
প্রতিদিনের জীবনে অসুস্থতা বা দীর্ঘমেয়াদি রোগ মোকাবেলায় ওষুধ একটি সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক। তবে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন মানেই যে বিশাল অঙ্কের খরচ, তা এখন রোগীর কাছে বাস্তবতা। যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৯ সালের এক জরিপে দেখা যায়, প্রতি চারজনের একজন আমেরিকান প্রেসক্রিপশন ওষুধ কিনতে হিমশিম খান।এই বাস্তবতায় অনেকে পড়েন কঠিন এক সিদ্ধান্তের মুখে ওষুধ কিনবেন, না কি টাকা বাঁচিয়ে ঝুঁকি নেবেন?
তবে কিছু সহজ ও বাস্তবমুখী কৌশল অনুসরণ করলে আপনি প্রয়োজনীয় ওষুধের খরচ অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারেন। চলুন জেনে নিই এমন ৯টি উপায়-
১. জেনেরিক ওষুধের খোঁজ নিন
ব্র্যান্ডেড ওষুধের বিকল্প হিসেবে অনেক সময় একই উপাদানে তৈরি জেনেরিক ওষুধ পাওয়া যায় অনেক কম দামে। কার্যকারিতা এক হলেও দাম থাকে অনেক কম। তাই চিকিৎসকের কাছে জেনেরিক ওষুধের প্রেসক্রিপশন চাওয়া কিংবা ফার্মাসিস্টকে অনুরোধ করা যেতে পারে একই ওষুধ শ্রেণির অন্য কমদামী বিকল্প খুঁজে দিতে।
২. বেশি দিনের ওষুধ একবারে সংগ্রহ করুন
আপনার যদি অন্তত তিন মাস একটি ওষুধ নিয়মিত খেতে হয়, তাহলে ৩০ দিনের বদলে ৯০ দিনের প্রেসক্রিপশন চাইতে পারেন। এতে প্রতি ইউনিটের দাম কম পড়ে, আবার বারবার ফার্মাসিতে যেতে হয় না।
৩. বিভিন্ন ফার্মাসির দামের তুলনা করুন
সব ফার্মাসি একই দামে ওষুধ বিক্রি করে না। তাই প্রেসক্রিপশন পূরণের আগে অনলাইনে বা স্থানীয় ফার্মাসিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে দাম জেনে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
৪. ডিসকাউন্ট বা সেভিংস প্রোগ্রাম ব্যবহার করুন
অনলাইনে সহজেই কিছু ওয়েবসাইটে ওষুধের নাম ও অবস্থান লিখে আশেপাশের ফার্মাসিতে দাম তুলনা করতে পারেন। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে প্রেস্ক্রিপশন ডিসকাউন্ট কার্ডও দিয়ে থাকে। এটি ইনস্যুরেন্স নয়, বরং একটি বিশেষ ছাড় প্রোগ্রাম।
৫. আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করুন
অনেক স্টোর নিজস্ব বিনামূল্যের ওষুধ প্রোগ্রামও চালায়, যেখানে অ্যান্টিবায়োটিক, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। স্থানীয় ফার্মাসিতে এ বিষয়ে খোঁজ নিতে পারেন।
৬. মেইল-অর্ডার ফার্মাসি ব্যবহার করুন
অনেক সময় অনলাইনে কেনাকাটার খরচ তুলনামূলক কম পড়ে। মেইল-অর্ডার ফার্মাসিগুলোর ওভারহেড খরচ কম হওয়ায় তারা তুলনামূলক সস্তায় ওষুধ দিতে পারে। আপনার স্বাস্থ্যবীমা প্রতিষ্ঠান এমন কোনো ফার্মাসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ কি না, তা জেনে চিকিৎসককে সেই ফার্মাসিতে প্রেসক্রিপশন পাঠাতে বলুন।
৭. চিকিৎসকের কাছে স্যাম্পল চান
যদি চিকিৎসক দামি কোনো ওষুধ পরামর্শ দেন, তাহলে একটি ফ্রি স্যাম্পল চেয়ে নিতে পারেন। এতে করে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না বুঝে নেওয়ার সুযোগ থাকে।
৮. ইনস্যুরেন্স নয়, কখনও কখনও ক্যাশেই সস্তা
অনেক সময় ইনস্যুরেন্স কভার থাকলেও সরাসরি ক্যাশে ওষুধ কেনা সস্তা হতে পারে। তাই ইনস্যুরেন্স ব্যবহারের আগে ওষুধের ক্যাশ প্রাইস জেনে নেওয়া ভালো।
প্রেসক্রিপশন ওষুধের খরচ রোগীকে প্রায়শই আর্থিক চাপে ফেলে। কিন্তু কিছু সচেতন সিদ্ধান্ত ও কৌশল আপনাকে এই খরচ কমাতে সাহায্য করতে পারে। ফলে আপনার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেমে থাকবে না, আপনি দ্রুত সুস্থতাও ফিরে পাবেন।
সূত্র:https://tinyurl.com/bddpp42b
আফরোজা