ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

ইচ্ছাশক্তি কি সত্যিই ফুরিয়ে যায়?

প্রকাশিত: ২৩:৫৮, ১৯ জুলাই ২০২৫

ইচ্ছাশক্তি কি সত্যিই ফুরিয়ে যায়?

সংগৃহীত

আমরা প্রায়শই ভাবি—নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার মানে আমাদের ইচ্ছাশক্তি (willpower) দুর্বল। “ডায়েট রাখতে পারিনি”, “আরও পড়তে বসবো বলে উঠলাম না”—এই কথাগুলোর পেছনে দায়ী করা হয় সেই রহস্যময় মানসিক শক্তিকে।

কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে (১৯ জুলাই, ২০২৫) মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন—ইচ্ছাশক্তি আসলে ঠিক যেমনটি আমরা ভাবি, বিষয়টি ততটা সরল নয়।

বহুদিন ধরে চালু থাকা ‘ego depletion’ তত্ত্ব অনুযায়ী, ইচ্ছাশক্তি একটি সীমিত রিসোর্স। যেমন, সকালে একবার চকলেট না খাওয়ার লড়াই করলে, রাতে সেই শক্তি কমে যায়—এমনটাই বিশ্বাস।

কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এ ধারণাটি পুরোপুরি সঠিক নয়। অনেক ক্ষেত্রেই এই "মানসিক ক্লান্তি" আদতে ব্যক্তির নিজের বিশ্বাস বা মনোভাবের উপর নির্ভর করে। গবেষকরা বলছেন, ইচ্ছাশক্তি ফুরিয়ে যায় এই বিশ্বাসটি যদি আপনার থাকে, তবে সত্যিই তা কমে যেতে পারে।

নতুন গবেষণা অনুসারে, ইচ্ছাশক্তি অনেকটাই নির্ভর করে আমাদের পরিবেশ, রুটিন এবং মানসিক প্রস্তুতির উপর।
যেমন:

  • ঘরে বিস্কুট না রাখলে খাওয়ার লোভ কমবে।
  • নিয়ম করে ঘুমানো বা কাজের রুটিন তৈরি করা মানসিক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
  • ধ্যান, ব্যায়াম ও সঠিক ডায়েট ইচ্ছাশক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, দৃঢ় সংকল্প (I will do it) বলার বদলে নিজেকে প্রশ্ন করুন—“আমি কি এটা করতে পারি?”এই ‘Willpower paradox’-এর ধারণা অনুযায়ী, নিজের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর চালালে মন আরও নমনীয় হয়, যা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাড়ায়।সেই সঙ্গে স্ট্রেসকেও যদি নেতিবাচক কিছু না ভেবে শক্তির উৎস হিসেবে দেখা যায়, তাহলে ইচ্ছাশক্তি অনেক বেশি কার্যকর হয়।

ইচ্ছাশক্তি নিয়ে যে জনপ্রিয় ধারণা—“এটা সীমিত, বারবার ব্যবহার করলে কমে যায়”—তা আজকের মনোবিজ্ঞানে অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মুখে। বর্তমান গবেষণা বলছে, ইচ্ছাশক্তি জন্মগত কোনো গুণ নয়; বরং এটা অভ্যাস, পরিবেশ ও মনোভাবের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে।

অর্থাৎ, আপনি ইচ্ছাশক্তিতে দুর্বল নন—আপনার পদ্ধতিটাই বদলানোর দরকার।সঠিক অনুশীলন, মনোসংযোগ আর উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে যে কেউ ইচ্ছাশক্তিকে শক্তিশালী করে তুলতে পারেন।

হ্যাপী

×