
ছবি: সংগৃহীত।
ছুটি মানেই ভ্রমণের আনন্দ। কিন্তু অনেকের জন্য এই আনন্দযাত্রা হয়ে ওঠে বিড়ম্বনার কারণ- বিশেষ করে যাঁরা গাড়ি, বাস, নৌকা বা বিমানে উঠলেই বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা বা অসুস্থ বোধ করেন। এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় মোশন সিকনেস বা গতি-জনিত অসুস্থতা। শিশু থেকে শুরু করে বড়দের অনেকেই ভুগে থাকেন এই সমস্যায়। তবে কিছু সহজ ব্যবস্থা মেনে চললে ভ্রমণের সময় এই অস্বস্তিকর সমস্যা সহজেই কাটিয়ে ওঠা যায়।
আমাদের শরীরের ভেস্টিবুলার সিস্টেম (মস্তিষ্কের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা) যখন চোখ, কানের ভিতরের অংশ ও শরীরের অনুভূতির মধ্যে সমন্বয়হীনতা অনুভব করে, তখনই মোশন সিকনেস হয়। মূলত চলমান অবস্থায় শরীর একরকম সংকেত পেলেও চোখ অন্যরকম দৃশ্য দেখে- এই দ্বন্দ্ব থেকেই মাথা ঘোরা, বমি ভাব, অস্বস্তি দেখা দেয়।
মোশন সিকনেসের সাধারণ লক্ষণগুলো হলো- মাথা ঘোরা বা ভার ভার লাগা, বমি বমি ভাব বা বমি হয়ে যাওয়া, ঠান্ডা ঘাম, ক্লান্তি ও অস্বস্তি, ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
সমাধানের উপায়:
১. গাড়িতে বসার সঠিক অবস্থান:
সামনের দিকে তাকিয়ে বসুন। জানালার পাশে বসলে বাইরের দৃশ্য দেখা যায়, যা শরীরের সংকেতের সাথে চোখের দেখা মিলিয়ে দেয় এবং বমি ভাব কমায়।
২. ভারী খাবার এড়িয়ে হালকা খাবার গ্রহণ:
ভ্রমণের আগে অতিরিক্ত তেল-ঝাল বা ভারী খাবার খেলে সমস্যা বাড়ে। হালকা শুকনো খাবার, বিস্কুট, কলা বা টোস্ট গ্রহণ করা নিরাপদ।
৩. একজায়গায় মনোযোগ দিন:
চলন্ত গাড়িতে বই পড়া, মোবাইল বা ট্যাবলেট দেখা এড়িয়ে চলুন। এগুলো চোখের ও মস্তিষ্কের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
৪. আদা ও লেবু ভালো বন্ধু:
আদা বা লেবুর রস বমি প্রতিরোধে কার্যকর। আদা চিবিয়ে খাওয়া বা আদা চায়ের সঙ্গে লেবু পান করা উপকারী হতে পারে।
৫. ওষুধের সাহায্য:
যাদের মোশন সিকনেস খুব বেশি হয়, তারা চিকিৎসকের পরামর্শে সিনারিজিন বা ডাইমেনহাইড্রিনেট জাতীয় ওষুধ ভ্রমণের ৩০ মিনিট আগে নিতে পারেন।
৬. শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ও চোখ বন্ধ রাখা:
গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া ও চোখ বন্ধ রেখে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া মস্তিষ্ককে শান্ত করে।
বিশেষজ্ঞের মতে, মোশন সিকনেস খুব সাধারণ একটি সমস্যা। সচেতন হলে এবং কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে সহজেই এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে যদি কারও সমস্যা অতিমাত্রায় হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মিরাজ খান