যার অ্যামিনো অ্যাসিড স্কোর ১.০ — যা সর্বোচ্চ, দুগ্ধজাত ও মাংসজাত পণ্যের সমতুল্য।” তিনি আরও বলেন, ডিমের সাদা অংশে (অ্যালবুমিন) থাকে প্রধানত প্রোটিন, যেমন ওভালবুমিন, আর কুসুমে থাকে লেসিথিন, ফ্যাট, ভিটামিন A, D, E, B12 এবং কোষ ও স্নায়ুর কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোলিন।

প্রতিদিন ৩টি ডিম কি যথেষ্ট?

সাধারণ হিসাব অনুযায়ী, ৩টি ডিম মানে দিনে প্রায় ১৮–২১ গ্রাম প্রোটিন। প্রতীক্ষা কদম বলেন, “প্রোটিন আমাদের বিপাকক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দিনে ৩০ গ্রাম প্রোটিনের কম হলে তা পর্যাপ্ত শক্তি ও পুনরুদ্ধারের জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে।” বিশেষ করে ঘুম বা ব্যায়ামের পর শরীর পুনরায় শক্তি ফিরে পেতে হিমশিম খেতে পারে। তাই তিনি সকালে অন্তত ৪০-৫০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণের পরামর্শ দেন।

অর্থাৎ, যদি আপনার প্রোটিনের একমাত্র উৎস হয় ডিম, তবে ৩টি ডিম যথেষ্ট নয়। অন্যান্য খাবার বাদ দিয়ে শুধু ডিমের ওপর নির্ভর করলে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

অতিরিক্ত ডিম খাওয়া কি ক্ষতিকর?

ডায়েটিশিয়ান কদম বলেন, “একটি ডিমে প্রায় ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। প্রতিদিনের সুপারিশকৃত কোলেস্টেরল সীমা ছাড়িয়ে গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে, বিশেষ করে যারা আগে থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত।” তেল বা মাখনে ভাজা ডিম শরীরে আরও ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল (LDL) যোগ করে। এ ছাড়া অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। অনেকের মধ্যে বদহজম বা পেট ফাঁপার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়

দুই বিশেষজ্ঞই পরামর্শ দেন, সকালের খাবার ও দিনের অন্যান্য সময়ে আপনার জন্য উপযুক্ত প্রোটিনের পরিমাণ নির্ধারণে একজন পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

Jahan

×